নিজস্ব প্রতিবেদক:
নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ইউএস-বাংলার পাইলট আবিদ সুলতানের স্ত্রী আফসানা খানমের অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছে তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড। মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হাসপাতাল সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান বোর্ডপ্রধান ডা. বজলুল আলম। এ হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) লাইফসাপোর্টে রয়েছেন আফসানা খানম।
১২ মার্চ কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে অবতরণের সময় ইউএস-বাংলার বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। এতে ক্রুসহ ৫১ জনের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার পর বিমানটির প্রধান পাইলট আবিদ আহতাবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। পর দিন সকালে কাঠমান্ডুর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তার মৃত্যু হয়।
আবিদের এমন করুণ মৃত্যু মেনে নিতে পারেননি স্ত্রী আফসানা। স্বামীকে হারিয়ে কখনও বাকরুদ্ধ কখনও অস্বাভাবিক আচরণ করছিলেন- তার স্বামী মারা যাননি, সবাই মিথ্যা কথা বলছে, আবিদ ফিরে আসবে, আবিদ তাকে সঙ্গে না নিয়ে একা চলে যেতে পারে না- এমন প্রলাপ বকতেন তিনি। স্বামীর শোকে মনস্তাত্ত্বিক চাপে রোববার নিজ বাসায় মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত সমস্যায় আক্রান্ত হন। এর পর থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। এর পর গুরুতর অবস্থায় আগারগাঁওয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয় আফসানাকে।
এদিকে সোমবার কাঠমান্ডু থেকে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ২৩ বাংলাদেশির সঙ্গে পাইলট আবিদ সুলতানের লাশও দেশে আসে। এদিন বিকালে অশ্রুসজল একমাত্র সন্তান তানভীর বিন সুলতান যখন বাবার লাশ গ্রহণ করছেন, তখন হাসপাতালে আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন মা আফসানা। সোমবার এক চিকিৎসক জানান, তার শারীরিক অবস্থা এতটাই ‘ফল’ করেছে, যেন তিনি এ পৃথিবীর মায়ার বাঁধন কাটিয়ে অন্য পৃথিবীতে পাড়ি জমাতে প্রস্তুত।
জীবনরক্ষাকারী ভেন্টিলেশন ব্যবস্থায় তার শ্বাস-প্রশ্বাস (হার্ট) চালু রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তবে তার শারীরিক অবস্থা এতটাই নাজুক যে তিনি অক্সিজেন ঠিকমতো নিতে পারছেন না। ভেন্টিলেশনের মাধ্যমে তার ৯০ শতাংশ অক্সিজেন গ্রহণের কথা, কিন্তু তিনি তা নিতে পারছেন না। তার চোখের মণি বড় হয়ে আছে। ফলে তার মস্তিষ্ক সঠিকভাবে কাজ না করায় শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি