মারুফ শরীফ, নিজস্ব প্রতিবেদক :
লালবাগের পরিত্যাক্ত কারাগারে বিএনপির চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অপেক্ষমান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, কোনো উসকানিতে কান না দিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিএনপির কারাবন্দি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর লালবাগ নাজিমুদ্দিন রোডের পরিত্যাক্ত কারাগারে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির মাত্র ৮ সদস্যের একটি দল দেখা করতে গেলে চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এ নির্দেশ দেন।
এদিন বিকেল ৩ টায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ড. মঈন খান, মির্জা আব্বাস, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এবিএম সাত্তারকে নিয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য কারাগারে যান বিএনপি মহসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বিকেল পৌঁণে ৫ টায় নাজিমুদ্দিন রোডে অপেক্ষমান সাংবাদিকদের মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা বেগম খালেদা জিয়া সঙ্গে আলাপ করে এটুকু বুঝতে পেরেছি, তার মনোবল অত্যন্ত উঁচুতে এবং বেশ শক্ত রয়েছে। তিনি সাহসিকতার সঙ্গে এই প্রতিকুল পরিবেশ মোকাবেলা করছেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানকে সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে নানা প্রকার উসকানি দিয়ে অশান্ত করার পায়তারা করছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আমাদেরকে সুনির্দিষ্ট করে বলে নির্দেশ দিয়েছেন, কারো উসকানিতে কান না দিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে যাওয়ার জন্য।
ফখরুল বলেন, এই কারারুদ্ধ অবস্থায় তিনি দেশ ও জনগণের জন্য চিন্তা করছেন। তিনি আমাদেরকে জানিয়েছেন, তিনি অটুট আছেন, তার শরীর ভাল আছে। দেশের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য যে কোনো ধরনের ত্যাগ স্বীকার করতে তিনি প্রস্তুত আছেন।
বিএনপির মহাসচিব আশা প্রকাশ করে বলেন, আমরা মনে করি সত্য প্রতিষ্ঠিত হবে এবং বে-আইনিভাবে সম্পূর্ণ মিথ্যা একটি মামলা দিয়ে তাঁকে(বেগম খালেদা জিয়াকে) যে কারান্তরীণ করে রাখা হয়েছে এবং সরকার বিভিন্ন কারচুপির মাধ্যমে বিভিন্ন ছল-চাতুরি করে তাঁর কারাবাসকে দীর্ঘ করার চেষ্টা করছে এ সবকিছুই দূর হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি এবং আইনি লড়াইয়ের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের যে রাজনৈতিক সংগ্রাম চলছে, তা অব্যহত থাকবে।
“বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছ থেকে বিশেষ কোনো নির্দেশনা পেয়েছেন কি না” সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা জানেন যে, দেশনেত্রী কারাবন্দি হবার পর থেকে একটা যৌথ নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে আমরা দল এবং আন্দোলন পরিচালনা করছি। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে পরামর্শ করেই সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছি।
জিয়া অরফানেজ ট্রাষ্ট মামলায় ৮ ফেব্রুয়ারি বেগম খালেদা জিয়াকে ৫ বছর কারাদন্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত। ২৬ দিন পর আজই প্রথম বিএনপির শীর্ষ নেতারা বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সুযোগ পেলেন।
এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কারাগারে চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য স্বরাষ্ট্র সচিবের কাছে আবেদন করেছিলাম। তারা আমাদের কেবল ৮ জনকে দেখা করার অনুমতি দিয়েছেন।
দৈনিক দেশজনতা/ এফ আর