বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক :
দেশের ৫৭ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে ৪০টিই ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা চালু করেছে। দিন দিন অনলাইনে লেনদেনের এ ব্যাংকিং সেবা জনপ্রিয় হলেও গ্রাহক সংখ্যা ২০ লাখেরও কম। বাংলাদেশ ব্যাংকও এ সেবা আরও বড় পরিসরে চালু করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। আন্তঃব্যাংক লেনদেনের নেটওয়ার্ক বাড়ানো হচ্ছে। এতে রিয়েল টাইমে লেনদেনের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
প্রতি মাসেই নতুন ব্যাংক এ নেটওয়ার্কে যোগ দিচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান বলছে, দেশে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালাচ্ছেন এমন গ্রাহকের সংখ্যা গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত ছিল ১৭ লাখ। এর মধ্যে ৯০ শতাংশই বিদেশি ব্যাংকের গ্রাহক। ওই সময় পর্যন্ত স্থানীয় ব্যাংকের মধ্যে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ও ব্র্যাক ব্যাংকের ইন্টারনেট সেবা গ্রহণকারী গ্রাহকের সংখ্যা বেশি ছিল।
এসব গ্রাহকের মধ্যে মাত্র ছয় লাখ ৬১ হাজার অ্যাকাউন্ট থেকে অক্টোবর মাসে লেনদেন হয়েছে। তবে লেনদেনের পরিমাণ অনেক বেশি- দুই হাজার তিনশ কোটি টাকা। সাম্প্রতিক সময়ে অবশ্য সিটি ব্যাংক ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ে সেরা সাফল্য দেখিয়েছে। তাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা নেয়া গ্রাহকের সংখ্যা এখন সবচেয়ে বেশি আড়াই লাখ। ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড (ইবিএল) মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে গ্রাহকদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে। তাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের গ্রাহক সংখ্যা ৬০ হাজার। মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা নেয়া গ্রাহক আছে ২৫ হাজার। ২০০৯ সালে ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ে প্রবেশ করে ব্র্যাক ব্যাংক। পরিপূর্ণভাবে এ সেবা চালু করে ২০১২ সালে। আর এখন এ সেবা নিচ্ছেন ৯০ হাজার অ্যাকাউন্টের গ্রাহক।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবার জন্য প্রতিজন গ্রাহকের কাছ থেকে ব্যাংকগুলো মাসে দু’শ থেকে তিনশ’ টাকা নিয়ে থাকে। তবে নানা প্রচেষ্টার পরও গ্রাহকরা ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের প্রতি তেমন একটা ঝুঁকছে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে বেসরকারি এক ব্যাংকের ইন্টারনেট ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান জানিয়েছেন, ব্যাংকভেদে ১৫ থেকে ২৫ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যাংকিং হচ্ছে মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে। মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে গ্রাহকরা হিসাব খোলা, পরিবর্তন বা স্থানান্তর, বিল পরিশোধ, মোবাইল টপআপ, এটিএম ও শাখার লোকেশন, মিনি ও বিস্তারিত স্টেটমেন্ট, লেনদেনের সার্বিক বিবরণী, ঋণসংক্রান্ত তথ্য, ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধ, ব্যালান্স, বকেয়া দেনার হিসাব ও পরিশোধ সীমা ইত্যাদি জানতে পারছেন।
ইন্টারনেট ব্যাংকিং ব্যবহারকারীরা তাদের ইউজার আইডি, পাসওয়ার্ড ও ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে অ্যাপস ব্যবহার করছেন। একেক ব্যাংক একেক নামে অ্যাপস চালু করেছে। যেমন স্মার্ট ওপেনার স্কাই ব্যাংকিং, আইসার, আইস্মার্ট, আলফা ইত্যাদি নামে রয়েছে এসব মোবাইল অ্যাপস। গ্রাহকরা তাদের স্মার্টফোনের মাধ্যমে এসব অ্যাপস ব্যবহার করতে পারছেন। গুগল প্লে স্টোরে এ মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করা যায়। অনেক ব্যাংকের সঙ্গে মিলে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আবার অ্যাপভিত্তিক লেনদেনের প্লাটফর্ম চালু করেছে। এর মধ্যে একটি বেসরকারি কোম্পানি চালু করেছে আইপে নামের একটি লেনদেনের প্লাটফর্ম। এর মাধ্যমে মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করেই ব্যাংকিংসহ ক্যাশ আউট, ক্যাশ ইন এবং যে কোনো ধরনের কেনাকাটা করা যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি