ভোলা প্রতিনিধি:
ভোলার দৌলতখান উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইয়াছির লিটনের বিরুদ্ধে বিএনপি নেত্রী তাছলিমা বেগমকে ঘরে আটকে রেখে রাতভর শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার(৩ এপ্রিল)দিবাগত রাতে উপজেলাল উত্তর জয়নগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইয়াছির লিটনের নির্দেশে তার বোন জামাই, ভাগিনা ও ভাতিজা মিলে স্থানীয় কাজী বাড়িতে আটকে রেখে ৪ নং ওয়ার্ডের বিএনপি নেত্রীকে সারারাত শারীরিক নির্যাতন করেছে। এমন অভিযোগ করেন বিএনপি নেত্রী।পরে প্রায় ৫০টি সাদা স্টাম্পে স্বাক্ষরের পরে ছেড়ে দিলে নেত্রী ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
তিনি এখন সদর হাসাপাতলে মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডের ৬৫ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন আছে। তিনি উপজেলা মহিলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি নেত্রী তাছলিমা বলেন, গত ইউপি নির্বাচনে ৪,৫,৬ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে আমি নির্বাচন করেছিলাম। প্রতিপক্ষ গ্রুপ জোর করে আমাকে হারিয়ে দিয়েছে। সেই থেকেই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইয়াছির লিটন আমার বিরোধিতা করে আসছে।
তিনি বলেন, সর্বশেষ গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আদালত থেকে বাড়ি ফিরছিলাম আমি। বাড়ির কাছে যাওয়ার পরে এক অপরিচিত মহিলা আমাকে নির্জনে ডেকে নেয়। এ সময় ৪-৫ জন পুরুষ এসে আমাকে বেধড়ক পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয়। এ সময় রক্তাক্ত অবস্থায় দৌড়ে পালাতে গেলে সন্ত্রাসীরা আবার আমাকে ধরে কাজিবাড়ি নিয়ে যায়। পরে হাত-পা বেঁধে সারারাত নির্যাতন করে। লাথি, ঘুষি, চড়-থাপ্পড় মারে। পরে তাদের কাছে প্রাণভিক্ষা চাইলে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে আমাকে ছেড়ে দেয়। ওই অবস্থায় সকাল সাড়ে ৭টায় ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হই।
তাছলিমা বেগম আরও বলেন, আমার একটাই দোষ, আমি বিএনপি করি। আমার স্বামী নেই। ছয়টি সন্তান। সুযোগ পেলেই চেয়ারম্যানের লোকজন আমাকে বিপদে ফেলছে। গত মঙ্গলবার রাতে চেয়ারম্যান ইয়াছির লিটনের লোকজন তাকে হত্যার জন্য এ নির্যাতন চালায়। পরে কাউকে কিছু বলার শর্র্তে মুচলেকা দিয়ে মুক্তি পেয়েছি।
ভোলা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. নিরুপম বলেন, তাছলিমাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। শরীরের কয়েকটি স্থানে সেলাই লেগেছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত উত্তর জয়নগরের চেয়ারম্যান ইয়াছির লিটন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আপনারা তদন্ত করে দেখেন। এ ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমি জানিও না কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। আমি চেয়ারম্যান হওয়ার পরে তাছলিমা আমার বিরুদ্ধে সাতটি মামলা করেছে। সে কাজিবাড়ি থেকে স্বর্ণালংকার ও মোবাইল নিয়ে পালানোর সময় এলাকার লোকজন তাকে ধরে মারধর করে। আমি ও আমার ইউনিয়নের কোনো গ্রামপুলিশ ঘটনাস্থলে যায়নি। দৌলতখান থানার ওসি এনায়েত হোসেন বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। আমাদের কাছে অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দৈনিক দেশজনতা/ টি এইচ