নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩২ ধারা স্বাধীন গণমাধ্যমে কোনো বাধা হবে না বলে দাবি করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তার দাবি, এই আইনটি পুরোপুরি স্বচ্ছতার সঙ্গে করা হয়েছে। এটা নিয়ে মন্ত্রিসভায় কোনো প্রশ্ন উঠেনি। মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব তোফায়েল আহমেদ এ কথা বলেন।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন হয়। এখন আইনটি পাসের জন্য সংসদে তোলা হবে। এই আইনটি পাস হলে এর আগের তথ্য প্রযুক্তি আইনটির বিলোপ হবে। ওই আইনের ৫৭ ধারায় বেশ কিছু গণমাধ্যম কর্মীর বিরুদ্ধে মামলার পর ধারাটি বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিল সাংবাদিকরা। ওই ধারাটি বেশি বিস্তৃত থাকায় মামলা করা সহজ ছিল বলে অভিযোগ আছে। আবার ধারাটি জামিন অযোগ্য হওয়াও একটা সমস্যা।
প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সেই ৫৭ ধারার চেয়ে কঠোর একটি ধারা রাখা হয়েছে। এর ফলে গোপনে ছবি ধারণ করে প্রতিবেদন তৈরি অসম্ভব হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রস্তাবিত আইনের ৩২ ধারায় বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি বেআইনি প্রবেশের মাধ্যমে কোনো সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত বিধিবদ্ধ সংস্থার কোনো গোপনীয় বা অতি গোপনীয় তথ্য-উপাত্ত কম্পিউটার বা ডিজিটাল ডিভাইস বা কম্পিউটার নেটওয়ারর্কে ধারণ, প্রেরণ, সংরক্ষণ করেন বা করতে সহায়তা করেন তাহলে সেটা হবে গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধ।’
এই আইনে ১৪ বছরের কারাদণ্ড এবং ২৫ লাখ টাকা জরিমানার প্রস্তাব করা হয়েছে। আর আর এই অপরাধ দ্বিতীয়বার করলে সাজা হবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা এক কোটি টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড। সোমবার মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম বলেছেন, এই ধারাটি সাংবাদিকদেরও ওপর ব্যবহার করা হবে না। তারপরও উদ্বেগ কাটছে না গণমাধ্যম কর্মীদের। আর বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, এই ধারাটি সাংবাদিকদের ওপর প্রয়োগ করা হবে।
সরকারের দুর্নীতি যেন প্রকাশ না পায় সে জন্যই এমন একটি বিধান যোগ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভী। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি হেসে বলেন, ‘৩২ নম্বর ধারা দিয়েও সাংবাদিকদের থামানো যাবে না।’ মন্ত্রী বলেন, ‘কেবিনেটে সবার সঙ্গে আলোচনা করেই এটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। কেউ এটা নিয়ে আপত্তি করেনি।’
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ