নিজস্ব প্রতিবেদক:
দলীয় নেতা-কর্মীদের ক্ষমতার দাপট না দেখানোর আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছে যে, ক্ষমতা চিরদিন থাকে না। জনগণের কাছে গিয়ে, তাদেরকে ভালোবেসে রাজনীতি করার তাগিদও দিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার দুপুরে লালমনিরহাট জেলা পারিষদ মাঠে এক কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। দলীয় নেতাকর্মীদের কাদের বলেন, ‘বিলবোর্ডে ছবি দিলে নেতা হওয়া যায় না। জনগণকে খুশি করুন। যার আচরণে জনগণ খুশি হবে, তিনিই নেতা হবেন।’
দলের ‘অসুস্থ কর্মী ও তাদের পরিবারের খোঁজ খবর নিতেও দলের নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ নেতা। ত্যাগী নেতা কর্মীদেরকে দল মূল্যায়ন করবে জানিয়ে কাদের বলেন, ‘বাসায় বসে থেকে সদস্য সংগ্রহ অভিযান করবেন না। ঘরে ঘরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন ও প্রতিশ্রুতি কথা বলে সদস্য সংগ্রহ করুন।’
অন্য দল থেকে কর্মী ভাগিয়ে আনার প্রবণতা ছাড়ার পরামর্শও দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। বলেন, ‘সুযোগ পেলে শীতের অতিথি পাখিরা নৌকায় ভিড়বে, সুযোগ শেষে আবার চলে যাবে। তাই সাবধান থাকুন।’ ‘চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির কেউ আওয়ামী লীগের সদস্য হতে পারবে না। ত্যাগী নেতাদের বাদ দেবেন না।’
আগামী নির্বাচনে মনোনায়ন পাওয়ার জন্য দলের নেতাদের মধ্যে প্রতিযোগিতাকে স্বাগত জানালেও এ নিয়ে কোনো বিশৃঙ্খলা সহ্য করা হবে না বলেও জানিয়ে দেন কাদের। তিনি বলেন, ‘বড় বড় ছবি ছাপিয়ে প্রার্থী হয়েছেন অনেকেই। প্রতিযোগিতা থাকা ভাল। প্রার্থী হন, কিন্তু ছিট নষ্ট করবেন না।’
‘দলের নেত্রীর হাতে সকলের গোপন তথ্য রয়েছে। যারা জনগণের ভালবাসা পাচ্ছেন এবং কারা জয়লাভের পথে আছেন তার সব কিছু যাচাই বাচাই করে মনোনায়ন দেয়া হবে।’ সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে কাদের বলেন, ‘দেশের মানুষের হাতে মোবাইল ফোন পৌঁছে দিয়েছে সরকার। দেশের মানুষ আজ শান্তিতে রয়েছে। মঙ্গা শব্দটি এখন জাদুঘরে রয়েছে।’
‘সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর মাধ্যমে বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী, মাতৃত্বকালীন ও মুক্তিযোদ্ধা ভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’ শেখ হাসিনার সরকার নারীদের মর্যাদাও বাড়িয়েছে জানিয়ে সড়ক মন্ত্রী বলেন, ‘নারীরা আজ সচিব, ডিসি, এসপি হয়েছেন। তাই আগামী নির্বাচনে মহিলারাই হবে প্রধান হাতিয়ার।’
বিএনপির সমালোচনা করে ক্ষমতাসীন দলের নেতা বলেন, ‘বেগম জিয়া ঈদের আগে আন্দোলনের ডাক দেন আর আন্দোলনকে ভ্যানিটি ব্যাগে ঢুকিয়ে লন্ডনে চলে যান। কারণ তারা জানে জনগণ তাদের সাথে নেই।’ ‘হাওয়া ভবনের লুটপাটের কথা বাংলার মানুষ ভুলে নেই। তাদের সময় দেশ রক্ত গঙ্গায় ভেসেছে। দেশের মানুষ জানে তারা (বিএনপি) ক্ষমতায় এলে আবারো দেশ রক্তগঙ্গায় পরিণত হবে।’
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও লালমনিরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, আওয়ামী লীগের দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, লালমনিরহাট-৩ আসনের সংসদ সদস্য আবু সাঈদ দুলাল, সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য সফুরা বেগম রুমী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান, হাতীবান্ধা উপজেলা চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন বাচ্চু ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক মাহমুদুল হাসান সোহাগ।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ