নিজস্ব প্রতিবেদক :
সাতক্ষীরায় বোরো পরিচর্চায় ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা। আগাছা দমন, সেচ দেয়া, সার প্রয়োগসহ পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে নানা মুখি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন তারা। তবে উৎপাদন খরচ বেশি হওয়াতে কৃষকরা অনেকটা দুশ্চিন্তায়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ধান চাষে লাভের মুখ দেখবে এমনটায় আশা জেলার কৃষকদের।
অন্যদিকে উৎপাদনের লক্ষ মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লক্ষ ৬২৬ মে. টন। চলতি সপ্তাহে মাঠ পর্যায়ে সারের দাম কেজি প্রতি এক থেকে দুই টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে কৃষকরা জানান। অন্যদিকে পাইকারী ব্যবসায়ীদের দাবি চলতি সপ্তাহে বস্তা প্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকা সারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। সরবরাহ কম থাকায় দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বলে সার ডিলারদের অভিযোগ।
জেলা খামারবাড়ি সূত্র মতে, এ বছর সাতক্ষীরা সদরে বোরোর আবাদ হয়েছে ২৩ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে। যা থেকে ধানের উৎপাদন ধরা হয়েছে ৯৭ হাজার ৫১৭ মে. টন। কলারোয়া উপজেলাতে আবাদ হয়েছে ১২ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে। সব ঠিক থাকলে ধান উৎপাদন হবে ৪৮ হাজার ৭৮৫ মে. টন। তালাতে আবাদ হয়েছে ১৮ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে। যার উৎপাদিত ধানের লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছে ৭৩ হাজার ৭৮ মে. টন। দেবহাটাতে আবাদের লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৩০ হেক্টর এবং ধান উৎপাদনের লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছে ২৫ হাজার ১৮৯ মে. টন। কালিগঞ্জ উপজেলাতে আবাদের লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৩৪০ হেক্টর জমিতে যা থেকে উৎপাদিত ধানের পরিমাণ ধরা হয়েছে ২১ হাজার ৭৯৬ মে. টন। আশাশুনিতে আবাদ হয়েছে ৬ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে যা থেকে উৎপাদিত হবে ২৭ হাজার ৫৪৪ মে. টন। শ্যামনগর উপজেলাতে বোরোর আবাদ হয়েছে ০১ হাজার ৩৮৬ হেক্টর জমিতে যা থেকে উৎপাদিত ধানের পরিমাণ ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৭১৭ মে. টন। বোরো রোপনের আগে বীজ তলা তৈরি করে কৃষকরা।
এ বছর সাতক্ষীরা জেলাতে ৩ হাজার ৬৯৩ হেক্টর জমিতে বীজ তলা তৈরির লক্ষ মাত্রা নির্ধারণ করা হলেও অর্জিত হয় ৪ হাজার ৫৯৫ হেক্টর জমিতে। সরবরাহ বেশি থাকায় বোরো ধানের অনেক চারা নষ্ট হয়েছে বলে কৃষকদের দাবি।
সাতক্ষীরা শহরের কৃষক নাইম ইসলাম জানান, তিনি এ বছর দুই বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছে। ধানের বাড়নও ভাল।
বিঘা প্রতি তার উৎপাদন খরচ দাঁড়াবে ১৭ হাজার টাকা। এর মধ্যে বিঘা প্রতি বীজতলা তৈরিতে খরচ হয়েছে ২ হাজার টাকা। তার এক বিঘা জমিতে ১৮ মন ধান পাবে বলে আশা করছেন।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুল মান্নান জানান, জনবল সংকটের কারণে সব কৃষকের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয় না। তবে জেলায় কৃষি মেলার আয়োজনসহ বিভিন্নভাবে কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়ে থাকে।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর সাতক্ষীরাতে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ