দৈনিক দেশজনতা অনলাইন ডেস্ক:
জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে ১১ বিচ্ছিন্নতাবাদী নিহত হওয়ার পর ভারতবিরোধী বিক্ষোভে ফুঁসছে রাজ্যটি। কাশ্মীরের দুটি জেলায় অভিযানে বন্দুকযুদ্ধে এসব বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন বলে জানান কাশ্মীর পুলিশের প্রধান সায়েম প্রকাশ। এ ছাড়া এ ঘটনায় আরও দুই বেসামরিক নাগরিক ও দুই জওয়ান নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। এসব বিচ্ছিন্নতাবাদী ও বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পরপরই রাস্তায় নেমে আসেন হাজার হাজার নাগরিক। ভারতবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন তারা। খবর আলজাজিরা ও ইকোনমিক টাইমসের।
গতকাল রোববার ভোররাতে কাশ্মীরের শোপিয়ান ও অনন্তনাগ জেলায় অভিযান চালায় পুলিশ। শোপিয়ানে বিদ্রোহীদের দুটি দল লুকিয়ে আছে- এ খবর পাওয়ার পরই রাতে অভিযান চালায় সেনাবাহিনী। সেনার গুলিতে শোপিয়ানের দ্রাগ্গারে মৃত্যু হয় সাতজনের। শোপিয়ানেরই কাচদোরায় সংঘর্ষে নিহত হন তিনজন। এখানেই বিদ্রোহীদের ছোড়া গুলিতে প্রাণ হারান দুই জওয়ান। পাশাপাশি, শনিবার ভোররাত থেকে দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগের দিয়ালগাম এলাকায় সেনা-বিদ্রোহী গুলির লড়াই শুরু হয়। সেখানে নিহত হন আরও এক বিদ্রোহী ও দুই বেসামরিক। এক বিদ্রোহীকে আটকও করেছেন সেনাসদস্যরা।
পুলিশ জানিয়েছে, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার পর পরিবারের সদস্যরা তাদের আত্মসমর্পণের অনুরোধ করে। একজন আত্মসমর্পণ করলেও অপরজন প্রত্যাখ্যান করে। পরে গুলিতে সে নিহত হয়। সংঘর্ষের পর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বানিহাল এবং শ্রীনগরের মধ্যে রেল পরিষেবা বন্ধ করে দেয়া হয়। দক্ষিণ কাশ্মীরের কিছু এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে।
বিক্ষোভ ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। বিদ্রোহী ও বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পর প্রতিবাদস্বরূপ বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন জম্মু-কাশ্মীরের সাধারণ নাগরিক। তারা ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সাহায্য করার ঘোষণা দেন। শোপিয়ান জেলার বিক্ষোভ থেকে মানজুর আহমেদ বলেন, ভারতীয় সেনারা বেসামরিকদের ওপর তাজা গুলি ছুড়েছে। বহু যুবক তাদের গুলিতে আহত হয়েছেন। অনেকের চোখে ঠুকে গেছে ছররা গুলি।
তিনি আরও বলেন, ‘বহু বেসামরিক নাগরিকের ঘরবাড়ি তছনছ হয়ে যাওয়ায় তাদের রাস্তায় আশ্রয় নিতে হয়েছে। এই রক্তপাত আর কতদিন চলবে! আমরা ক্লান্ত।’ দুই জেলায় সংঘর্ষ চলাকালীনই বাহিনীকে লক্ষ্য করে পাথর, বোতল ছুড়তে থাকে জনতা। বাহিনী পালটা গুলি, ছররা গুলি ছোড়ে ও টিয়ার গ্যাসের শেল ফাটায়। হাসপাতাল সূত্রগুলো বলছে, এতে আহত হয়েছেন অন্তত অর্ধশতাধিক।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি