স্বাস্থ্য ডেস্ক:
এই গরমে আমাদের দেহে নানা সমস্যার সাথে যে বিষয়টি সব চেয়ে বেশি হয়, তা হচ্ছে পানিশূন্যতার ঝুঁকি বেশি। এমন না যে আপনি গরমের সময় পানি পান করেন না। কিন্তু, যেটুকু পানি পান করছেন সেটুকু পানি আপনার দেহের ডিহাইড্রেশন দূর করে পারছে কি না সেটা আসল কথা। সমস্যা হচ্ছে, এই পানি শূন্যতার কারণে আপনার দেহে দেখা দিতে পারে অনেক ক্ষতিকর সমস্যা। তাই আসুন জেনে নেই পানি শূন্যতার লক্ষণ ও প্রতিকারসমূহ;
প্রাথমিক পর্যায়ে যদি ডিহাইড্রেশন বোঝা যায়, তাহলে সহজেই তা ঘরোয়া চিকিৎসাতেই মোকাবেলা করা যায়। আর এক্ষেত্রে আপনাকে যা করতে হবে তা হচ্ছে, তরল পানীয় পান করতে হবে। তাই ডিহাইড্রেশনের লক্ষণগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা দরকার।
১. যখন আপনি তৃষ্ণার্ত হন, তখন মুখের ভেতর শুষ্ক হয়ে থাকে। আপনি যদি খুবই তৃষ্ণার্ত ও মুখের ভেতরটায় অত্যাধিক শুষ্ক অনুভব করেন, তাহলে এটা একটা লক্ষণ।
কিন্তু, ডিহাইড্রেশনের একমাত্র লক্ষণ হিসেবে তৃষ্ণা বা শুষ্ক মুখের ওপর নির্ভর করাটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। কিছু মানুষ বিশেষ করে বয়স্করা ডিহাইড্রেড হওয়া সত্ত্বেও শুষ্কতা অনুভব করতে পারে না।
২. প্রস্রাবে রঙের পরিবর্তন: শরীরে যখন যথেষ্ট পরিমাণ পানি বিদ্যমান থাকে, তখন প্রস্রাব লেবু-পানির রঙের হয়ে থাকে। কিন্তু, যখন পানিশূন্যতা অর্থাৎ ডিহাইড্রেশন ঘটে, তখন প্রস্রাব গাঢ় রঙের হয়ে যায়। সুতরাং আপনার প্রস্রাব যদি আপেলের রসের রঙের হয়, তাহলে তা ভালো লক্ষণ নয়।
৩. প্রস্রাব কম হওয়া: আপনি যদি বাথরুমে যাওয়া ছাড়াই কয়েক ঘণ্টা পার করে দেন, তাহলে এটা একটা লক্ষণ। আপনার শরীর যতটা সম্ভব পানি ধরে রাখার চেষ্টা করছে। এর আরেক অর্থ হলো- আপনি পর্যাপ্ত পানি পান করছেন না।
৪. মাথা ঘোরা অথবা দুর্বল অনুভব করা: আপনার প্রস্রাব যদি গাঢ় রঙের হয়ে থাকে তাহলে আপনি ডিহাইড্রেশনের পথে রয়েছেন। এর পাশাপাশি যদি মাথা ঘোরা কিংবা শারীরিক অস্থিরতা বা দুর্বলতা অনুভব করেন, তাহলে এটা নিশ্চিত লক্ষণ যে, আপনি ড্রিহাইড্রেশনে রয়েছেন।
৫. মস্তিষ্কে বিভ্রান্তি এবং ১২ ঘণ্টার মধ্যে প্রস্রাব না হওয়া: এসব খুবই গুরুতর ডিহাইড্রেশনের লক্ষণ। এক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রয়োজন এবং শরীরে স্যালাইন নেয়া জরুরি। যাদের ডিহাইড্রেশনে ঝুঁকি বেশি অসুস্থতার কারণে যারা শরীরে ২৪ ঘণ্টার বেশি তরল ধরে রাখতে পারেন না, তাদের ক্ষেত্রে ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি বেশি।
যদি আপনি বাইরে কাজ করেন বা উচ্চ তাপের সময় বাইরে থাকেন, তাহলে এটি একটি বিশেষ ঝুঁকির কারণ যা আপনার মনে রাখতে হবে। কারণ, আপনার ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি বেশি।
প্রতিকার:
> ডিহাইড্রেশনের সামান্য লক্ষণ দেখা দিলে কিছু পান করুন
> ডিহাইড্রেশন থেকে বাঁচতে আদর্শ তরল হচ্ছে পানি। কিন্তু, জুস কিংবা স্পোর্টস ড্রিংকের মতো বিকল্প কিছু পান করতে ভয় পাবেন না, যদি তা হাতে থাকে।
> আপনি যখন ডিহাইড্রেশন অনুভব করছেন। তখন শরীরের মধ্যে পানি যাওয়াটাই প্রথম গুরুত্বপূর্ণ এবং আপনার যা কিছু আছে সেটাই ব্যবহার করা উচিত।
> শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দিলে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। দিনে অন্তত ১০ থেকে ১২ গ্লাস পানি পান করুন।
> ঘাম বাড়িয়ে দেয় এমন পোশাক পরবেন না। হালকা রঙের ঢিলেঢালা পোশাক পরুন।
> ব্যায়াম করার আগে পানি পান করুন। এছাড়া অফিসে বা বাড়িতে কাজ করার ফাঁকে ফাঁকে পানি পান করুন।
> পানি শূন্যতার লক্ষণ টের পেলে সতর্ক হোন। পানি পান করা শুরু করুন।
> বেশি গরম লাগলে শরীরকে ঠান্ডা রাখার জন্য ভেজা তোয়ালে দিয়ে শরীর মুছে নিন।
রসালো ফল বা পানি আছে এমন ফল খান। যেমন: শশা, ডাব, টমেটো ইত্যাদি।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ