স্থায়ী কমিটির বৈঠকের ফাঁকে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই সিদ্ধান্তের এই কথা জানান।
তিনি বলেন, এই রায়ের তারিখ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গোটা জাতি আজকে উদ্বিগ্ন, ক্ষুব্ধ ও ক্রদ্ধ। আমরা মনে করি, এটা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ধবংস করবার জন্যে এবং সকলের অংশগ্রহনে ইনক্লুসিভ ইলেকশন নষ্ট করার জন্য এটা একটা গভীর ষড়যন্ত্র বলে আমরা মনে করি।
তিনি বলেন, জাতীয় স্থায়ী কমিটির আজকের সভা থেকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ কয়েকজন নিরাপরাধ ব্যক্তিকে মিথ্যা, বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলা দিয়ে সরকারের আইন-আদালতের নিয়মনীতির বিরুদ্ধ আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এ ব্যাপারে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে বিচারের নামে সরকারি ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবার আহবান জানাচ্ছে।
কোনো কর্মসূচি গ্রহন করা হয়েছে কিনা প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ এটা জানাবো রায় ঘোষনা হবার পরে। পুরো বিষয়টা আমরা আবার জানাবো রায় ঘোষণা হলেই।”
তিনি বলেন, ‘‘ গত ২৫ জানুয়ারি বিশেষ জজ আদালতে বিবাদী পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য হঠাৎ সমাপ্তি করে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাষ্ট মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদের উপস্থিত প্রবীন আইনজীবীদের মতে, এমন ঘটনা শুধু অস্বাভাবিক ও অপ্রত্যাশিত নয়, রহস্যজনক। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ও দেশনেত্রীকে নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে বাইরে রাখার জন্য দ্রুত রায় ঘোষণা সেই অপচেষ্টার অংশ বলেই দেশবাসী মনে করে।”
তিনি বলেন, সরকার প্রধান থেকে শুরু করে গত কয়েকদিন ধরে সরকারের মন্ত্রীগণ এবং বিশেষ দূত এই মামলার রায় এবং তার সম্ভব্য পরিস্থিতি মোকাবিলার বিষয়ে সরকার ও সরকারি দলের বিভিণ্ন প্রস্তুতির কথা যেভাষায় বলে চলেছেন তাতে প্রমাণিত হয়- মামলা আদালতে বিচারাধীন থাকলেও তার রায় কি হবে তা সরকার ও সরকারি দলের জানা আছে বলেই মনে হয়।
রায় দেখে কর্মসূচি ঘোষণা করবে বিএনপি
স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত
খালেদা জিয়াকে নির্বাচনের
বাইরে রাখা হলে বয়কট, রায় দেখে কর্মসূচি
নিজস্ব প্রতিবেদক
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় দেখে কর্মসূচি ঘোষণা করবে বিএনপি। একইসাথে দলের চেয়ারপারসনকে আগামী নির্বাচন থেকে বাইরে রাখার কোন ষড়যন্ত্র হলে সেই নির্বাচন বয়কট করা হবে বলে দলটির নির্ধারকরা একমত হয়েছেন।
শনিবার রাতে গুলশান কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। বেগম খালেদা জিয়া বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়। মামলার ভবিষ্যত রায় নিয়ে আইনী ও রাজনৈতিক পর্যালোচনা এবং করণীয় নির্ধারণে এ বৈঠক ডাকা হয়। রাত সাড়ে ৯ টায় শুরু হয়ে পৌনে ১২ টায় বৈঠক শেষ হয়। বৈঠকটি মুলতবি করা হয়েছে। সোমবার আবার এ বৈঠক হবে। এর আগে আজ জোটের সাথে বৈঠক করবেন বেগম খালেদা জিয়া।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার মামলা নিয়ে শীর্ষ নেতারা নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেছেন। এক্ষেত্রে সাংগঠনিক প্রস্তুতির পাশাপাশি নেতা-কমীর্দের সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। রায়ে নেতিবাচক কিছু হলে তাৎক্ষণিক সারাদেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখানোর কথা বলেছেন কোন কোন নেতা।
জানা গেছে, মামলার রায়ের তারিখকে সামনে রেখে দলের নির্বাহী কমিটির একটি সভা ডাকা হতে পারে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। সেখানে উদ্ভুত পরিস্থিতির আলোকে দলীয় নেতাদের পরামর্শ নেয়া হবে।
এদিকে খালেদা জিয়ার মামলার রায় ‘তড়িঘড়ি’ করাকে ‘সরকারি ষড়যন্ত্র’ দাবি করে এর বিরুদ্ধে দেশবাসীকে সোচ্চার হবার আহবান জানিয়েছে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি।
ফখরুল বলেেন, জালিয়াতি করে বিচারের নামে প্রহসন ও বিরোধী পক্ষ থেকে দমন করার জন্য আদালতকে ব্যবহার করার আরেকটি নোংরা দৃষ্টান্ত স্থাপিত হতে যাচ্ছে। বিচার বিভাগ ও আইনের শাসন নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের এমন আচরণ দেশের জনগন আজ ক্ষুব্ধ ও ক্রুব্ধ।
খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে বৈঠকে মহাসচিব ছাড়াও স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মাহবুবুর রহমান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক দেশজনতা/এস সি