অর্থনৈতিক প্রতিবেদক:
কুষ্টিয়ার মোকামে মিনিকেট চাল কেজি প্রতি দুই টাকা বাড়িয়েছে মিল মালিকরা। আর ভোক্তা পর্যায়ে প্রভাব পড়েছে কেজি প্রতি তিন টাকা। গত বুধবার থেকে হঠাৎ করে চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় হোঁচট খাচ্ছেন ভোক্তারা। শনিবার কুষ্টিয়া পৌরবাজারে চাল কিনতে যান শহরের আড়ুয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা আকরাম হোসেন। তিনি বলেন,গত রোববারও ২০ কেজি ওজনের বস্তা কিনেছিলেন ৬০ টাকা কেজি দরে। সেই একই বস্তার চাল কিনলাম ৬৩ টাকা কেজি দরে। এক সপ্তাহের মধ্যেই কেজি প্রতি তিন টাকা টাকা বাড়ল। এটা মানতে পারছি না।
মিনিকেট চালের দাম নিয়ে কুষ্টিয়া মোকাম দেশের ভেতর সবচেয়ে বেশি আলোচনায় থাকে। গত বছরে কোরবানি ঈদের আগে ও পরে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে কুষ্টিয়া মোকামে চালের দাম বাড়ার ফলে একাধিক প্রতিবেদন হয়। এক মাসের মধ্যে মিনিকেট চাল কেজি প্রতি ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছিল। সরকারের কর্তাব্যক্তিরা এই মোকামে অভিযানও চালান।
সদর উপজেলার আইলচারায় ধানের হাটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত তিন সপ্তাহে ধানের দাম অনেকটা স্থিতি রয়েছে। মিনিকেট চাল উৎপাদনের জন্য সরু ধান বিক্রি হচ্ছে মণপ্রতি ১ হাজার ৩৫০ টাকা। বিনা-৭ জাতের ধান বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪০ টাকা মণে। তবে কৃষকের কাছে তেমন ধান নেই। মিনিকেট চাল উৎপাদনের জন্য ধান অনেক আগেই মিল মালিকরা কিনে গুদামজাত করে নিয়েছেন।
বাজার মনিটরিং ও পৌরবাজার চালের আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত সোমবার মিলগেটে মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে ৫৮ টাকা কেজি দরে। সেই চাল বুধবার বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়। আর বাজারে ভোক্তারা কিনছেন ৬৩ টাকা দরে। মিল মালিকরা বলছেন, ধানের দাম বেড়েছে তাই বাধ্য হয়ে চালের দাম বাড়ানো হয়েছে।
পৌরবাজারের চাল ব্যবসায়ী শাপলা ট্রেডার্সের মালিক আশরাফুল ইসলামের দাবি, মিল মালিকরা দাম বাড়াচ্ছে তাই দাম বাড়াতে হচ্ছে। পাঁচদিন আগে কুষ্টিয়ার দ্বিতীয় সবোর্চ্চ বড় চালকল মালিক বিশ্বাস অ্যাগ্রো ফুড হঠাৎ মিনিকেট চাল কেজি প্রতি দুই টাকা করে বাড়িয়ে দেয়। এতেই প্রভাব পড়তে শুরু করে।
তিনি বলেন, দাম বাড়ানোটা এই মুহূর্তে ঠিক হয়নি। মা স্টোরের মালিক মঞ্জুরুল হক বলেন, বিশ্বাস অ্যাগ্রো ফুডের দাম বাড়ানো দেখে রশিদ ও অনান্য মিল মালিকরা দাম বাড়ায়। আমাদের কিছুই করার নেই। জেলা বাজার মনিটরিং কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, হঠাৎ করে মিনিকেট চালের দাম বেড়েছে। এটা নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাংলাদেশ অটোরাইস ও হাসকিং মিল মালিক সমিতির কুষ্টিয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক ও খাজানগর এলাকায় দাদা অটোরাইস মিলের কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন প্রধান বলেন, চালের বাজার এখন চড়া হবার কথা না। তারপরও বেড়ে যাচ্ছে কেন সেটা দেখতে হবে।
বিশ্বাস অ্যাগ্রো ফুডের মালিক বায়েজীদ বিশ্বাস বলেন, ১০/১২ দিন আগে ১ হাজার ৪২০ টাকা মণ দরে ধান কেনা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে তো চালের দাম বাড়বে। মনে করেছিলাম মার্চে বাড়বে কিন্তু তার আগেই বেড়ে গেল। চালের দাম হয়তো আরও একটু বাড়তে পারে। এরআগে বেশি দামে ধান কিনে কম দামে চাল বিক্রি করেছি। আর কত করব।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ