নিজস্ব প্রতিবেদক:
নারায়ণগঞ্জে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ভুয়া প্রশ্নপত্র ফাঁসচক্র এবং পরীক্ষা কেন্দ্রের ভেতর থেকে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে উত্তরপত্র ও প্রশ্নপত্র আদান-প্রদানের ঘটনায় পাঁচ দিনের মধ্যে এ চক্রের তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১১)।
রবিবার দুপুরে র্যাব-১১ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক সিনিয়র সহকারী এএসপি মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
র্যাব-১১ জানায়, ভুয়া প্রশ্নপত্র ফাঁস অভিযানে গত ৩ এপ্রিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাহায্যে ভুয়া প্রশ্ন সংগ্রহ ও প্রচারের সাথে জড়িত থাকায় নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র নারায়ণগঞ্জ কলেজের সামনে থেকে দুইজন এবং শনিবার মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান থানাধীন রামকৃষ্ণপুর এলাকা থেকে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এ ধরনের ভুয়া প্রশ্ন ফাঁস চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারে র্যাব-১১ এর অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানানো হয়।
অভিযানে শনিবার দুপুর দুইটার দিকে র্যাব-১১ এর একটি দল নারায়ণগঞ্জের বন্দরের হাজী ইব্রাহিম আলমচাঁন মডেল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে মো. ওয়াসিম আকরামকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওয়াসিম আকরাম নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানার নবীগঞ্জ এলাকার জালাল উদ্দীনের ছেলে।
ওয়াসিম আকরাম বন্দরের কদম রসুল কলেজ থেকে একজন অনিয়মিত ছাত্র হিসেবে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করছিল। তার কাছ থেকে একটি স্মার্টফোন উদ্ধার করা হয়। পরীক্ষার্থী ওই স্মার্টফোনটি অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য আইন বহির্ভূতভাবে গোপনে পরীক্ষার হলে নিয়ে যায়।
ওয়াসিম আকরামের কাছ থেকে উদ্ধার মোবাইলের ম্যাসেঞ্জারে কেন্দ্রের বাইরে অবস্থানকারী ভুয়া প্রশ্ন ফাঁসকারী সক্রিয় সদস্যদের সাথে সঠিক প্রশ্নপত্র ও প্রশ্নের উত্তরপত্র আদান-প্রদানের ছবি ও অন্যান্য ভুয়া প্রশ্ন ফাঁস সংক্রান্ত আলামত পাওয়া যায়।
গ্রেপ্তার ওয়াসিম আকরাম প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং ইমো ব্যবহার করে অসাধু প্রতারক চক্র হতে ভুয়া প্রশ্ন সংগ্রহ করেছে। প্রতারক চক্র পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর মূল প্রশ্নের উত্তরপত্র ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে পরীক্ষার হলে সরবরাহ করে। এই অভিযোগে ওই পরীক্ষার্থীকে কর্তৃপক্ষ বহিষ্কার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পরীক্ষার্থীর স্বীকারোক্তি মোতাবেক অভিযান পরিচালনা করে প্রতারক চক্র ব্যবহৃত একটি স্মার্টফোন উদ্ধার করা হয় যেখানে ভুয়া প্রশ্নফাঁস সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ আলামত পাওয়া যায়। এই চক্রের সাথে জড়িত অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
এর আগে গত ৩ এপ্রিল রাব-১১ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক সিনিয়র এএসপি শেখ বিল্লাল হোসেন জানান, ওইদিন সকালে র্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদে নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর থানার এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র নারায়ণগঞ্জ কলেজের সামনে থেকে সঞ্জয় চন্দ্র মল্লিককে গ্রেপ্তার করা হয়। সঞ্জয় চন্দ্র মল্লিক নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জের মাটিয়াহারি এলাকার সঞ্জীবন চন্দ্র মল্লিকের ছেলে। পরে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র মরগান স্কুলের সামনে থেকে হৃদয় নামে আরেকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়া। হৃদয় মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং থানার কলমা এলাকার দুলাল চন্দ্র দাসের ছেলে।
র্যাব-১১ আরও জানায়, র্যাবের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধের উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেপ্তারসহ আইন শৃংখলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে র্যাব। বিশেষ করে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসকারী চক্র ও ভুয়া প্রশ্ন ছড়িয়ে প্রতারণার চেষ্টাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য র্যাব ফোর্সেস নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ