নিজস্ব প্রতিবেদক:
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ রবিবার মধ্যরাত পর্যন্ত থেমে থেমে চলে। এতে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় টিএসসি মোড় ও এর আশপাশ এলাকা।
সোমবার ভোর নাগাদ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ফিরতে দেখা যায়। তবে তার আগে সন্ধ্যায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় শাহবাগ। এরপর সোমবার সকাল থেকে শান্ত ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, অবশ্য পরিবেশ ছিল থমথমে।
তবে ঘণ্টাকয়েক শান্ত থাকার পর ফের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। আন্দোলনকারীরা সোমবার দুপুরের দিকে ফের রাস্তায় নামে। তারা তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে।
এদিকে আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগের তিন নেতা।
সোমবার এসব পদত্যাগের ঘোষণা দেন। পাশাপাশি চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং একাত্মতা ঘোষণা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে নিজেদের অবস্থানের কথাও জানান দিচ্ছেন তারা।
এর আগে সোমবার ভোর ৬টার দিকে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্রলীগ। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। মিছিলে থাকা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে লাঠি, রডসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দেখা গেছে।
ভোর ৬টার দিকে শাহবাগ থেকে শুরু হয়ে ছাত্রলীগের মিছিলটি শহীদুল্লাহ হলের সামনে পৌঁছালে সেখানে অবস্থানরত আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়া নেতারা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস অনুষদের ট্যুরিজম বিভাগ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল্লাহ সাইফ, শহীদ সার্জেন্ট জহরুল হক শাখা ছাত্রলীগের উপ-অ্যাপায়ন বিষয়ক সম্পাদক অছিবুর রহমান, ফলিত পরিসংখ্যান বিভাগ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শরীফ হাসান সুজন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ট্যুরিজম এন্ড হস্পিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সাধারণ সম্পাদক সাইফ পদত্যাগের কথা জানিয়ে তার ফেসবুকে লিখেছেন- ‘ছাত্রলীগ জাতির পিতার নিজ হাতে গড়া সংগঠন। ছাত্রলীগ ডাকসুর ভূমিকা পালন করে। ছাত্রলীগ ছাত্রদের অধিকারে কাজ করে। ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের বন্ধু। যথেষ্ট। ছাত্রলীগের ভূমিকা কি দেখা গেলো। এই ছাত্রলীগ কোন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ করে জানি না। আমার বঙ্গবন্ধু আলাদা। তাই সজ্ঞ্যানে আমি ট্যুরিজম এন্ড হস্পিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করছি। আর না, অনেক হয়েছে।’
আন্দোলনে সক্রিয় অংশ নেয়া ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার এক সহ-সভাপতি বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন একটি যৌক্তিক আন্দোলন। এ আন্দোলনে সকল সাধারণ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ রয়েছে। ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে গিয়ে আন্দোলনের বিরোধীতা করায় আমি সজ্ঞানে ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করছি। শিগগিরই পদত্যাগপত্র জমা দেব।
শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের উপ-আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক মো. আছিবুর রহমান নিজের হাতে লেখা পদত্যাগপত্র ফেসবুকে পোস্ট করেছেন।
দৈনিক দেশজনতা /এন আর