২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১০:৩২

ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ স্বাস্থ্য খাতে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বর্তমানে দেশের স্বাস্থ্য খাতের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ। ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর নিম্নমানের নকল ও ভেজাল ওষুধ উৎপাদন এবং বিক্রির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযান পরিচালনা করেছে। গত এক বছরে নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রয়ের দায়ে মামলা হয়েছে দুই হাজারের বেশি। কিন্তু কমেনি ভেজাল বা নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদনকারী ও বিক্রেতাদের অপতৎপরতা।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে এ ধরনের ওষুধ উৎপাদনকারী ও বিক্রেতাদের শাস্তির মুখোমুখি করা হলেও তা পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়ার উদ্যোগ সেভাবে দৃশ্যমান নয় বলেই বিষয়টিকে প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না বলে অভিমত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর সূত্রমতে, গত বছর সারা দেশে নিম্নমানের ও ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রির দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে মামলা হয়েছে ২ হাজার ১৬৯টি। এর বাইরে নিম্নমানের ওষুধের উৎপাদন ও বিপণনের অভিযোগে ড্রাগ কোর্টে ৪১টি ও ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে ৬৪টি মামলা করা হয়েছে।

এ সময়ে নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদন ও বিপণনের অভিযোগে জরিমানা আদায় হয়েছে ৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকারও বেশি। নিম্নমানের ও ভেজাল ওষুধ জব্দ ও ধ্বংস করা হয়েছে ১৭ কোটি টাকার। বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে ৫৮ জন আসামিকে। সিলগালা করে দেয়া হয়েছে ৩৭টি প্রতিষ্ঠান।

৮৬টি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিসেস (জিএমপি) গাইডলাইন যথাযথভাবে অনুসরণ না করায় এবং ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদনের দায়ে বিভিন্ন সময় সাময়িক বাতিল করা হয়েছে। অন্যদিকে লাইসেন্স চিরতরে বাতিল হয়েছে ১৮টি প্রতিষ্ঠানের।

তবে স্বাস্থ্য খাতে ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধের দৌরাত্ম্য বন্ধে এটুকু যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের ভাষ্য, এ ধরনের অনেক ওষুধ উৎপাদনকারী ও বিক্রেতাকে শাস্তির মুখোমুখি করা হয়েছে সত্যি। তবে তা পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়ার উদ্যোগ সেভাবে দৃশ্যমান নয়।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ফার্মাসিউটিক্যাল সোসাইটির (বিপিএস) সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান হাসান কাউছার জানান, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধের বিরুদ্ধে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর তাদের তদারকি বাড়িয়েছে। গত কয়েক বছরে মামলার পরিমাণও উল্লেখযোগ্য। মামলা দায়েরের পাশাপাশি শাস্তি দেয়ার বিষয়টি দ্রুত দৃশ্যমান হলে সবার জন্য বার্তা দেয়াটা আরও সহজ হতো।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে নিম্নমানের ও নকল বা ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাত বন্ধে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে উৎপাদনকারী ও বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর কঠোর নজরদারি চালাচ্ছে অধিদফতর।

দৈনিক দেশজনতা/এমএইচ

প্রকাশ :মে ২২, ২০১৭ ২:৪৯ অপরাহ্ণ