নিজস্ব প্রতিবেদক:
চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শাহবাগে অবস্থান নেয়া আন্দোলনকারীদের লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে সেখান থেকে তাদের সরিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
রবিবার রাত পৌনে আটটার দিকে পুলিশ আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ‘অ্যাকশনে’ যায় বলে জানান আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।
এর আগে পুলিশ আন্দোলনকারীদের সেখান থেকে সরে যেতে তাদের সঙ্গে আলোচনা করে। তবে কোটা সংস্কারে সুনির্দিষ্ট আশ্বাস না পেলে শাহবাগের অবস্থান থেকে সরবে না বলে জানিয়েছিল আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
প্রায় পাঁচ ঘণ্টার অবস্থার নীরবতা শেষে পুলিশ অ্যাকশনে যায়। লাটিপেটা ও কাঁদানে গ্যাসের মুখে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। তাদের বেশির ভাগ সরে যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির দিকে। অনেকে কাঁটাবন ও শেরাটনের দিকে এবং অনেকে পাশের পার্কে ঢুকে পড়ে।
সরে যাওয়ার সময় আন্দোলনকারীদের একটি অংশ টিএসসির কাছে কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে বলে খবর পাওয়া গেছে।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে রবিবার দুপুরে কয়েক হাজার সাধারণ শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদযাত্রা শেষে শাহবাগে এসে অবস্থান নেন। এতে করে শাহবাগ হয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।
বেশ কিছুদিন ধরে চলমান এ আন্দোলনের মূল সমন্বয়ক হাসান আল মামুন শাহবাগ থেকে লিফোনে বলেন, ‘আমাদের দাবি যৌক্তিক এবং পরিষ্কার। সংসদ থেকে কোটা সংস্কারে সুনির্দিষ্ট আশ্বাস চাই। অন্যথা আমাদের এ অবস্থান কর্মসূচি চলতে থাকবে।’
দেশের বিভিন্ন জেলায়ও ইতোমধ্যে সড়ক-মহাসড়ক অবরুদ্ধ করা হয়েছে দাবি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ শিক্ষার্থী বলেন, ‘কোটা সংস্কারের দাবিতে দেশের ৯৭ ভাগ মানুষের সমর্থন রয়েছে। আমরা আশা করব বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে প্রধানমন্ত্রী এ যৌক্তিক দাবি বিবেচনায় নেবেন।’
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা শাহবাগে অবস্থান নিলে শাহবাগ পুলিশ বক্সের সামনে বিপুলসংখ্যক পুলিশ লাঠিসোটা, টিয়ারসেল নিয়ে অবস্থান নেয়। এ ছাড়া শাহবাগ থানার সামনে প্রস্তুত রাখা হয় সাঁজোয়া যান।
শাহবাগ থানা থেকে সাঁজোয়া যান বের করা হলে সেটির সামনে শুয়ে পড়েন আন্দোলনকারীরা। এ সময় সাঁজোয়া যানের সামনে বুক পেতে দেন তারা। এরপর পুলিশ সাঁজোয়া যান পেছনে নিয়ে যায়।
বেলা ৩টা ৫ মিনিট থেকে শাহবাগ মোড় অবরুদ্ধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বিলুপ্ত না করে যৌক্তিক সংস্কারের দাবি করছে তারা। অবরোধে শিক্ষার্থীরা কোটা পদ্ধতি সংস্কারের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগানও দিচ্ছে।
আন্দোলনকারীদের ৫ দফা দাবি- সরকারি নিয়োগে কোটার পরিমাণ ৫৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা, কোটার যোগ্য প্রার্থী না পেলে শূন্যপদে মেধায় নিয়োগ, কোটায় কোনো ধরনের বিশেষ নিয়োগ পরীক্ষা না নেওয়া, সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে অভিন্ন বয়সসীমা, নিয়োগপরীক্ষায় একাধিকবার কোটার সুবিধা ব্যবহার না করা।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ