নিজস্ব প্রতিবেদক :
উৎপাদন খরচের তুলনায় দাম অধিক পাওয়াতে জেলায় পান চাষে ঝুঁকছেন শিক্ষিত বেকার যুবকেরা। চাকুরি নামে সোনার হরিণের পিছে না ছুটে তাদের অনেকই পান চাষ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন।
চলতি বছর জেলায় ৫৭০ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়েছে। অনাবাদি জমিতে পানের চাষ হওয়াতে উৎপাদন খরচ অনেকটা কম। জেলার উৎপাদিত পানের ৮০ শতাংশই তালা উপজেলার।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলায় পানের চাষ হয়েছে ৫৭০ হেক্টর জমিতে। সদরে আবাদ হয়েছে ১৫ হেক্টর জমিতে, কলারোয়ায় ৩০ হেক্টর, তালায় ৪২০ হেক্টর, দেবহাটায় ৫ হেক্টর, কালিগঞ্জে ৩০ হেক্টর এবং আশাশুনিতে আবাদ হয়েছে ৩৫ হেক্টর জমিতে।
পাটকেলঘাটার খলিষখালি ইউনিয়নের মঙ্গলানন্দকাটী গ্রামের আবু তালেবের ছেলে আবু জাহিদ জানান, মাদ্রাসা থেকে ফাজিল পাস করে এক বন্ধুর পরামর্শে কৃষিতে ডিপ্লোমা কোর্স করার সিদ্ধান্ত নেন। ডিপ্লোমা শেষ করে অল্প পুঁজি নিয়ে পান চাষ শুরু করেন।
তিনি জানান, ২০০৮ সালে মাত্র ১০ শতক জমিতে প্রথম পান চাষ শুরু করেন। গ্রাম্য পান চাষীদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেন। ছয় মাসের মধ্যে পানে সফলতা ফিরে আসে। বর্তমানে তার ক্ষেতে কয়েকজন শ্রমিক কাজ করেন। আর নিজে সারা বছরই তার পান ক্ষেত পরিচর্যা করেন।
তিনি আরো জানান, পান চাষ করেই তার ভাগ্যের চাকা ঘুরতে শুরু করেছে। অভাব-অনটনের সংসারে আজ তিনি মোটামুটি সুখি। পিছে ফিরে তাকে আর তাকাতে হয়নি।
তালা উপজেলার ইসলামকাটি গ্রামের পানচাষী হাসান আলম জানান, চলতি মৌসুমে আট বিঘা জমিতে পান চাষ করেছেন। এবার তার বরজে পানের ফলন খুবই ভালো। বাজারে পানের দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। প্রতি কাউন (১ হাজর ২৮০টি) পানের বাজার দর হলো ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা। উৎপাদন খরচ বাদে কয়েক লাখ টাকার মত লাভ করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুল মান্নান জানান, কৃষকদের পান চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন। পান চাষীরা পরামর্শ চাইলে খামার বাড়ির পক্ষ থেতে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। পানের রোগ বালাই দমনে চাষীদের সহযোগিতা করা হচ্ছে।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ