স্পোর্টস ডেস্ক:
কথা-বার্তা প্রায় চূড়ান্ত হওয়ার পর স্বয়ং হোমে মরিনহো সম্ভাব্য চুক্তির বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। ইঙ্গিত দিয়েছিলেন আর্সেন ওয়েঙ্গারও। মরিনহো-ওয়েঙ্গারের ইঙ্গিত মিথ্যা হতে পারে! মিথ্যা হলোও না। মরিনহো-ওয়েঙ্গারের ইঙ্গিতকে সত্য প্রমাণ করে ঠিকই আর্সেনাল ছেড়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দিলেন অ্যালেক্সিস সানচেজ। তবে নগদ টাকার ভিত্তিতে নয়, আর্সেনাল থেকে চিলিয়ান এই ফরোয়ার্ডকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড দলে ভেড়ালো অদলবদল চুক্তিতে।
মানে খেলোয়াড়ের বিনিময়ে খেলোয়াড় প্রদানের চুক্তিতে। আর্সেনাল থেকে ইউনাইটেডে গেলেন সানচেজ। বিনিময়ে মরিনহোর ইউনাইটেড ওয়েঙ্গারের আর্সেনালকে দিচ্ছে হেনরিখ মখিতারিয়ানকে। সানচেজের বিনিময়ে আর্সেনাল শুধু আর্মেনিয়ান এই মিডফিল্ডার মখিতারিয়ানকেই পাচ্ছে, নাকি তার সঙ্গে কিছু নগদ টাকাও পাবে, সে ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ইংল্যান্ডের গণমাধ্যমের দাবি সত্য হলে, পল পগবাকে টপকে সানচেজই হচ্ছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া ফুটবলার।
ইংলিশ গণমাধ্যমের দাবি, ইউনাইটেডে ২৯ বছর বয়সী সানচেজের সাপ্তাহিক বেতন হবে প্রায় ৫ লাখ পাউন্ড বা ৫ লাখ ৭০ হাজার ইউরো। এই হিসেবে বছরে তার বেতন ২৬ মিলিয়ন পাউন্ড বা ২৯.৬৫ মিলিয়ন ইউরো। বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩০১ কোটি ৬৩ লাখ ৬৬ হাজার টাকারও বেশি! এতোদিন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া ফুটবলার ছিলেন পল পগবা। ২০১৬ সালে জুভেন্টাস ছেড়ে ইউনাইটেডে যোগ দেওয়া ফরাসি মিডফিল্ডার বার্ষিক পারিশ্রমিক পান ১৭.৫ মিলিয়ন ইউরো। সানচেজের বেতন হবে তার চেয়েও ১২.১৫ মিলিয়ন ইউরো বেশি।
শুধু ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া ফুটবলারই নন। অঙ্কটা ঠিক থাকলে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো, এজেকুয়েল লাভেজ্জি, অস্কারদের ছাপিয়ে সানচেজ হয়ে যাবেন বিশ্বের চতুর্থ সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া ফুটবলার। বেতন প্রাপ্তিতে তার চেয়ে এগিয়ে থাকবেন শুধু লিওনেল মেসি, কার্লোস তেভেজ এবং নেইমার। এক অর্থে কার্লোস তেভেজও বাদ। কারণ, এই আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড বার্ষিক ৩৮ মিলিয়ন ইউরো বেতন পেতেন চীনা ক্লাব সাংহাই শেনহুয়ায় থাকতে। যাকে তাকে বানিয়েছিল বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া ফুটবলার।
কিন্তু এ মাসেই সাংহাই শেনহুয়া ছেড়ে তেভেজ নাম লিখিয়েছেন আর্জেন্টাইন ক্লাব বোকা জুনিয়র্সে। আর্জেন্টাইন ক্লাবটিতে ঠিক কত টাকা বেতন পাবেন, জানা যায়নি। তবে অঙ্কটা যতই হোক, তা দিয়ে তেভেজ সর্বোচ্চ বেতনধারীদের দুই নম্বরে থাকা দূরের কথা, শীর্ষ ৫০০-তেই থাকতে পারবেন বলে মনে হয় না। তেভেজকে হিসাব থেকে বাদ দিলে তাই সানচেজ হয়ে যাবেন তৃতীয় সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া ফুটবলার। তবে উচ্চ বেতনের বিষয়টি নয়, ইউনাইটেডের মতো বিশ্বসেরা ক্লাবে যোগ দিতে পেরেই খুশি সানচেজ।
চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করে ইউনাইটেডের একজন হয়ে যাওয়ার পরই তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় বার্সেলোনার সাবেক ফরোয়ার্ড বলেছেন, ‘বিশ্ব সেরা ক্লাবে যোগ দিতে পেরে আমি রোমঞ্চিত। আর্সেনালে আমি অসাধারণ সাড়ে তিনটা বছর কাটিয়েছি। গ্রেট ওই ক্লাব এবং সমর্থকদের জন্য দারুণ কিছু মুহূর্তই বয়ে এনেছি। এখন সুযোগ এসেছে ওল্ড ট্রাফোর্ডের মতো ঐতিহাসিক স্টেডিয়ামে খেলার এবং হোসে মরিনহোর মতো একজন বিশ্বসেরা কোচের সঙ্গে কাজ করার। যা সত্যিই আমার জন্য হবে বিশেষ পাওয়া। প্রথম চিলিয়ান হিসেবে ইউনাইটেডের মতো ক্লাবে যোগ দিয়ে আমি গর্বিত, অভিভূত।’
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি