২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৩:১৪

‘কোল্ড ইনজুরিতে’ সিরাজগঞ্জে রোপা আমন ও চারা নষ্ট

 সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:

ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়ে ধানের চারা ও আগাম রোপনকৃত বিস্তৃর্ন এলাকার ধানের চারাগুলো হলদে বিবর্ণ হয়ে নষ্ট গেছে। এতে অনেক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। অন্যদিকে, সংকটের কারণে ধানের চারার দামও বৃদ্ধি পাবার আশঙ্কায় কৃষকেরা। এজন্য সরকারের সহায়তা দাবি করছেন কৃষকেরা।

জানা যায়, সিরাজগঞ্জের কৃষকেরা ইরি-বোরো ধান চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করতে শুরু করেছে। তবে ঘন কুয়াশা আর তীব্র শীতে বোরো ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে চারাগুলো হলদে বিবর্ণ হয়ে পড়েছে। এতে চারা সংকটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আবার অনেক কৃষক আগাম বোরো ধানের চারা রোপন করে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। নষ্ট হয়ে যাওয়ায় চারাগুলো তুলে ফেলছে। তবে চারার দাম অধিক হওয়ায় অনেক কৃষক চারা কিনতে হিমশিম খাচ্ছে। এতে চলতি বছর ধানের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।  বহুলী গ্রামের কৃষক মজিবর রহমান জানান, দেড় ডেসিমাল জমিতে বীজতলা তৈরি করেছিলাম। প্রচন্ড শীতের কারণে বীজতলার সব চারা হলদে রং ধারন করে নষ্ট হয়ে গেছে। এখন বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে অতিরিক্ত দামে চারা কিনতে হবে। এতে ধান আবাদ করতে খরচও বেশি পড়বে।  তারমতো জেলার অধিকাংশ কৃষকের বীজতলার চারা নষ্ট হয়ে গেছে।

তাড়াশের উলিপুর গ্রামের আব্দুল মান্নান জানান, ৮-১০ হাজার টাকা ব্যয় করে ছয় বিঘা জমিতে আগাম চারা রোপন করেছিলাম। শীতের কারণে সব চারা নষ্ট হয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে রোপনকৃত চারা তুলে ফেলা হচ্ছে। নতুন করে চারা রোপন করতে হবে। কিন্তু টাকার অভাবে চারা কিনে রোপন করতে পারছি না। একই গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, দিনমজুরি করে বহু কষ্টে তিনবিঘা জমিতে চারা রোপন করেছিলাম। সব নষ্ট হয়ে গেছে। এখন চারা কেনার মতো টাকা নেই। বাধ্য হয়ে জমি অনাবাদি রাখতে হচ্ছে। এ অবস্থায় সরকার যদি একটু সহায়তা করে তবে ক্ষতিগ্রস্ত এসব কৃষক ধান রোপন করতে পারবে।  না হলে অনেক জমি অনাবাদি থাকার আশঙ্কা রয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আরশেদ আলী জানান, কোল্ড ইনজুরির কারণে চারার যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তার চেয়ে বেশি পরিমাণ জমিতে চারা আবাদ হয়েছে। এ কারণে চারার সংকট দেখা দিবে না। আর যে সমস্ত কৃষক আগাম বোরো ধানের চারা লাগিয়েছিল সেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। এজন্য তাদেরকে নতুন করে চারা রোপনের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। আবহাওয়া উন্নতি হবার পর কৃষকদের চারা রোপন এবং বীজ তলাগুলোকে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তিনি জানান, এ বছর জেলায় ১লক্ষ ৩৯ হাজার হেক্টর জমিতে ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি 

প্রকাশ :জানুয়ারি ২৩, ২০১৮ ৩:৫৯ অপরাহ্ণ