স্বাস্থ্য ডেস্ক:
আবার ঋতু পরিবর্তনের ধাক্কা। রং লেগেছে বনে বনে। ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায় দোল খেয়ে যায় ফুল-পাখিদের দল আর নবীন পত্রপল্লব। কিছুদিন আগেই ছিল প্রবল শীত। ওম দেওয়া প্রিয় কম্বলটাকেই এখন যেন শত্রু শত্রু লাগছে। সিন্দুকে ভরে ফেলতে পারলেই যেন বাঁচা। গরম পড়তে শুরু করেছে। আবার রাত একটু গড়ালেই শীত লাগে। বাতাস শুষ্ক, তাতে যথেষ্ট ধুলা। এই সময় কিছু অসুখ বাড়তে পারে। কী কী অসুখ হতে পারে এ সময়ে? একটু আলোচনা করা যাক।
১. জ্বর-সর্দি-কাশি
ভাইরাল ফ্লু, এ সময়ের খুব প্রচলিত অসুখ। এ সময় শীত-গরমের তারতম্যে শরীর নাজুক হয়ে ওঠে। এই সুযোগ কাজে লাগায় ভাইরাস। জ্বরের সঙ্গে শুরু হয় সর্দি-কাশি। গলাব্যথাও হয়। ৭ থেকে ১০ দিনে এমনিতেই সেরে যায়। তবে কখনো কখনো এর সঙ্গে জেঁকে বসতে পারে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণও। তখন অ্যান্টিবায়োটিক লাগতে পারে। গলাব্যথায় টোটকা হিসেবে গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে গার্গল করে নিলে ভালো।
২. অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্ট
এ সময়ে অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্ট বেড়ে যেতে পারে। কারণ ওই একই—বাতাসের ধুলা, ফুলের রেণু। এখান থেকে অ্যালার্জির প্রবণতা বাড়ে। অতঃপর শ্বাসকষ্ট হয়। এ ক্ষেত্রে নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। স্যালবুটামল, মন্টিলুকাস্ট জাতীয় ওষুধ সেবন করতে হয় । প্রয়োজনে ইনহেলার ব্যবহার করবেন।
৩. সাইনুসাইটিস
যাদের সাইনুসাইটিস রয়েছে, তাদের এ সময়ে রোগের প্রকোপ বাড়তে পারে। গরম পানির ভাপ, মেন্থলের ভাপ নিলে উপকার পাবেন। খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে খোলা বাতাসে হাঁটলে ভালো থাকা যায়।
৪. জলবসন্ত
এ সময়ের একটি বিশেষ সংক্রামক অসুখ হলো জলবসন্ত। জলবসন্ত ভাইরাসজনিত। এমনিতে খুব ক্ষতিকর নয়। তবে অল্প কিছু ক্ষেত্রে এটা জটিলতা তৈরি করতে পারে।
জলবসন্ত দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। নিজে নিজে ফোস্কা গালবেন না। জ্বর থাকলে প্যারাসিটামল খাবেন। গা চুলকাতে পারে। সে জন্য অ্যান্টিহিস্টামিন খেতে পারেন। ক্ষেত্রবিশেষ অ্যান্টিবায়োটিকেরও প্রয়োজন হতে পারে। জলবসন্তের টিকা পাওয়া যায়। নিয়ে নিতে পারেন। আক্রান্ত ব্যক্তিকে পরিবারের অন্য সদস্যদের থেকে দূরে রাখবেন।
৫. ডায়রিয়া
এ সময়ে পানিবাহিত রোগগুলো খুব বেশি হয়। ডায়রিয়া, আমাশয়, টাইফয়েড প্রভৃতি রোগ থেকে সাবধান থাকতে হবে। ফুটানো পানি পান করবেন। বাইরের পানি, রাস্তার পাশে বানানো শরবত খাবেন না।
৬. ত্বকের অসুখ
যাদের ত্বক ফাটার সমস্যা আছে, তাদের জন্য এই সময়টা খারাপ। শুষ্ক বাতাসের এ সময়ে ত্বক ফাটে বেশি। নিয়মিত পেট্রোলিয়াম জেলি, অলিভ অয়েল ব্যবহার করবেন। ত্বক ভেজা রাখবেন। ঋতু বদলের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যায় প্রকৃতি। বদলের ধাক্কায় শরীরটা যেন ঠিক থাকে, সেই চেষ্টা থাকুক। সবার বসন্ত দিনে সুস্বাস্থ্যের গান ধ্বনিত হোক।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি