২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৯:১০

দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না থাকায় প্রশ্নফাঁস বন্ধ হয় না : টিআইবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা না থাকায় প্রশ্নফাঁস রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সফারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। রবিবার বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসিতে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ মন্তব্য করেন টিআইবির রিসার্চ পরিচালক রফিকুল হাসান।

আগামীকাল সোমবার সারাদেশে অনুষ্ঠিতব্য উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষাকে সামনে রেখে সচেতনতার অংশ হিসেবে ট্রান্সফারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এবং সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) এর আয়োজন করে।

মানবন্ধনে রফিকুল হাসান বলেন. আইনগতভাবে অনেক শাস্তিমূলক ব্যবস্থার উল্লেখ থাকলেও যে মাত্রায় প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, সে মাত্রায় শাস্তিুমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দৃষ্টান্ত নেই। অধিকাংশ সময়ে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন বিতরণের অভিযোগে শিক্ষক বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সহকারী পর্যায়ে শাস্তির উদ্যোগ নিতে দেখা যায়। অথচ বাস্তবে ফাঁস প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্টজন জবাবদিহিতার উর্ধ্বে থেকে যায়। ফলে প্রশ্নফাঁস রোধে তা কার্যকর কোন ভূমিকা রাখতে পারছে না।

তিনি বলেন, প্রশ্ন প্রণয়ণের দীর্ঘ প্রক্রিয়া, সময়সাপেক্ষতা এবং এর সাথে অনেক ব্যক্তির সম্পৃক্ততার কারণে প্রশ্নফাঁসের ঝুঁকি বাড়ছে। পাশাপাশি পরীক্ষা অনুষ্ঠানের প্রাক্কালে অভিভবকরা তাদের সন্তানদের পড়াশোনার বিষয়ে সঠিক দিক-নির্দেশনা দেয়ার পরিবর্তে ফাঁসকৃত প্রশ্ন সংগ্রহের এক অসুস্থ্য প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হচ্ছেন। যা আমাদের সামাজিক অবক্ষয়েরই নামান্তর। এ সময় মানববন্ধন থেকে প্রশ্নফাঁস রোধে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে ৯টি সুপারিশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)।

সুপারিশগুলো হলো-
পাবলিক পরীক্ষাসমূহ (অপরাধ) (সংশোধন) আইন, ১৯৯২’ এর ৪ ধারা পুনরায় সংশোধন করে শাস্তির মাত্রা পূর্বের ন্যায় সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ডের বিধান প্রণয়ন এবং নির্দিষ্ট ধারা অনুযায়ী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা।

কোচিং সেন্টার নিষিদ্ধকরণে সরকারের ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা-২০১২’ এর অস্পষ্টতা দূর করা এবং কোচিং বাণিজ্যে বন্ধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংশ্লিষ্টদের প্রণোদনাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করা।

প্রশ্নফাঁস রোধ ও সৃজনশীল পদ্ধতির উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে গাইড বইয়ের আদলে প্রকাশিত সহায়ক গ্রন্থাবলী বন্ধে প্রচলিত আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করা।

তথ্য-প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে তদারকি বাড়ানো ও প্রচলিত আইনের অধীনে শাস্তি নিশ্চিত করা।

ধাপ কমিয়ে প্রশ্ন প্রণয়ন, ছাপানো ও বিতরণের কাজটি পরীক্ষামূলকভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পন্ন করা এবং পরবর্তীতে সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ।

প্রশ্নফাঁস নিয়ে গঠিত যেকোনো তদন্ত প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশ এবং সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।

শিক্ষা ও পরীক্ষা পদ্ধতি এবং ব্যবস্থাপনাগত যেকোনো পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকলকে পর্যাপ্ত সময় দেয়া এবং যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদান করা।

প্রশ্নফাঁস রোধে বহুনির্বাচনী প্রশ্নব্যবস্থা ক্রমান্বয়ে তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা ও পাবলিক পরীক্ষায় প্রতিটি বিষয়ে প্রশ্নপত্রের একাধিক সেট রাখা।

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি

প্রকাশ :এপ্রিল ১, ২০১৮ ২:২১ অপরাহ্ণ