নিজস্ব প্রতিবেদক:
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (WHO) এর মতে, ৩০-৩৫ শতাংশ ক্যান্সারই প্রতিরোধযোগ্য। যদিও ক্যান্সার একটি লাইফস্টাইল ডিজিজ যা প্রতিরোধ করা যায় স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের মাধ্যমে। টিউমারপ্রবণ কোষে ক্রমাগত জিনগত পরিবর্তনের ফলেই হয় ব্রেইন ক্যান্সার অথবা ইতিমধ্যেই মস্তিস্কে হওয়া নিম্নমাত্রার গ্লিয়াল টিউমার বিবর্ধিত হয়ে তৈরি হয় ব্রেইন ক্যান্সার। যদিও সকল ধরনের ব্রেইন ক্যান্সারের সম্ভাবনাকে আপনি কমাতে পারবেন না কিন্তু ব্রেইন টিউমারের ঝুঁকি কমাতে পারবেন এবং নিরাময় লাভ করতে পারবেন। বেঙ্গালুরো এর সাইট কেয়ার হাসপাতালের নিউরোসার্জারির সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. সুনিল ফারটাডো ব্রেইন টিউমারের বিষয়ে কিছু বিষয় শেয়ার করেছেন যা সবার জানা উচিৎ। চলুন তাহলে সে বিষয়গুলো জেনে নিই।
১। আপনার পরিবারের চিকিৎসা ইতিহাস জানুন
আপনার পারিবারিক চিকিৎসার ইতিহাস সম্পর্কে সচেতন থাকা জরুরী, ক্যান্সার ও টিউমারের ঘটনাগুলোসহ। যদি আপনার পরিবারে জেনেটিক সিনড্রোম হওয়ার ঝুঁকি থাকে তাহলে ব্রেইন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। তাই এ ধরনের রোগের রেকর্ড রাখাটা জরুরী। লি-ফ্রমেনি সিনড্রোম, নিউরোফাইব্রোম্যাটোসিস, টিউবারাস স্ক্লেরোসিস এবং টারকোট সিনড্রোম আপনার ব্রেইন ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি করে। এগুলোর কোন লক্ষণ যদি আপনার মধ্যে প্রকাশ পায় তাহলে তা প্রাথমিক অবস্থায় ব্রেইন টিউমার শনাক্ত করতে সাহায্য করবে।
২। বিকিরণের সংস্পর্শ
স্মার্টফোন বা মাইক্রোওয়েভ এর বিকিরণ এর সাথে ব্রেইন ক্যান্সারের কোন সম্পর্ক নেই। আয়োনাইজিং রেডিয়েশন থেকে র্যাডন, এক্সরে বা গামা রশ্মির অত্যধিক সংস্পর্শ এবং অন্য উচ্চ শক্তির বিকিরণ ডিএনএ কে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে, ফলে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। তাই বিকিরণের সংস্পর্শের বিষয়ে আপডেট থাকা এবং এধরণের সংস্পর্শ এড়িয়ে যাওয়া ক্যান্সারের ঝুঁকি শনাক্ত করতে সাহায্য করবে।
৩। বয়স এবং ক্যান্সারের সম্পর্কের বিষয়টি বোঝা
যদিও বয়স নিশ্চিত কোন ফ্যাক্টর নয় যা আপনাকে ব্রেইন ক্যান্সারের ঝুঁকিতে ফেলে, তবে বয়স ৪০ হওয়ার পর থেকে এই ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। যদিও ব্রেইন স্টেম গ্লিওমাস এবং পিলোসাইটিক অ্যাস্ট্রোসাইটোমাস (নিম্ন মাত্রার টিউমার) এর মত কিছু ব্রেইন টিউমার শিশুদের হতে পারে।
৪। লক্ষণকে অবহেলা করার ঝুঁকির বিষয়ে সচেতন হোন
ব্রেইন ক্যান্সারের সাধারণ লক্ষণ যেমন- খিঁচুনি, মাথাব্যথার তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়া এর পাশাপাশি বমি করা, কথা জড়িয়ে যাওয়া, স্মৃতিশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া ইত্যাদির বিষয়ে সচেতন হওয়া উচিৎ। যদি ১ মাসের ও বেশি সময় ধরে এই লক্ষণগুলো আপনার মধ্যে দেখা যায় তাহলে সচেতন না হলে আপনার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। লক্ষণগুলোকে উপেক্ষা করা বা চিকিৎসাকে এড়িয়ে যাওয়া আপনার পরিস্থিতিকে নিশ্চিতভাবেই খারাপ করে তুলতে পারে। ব্রেইন টিউমার প্রাথমিক অবস্থায় নির্ণয় করা গেলে নিরাময় লাভ করা যায়। তাই প্রাথমিক লক্ষণ দেখা যাওয়া মাত্রই আপনার নিউরোলজিস্ট, নিউরোসার্জন বা জেনারেল ফিজিশিয়ান এর কাছে যাওয়া উচিৎ।
দৈনিক দেশজনতা/এমএইচ