২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৭:৩৬

বাংলাদেশ গ্রহণ করেনি জিৎকে

বিনোদন ডেস্ক:

ভারতের কলকাতায় ‘ইন্সপেক্টর নটি কে’ ছবিটি মুক্তি পেয়েছে ১৯ জানুয়ারি। এ কারণে একটু তাড়াহুড়ো করে গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশে মুক্তি দেওয়া হয় নুসরাত ফারিয়া ও জিৎ অভিনীত এই নতুন ছবি। তাড়াহুড়োর ফল ভালো হয়নি। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র বুকিং এজেন্ট সমিতির সভাপতি সারোয়ার আলী ভূঁইয়া জানান, বাংলাদেশে মুক্তি পাওয়া জিতের অন্য দুটি ছবি ‘বাদশা’ ও ‘বস টু’র মতো সাফল্য পায়নি নতুনটি। তাঁর মতে, ‘ছবিটি কিন্তু ভারতের কলকাতায়ও তেমন ব্যবসা করতে পারেনি। শুধু তা-ই নয়, দর্শক এই জিৎ আর তাঁর নতুন ছবিকে ভালোভাবে গ্রহণ করেননি।’

বাংলাদেশের জাজ মাল্টিমিডিয়া ও ভারতের কলকাতার জিৎ’স ফিল্ম ওয়ার্কসের যৌথ প্রযোজনায় ‘ইন্সপেক্টর নটি কে’ ছবিটির শুটিং শুরু হয়েছিল। কিন্তু মুক্তির আগে যৌথ প্রযোজনার নীতিমালা নিয়ে ঝামেলা হয়। যৌথ প্রযোজনার বদলে বিনিময় চুক্তির আওতায় বাংলাদেশে আমদানি করা হয় ছবিটি। জানা গেছে, এক দিনের মধ্যে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড থেকে ছবিটির ছাড়পত্র নেওয়া হয়। ছবির প্রচারণায় অংশ নিতে গত বুধবার ঢাকায় আসেন ছবির নায়ক ও প্রযোজক জিৎ। ‘ইন্সপেক্টর নটি কে’ ছবি প্রচারে বাংলাদেশে এসে এই নায়ক ও প্রযোজক বলেন, ‘একসঙ্গে দুই দেশে মুক্তি পেলে যে সাড়া পাওয়া যায়, ছবি আমদানি হয়ে এ দেশে এলে সেই সাড়া পাওয়া যায় না। এতে প্রযোজকের আর্থিক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। এখন এর ফল কেমন হবে, বোঝা যাচ্ছে না।’

বাংলাদেশে মুক্তির দ্বিতীয় দিনেই জিতের সেই আশঙ্কা বাস্তবে পরিণত হলো। দেশের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে ছবির প্রথম শোতে দর্শকের আগ্রহ মোটামুটি দেখা গেলেও দ্বিতীয় শো থেকে চিত্রটা পাল্টে যায়। মুখ ফিরিয়ে নেন দর্শক। সারোয়ার আলী ভূঁইয়া বলেন, ‘একটা ছবি সম্পর্কে দর্শককে জানাতে হলে প্রচারণা দরকার। এই ছবির ক্ষেত্রে তা মোটেও সম্ভব হয়নি। বৃহস্পতিবার ছবিটি সেন্সর ছাড়পত্র পায়। পোস্টার ছাপানো হয়েছে সেদিন রাতে। এত তাড়াহুড়োর কারণে এই ছবির মুক্তির কথা দর্শক জানতেই পারেননি।’ সারোয়ার আলী ভূঁইয়া আরও বলেন, ‘জিতের আগের দুটি ছবি যেমন ছিল, এটি তেমন না। আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি, ভারতের বাংলা ছবির এই নায়কের অ্যাকশনধর্মী ছবির প্রতি বাংলাদেশের দর্শকের আগ্রহ আছে। কিন্তু নতুন ছবিটি কমেডি ধাঁচের। তাই দর্শকেরা এই নায়কের কাছ থেকে এমন ছবি গ্রহণ করেননি।’

এদিকে মধুমিতা প্রেক্ষাগৃহের কর্ণধার ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বলেন, ‘আমার প্রেক্ষাগৃহে প্রতিদিন পাঁচটি শো চলে। এর মধ্যে দুটি মোটেও ভালো যায়নি, বাকি তিনটি ভালোই গেছে।’ জানা গেছে, জিৎ অভিনীত ও প্রযোজিত এই ছবিটি বড় বাজেটে নির্মিত হয়েছে। যতটা বড় বাজেটে ছবিটি নির্মাণ করা হয়েছে, ঠিক ততটাই ব্যবসায়িকভাবে ব্যর্থতার দিকে যাচ্ছে বলে মত দিচ্ছেন চলচ্চিত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।

‘আনন্দবাজার পত্রিকা’ চলচ্চিত্রটি পর্যালোচনা করে ‘বিনোদন নয়, শুধুই বিরক্তি’ শিরোনামে লিখেছে, ‘পুলিশ ইন্সপেক্টরদের নিয়ে টালিউডে অনেক ছবি তৈরি হয়েছে। সেই তালিকায় একেবারে নিচের সারিতে থাকবে এই ছবি। কাহিনি দুর্বল তো বটেই, রোমান্টিক-কমেডি ছবির মজা কিংবা রোমান্স কোনোটাই প্রত্যাশা পূরণ করে না। বরং কমেডি তো কখনো কখনো বুমেরাং হয়ে দাঁড়ায়। ভাঁড়ামো দিয়ে কি দর্শকের মন জয় করা যায়?’

শ্যামলী প্রেক্ষাগৃহের ব্যবস্থাপক আহসানউল্লাহ শনিবার দুপুরে বলেন, ‘হঠাৎ করে এক দিনের নোটিশে ছবিটি মুক্তি দেওয়া হয়েছে। কোনো প্রচার-প্রচারণা নেই, এভাবে তো ছবি চলবে না। তা ছাড়া ছবিটিও খুব আহামরি কিছু না।’ জিৎ অভিনীত অন্য দুটি ছবি ভালো ব্যবসা করেছে। আহসানউল্লাহ বলেন, ‘আমাদের হিরো শাকিব খানের ছবি যেভাবে ব্যবসা করে, দর্শকেরা যেভাবে আগ্রহ নিয়ে দেখেন, বাইরের হিরোদের ছবি নিয়ে খুব একটা আগ্রহ দেখি না।’

যশোরের মনিহার প্রেক্ষাগৃহেও মুক্তি দেওয়া হয়েছে ‘ইন্সপেক্টর নটি কে’ ছবিটি। এই প্রেক্ষাগৃহের ব্যবস্থাপক তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘ছবিটি নিয়ে আমাদের ব্যবসা আহামরি না। দর্শকের কোনো আগ্রহ দেখছি না। শুনেছি, কলকাতায়ও নাকি ছবিটি দর্শক পছন্দ করেননি।’ অশোক পতি পরিচালিত এই ছবিতে নুসরাত ফারিয়া, জিৎ ছাড়া আরও অভিনয় করেছেন চম্পা, শহিদুল আলম সাচ্চু, চিকন আলী, অনির্বাণ ভট্টাচার্য (কলকাতা) প্রমুখ। ছবিতে গান লিখেছেন প্রিয় চট্টোপাধ্যায় ও প্রাঞ্জল। সংগীত করেছেন স্যাভি ও শুদ্ধ রায় আর গেয়েছেন রাজ রহমান, দেব নেগি, স্বীতা পণ্ডিত প্রমুখ।

দৈনকদেশজনতা/ আই সি

প্রকাশ :জানুয়ারি ২৮, ২০১৮ ১২:১৮ অপরাহ্ণ