অর্থমন্ত্রীসহ ব্যর্থ মন্ত্রীদের সরিয়ে দেয়ার আহ্বান সংসদে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সরকারের সব ব্যর্থ মন্ত্রীদের সরিয়ে দিয়ে মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সাবেক সমাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর টিম যদি শক্তিশালী না হয়, তাহলে সেটাকে নিয়ে তিনি লক্ষ্যস্থলে পৌঁছতে পারবেন না। এসময় ব্যাংকের দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে এবং দায়ীদের বিচার নিশ্চিত করতে ব্যাংকিং কমিশন গঠনেরও দাবি জানান তিনি।

স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে তিনি এসব কথা বলেন। জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু ছাড়াও সড়ক দূর্ঘটনা এবং দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র নিয়ে পয়েন্ট অব অর্ডারে কথা বলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ এবং বিএনএফের সভাপতি এস এম আবুল কালাম আজাদ।

ফ্লোর নিয়ে জিয়াউদ্দিন বাবলু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী সংসদের বলেছেন ৭ টি ব্যাংকে সাড়ে হাজার কোটি টাকা মূলধন ঘাটতি। এই মূলধনটা গেল কোথায়? কার টাকা এই মূলধনটা? এই ব্যাংকগুলোতে তো ডিপোজিট টাকা দিয়ে মূলধন হয়। এই টাকা যে অর্থমন্ত্রী আবার দিচ্ছেন এগুলো করের টাকা দিয়ে দিচ্ছেন। যারা কর দেয় তারা কি সেই ক্ষমতা অর্থমন্ত্রীকে দিয়েছে? মানুষের টাকা দিয়ে লুটের টাকা ভরনপোষন করার জন্য অর্থমন্ত্রীকে কে ক্ষমতা দিয়েছে?

তিনি বলেন, মূলধন ঘাটতির সরকারি ব্যাংকগুলো হল সোনালী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক। আর বেসরকারি ব্যাংকগুলো হল কমার্স ব্যাংক, ফারমার্স ব্যাংক ও আইসিবি ব্যাংক। এদের আবার মূলধন দিয়ে লাভ কি? এই টাকা অর্থমন্ত্রী কোথায় থেকে দেবেন? এদেশের ১৬ কোটি মানুষ কৃষক, শ্রমিক, রিক্সাওয়ালা। এসব ব্যাংকগুলোকে করদাতার টাকা দিয়ে ভরণপোষণ করবেন, এ সাংবিধানিক অধিকার অর্থমন্ত্রী কোথায় থেকে পেয়েছেন? এ পর্যন্ত ১৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যাংকগুলোর ঘাটতি পূরণ করেছেন অর্থমন্ত্রীর মেয়াদে। আর ব্যাংকগুলো দুর্বল হচ্ছে বর্তমান এই অর্থমন্ত্রীর সময়।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বিরোধী দলের এ নেতা আরও বলেন, ’আপনি বলেছেন আপনাদের ব্যর্থতার কথা শুনতে চান। তাহলে কেউ যদি ব্যর্থ হয় তাহলে আপনি কেন তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। ব্যর্থতার দায় নিয়ে কেন মন্ত্রীরা এখানে থাকবেন? আমরা বার বার বলছি উনার (অর্থমন্ত্রী) চলে যাওয়া উচিত। উনি শুধু ঘাটতির কথা বলেন, উন্নয়নের রঙিন চিত্র দেখান। মানুষ জানতে চায়- এই ঘাটতি টাকা আমরা কোথায় থেকে দেব? এর জবাব আমাদের কাছে নেই। একজন লুট করবে আর অর্থমন্ত্রী মানুষের টাকা দিয়ে ভরণপোষণ করবেন- এটা হতে পারে না।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, বেসিক ব্যাংকের পরিচালক ও এমডিকে গ্রেফতার করা হয়েছে, কিন্তু ব্যাংটির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না? জনতা ব্যাংকের দুর্নীতি নিয়ে কেন অর্থমন্ত্রী আবুল বারাকাতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেননি? আমরা ১৬ কোটি মানুষের পক্ষে থেকে জানতে চাই কেন তিনি এই মূলধন ঘাটতি সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা দিচ্ছেন? তিনি বার বার ব্যর্থতার কথা সংসদে বলবেন আর টাকা দিবেন এভাবে দেশ চলতে পারে না।

জিয়াউদ্দিন বাবলু প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, আপনার (প্রধানমন্ত্রী) বিরাট একটি ইমেজ আছে। আপনি দেশকে উন্নত সমৃদ্ধশালী দেশের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। আপনি ক্ষ্ধুাম্ক্তু দারিদ্র্যমুক্ত দেশ প্রতিষ্ঠার জন্য নিরলসভাবে চেষ্টা করছেন। কিন্তু টিম যদি শক্তিশালী না হয় তাহলে সেটাকে নিয়ে আপনি লক্ষ্যস্থলে পৌঁছতে পারবেন না। তাই আমি মনে করি আপনার সরকারে স্বার্থে যেসব ব্যর্থ মন্ত্রী আছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেন। তাদেরকে ডিসমিস করেন। তাদের বরখাস্ত করেন। মানুষের আস্থা তৈরি করেন যে, প্রধানমন্ত্রী মানুষের কথা শোনেন, ১৬ কোটি মানুষকে মার্যাদা দেন

দৈনিক দেশজনতা /এন আর