নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের উত্তরাঞ্চলের তিন জেলার তীব্র শীত ও ঠান্ডাজনিত রোগে গত চারদিনে শিশুসহ ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজশাহী, কুড়িগ্রাম ও ঠাকুরগাঁও জেলায় অব্যাহত শৈত্য প্রবাহ এবং অস্বাভাবিকভাবে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শামছুল হক জানান, গত ৬ জানুয়ারি শনিবার থেকে হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগে চার শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আর ওই চার শিশুই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিল।
নিহত শিশুরা হলো- রাজশাহী পুঠিয়া উপজেলার আবু হানিফের চারদিন বয়সী কন্যা শিশু, পাবনার চাটমোহরে উপজেলার শামুছুল ইসলামের দেড় মাস বয়সী ছেলে পিয়াস, নাটোর জেলার শাহজাহানের তিনদিন বয়সী কন্যা শিশু এবং নওগাঁর সুশীল প্রামাণিকের দুইদিন বয়সী শিশু সন্তান।
ডা. শামছুল হক জানান, গত ৩ জানুয়ারি বুধবার থেকে ৭ জানুয়ারি রোববার বিকেল পর্যন্ত হাসপাতালে ২৭১ জন ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন।
কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১ জানুয়ারি থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত এই হাসপাতালে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে ভর্তি হয়ে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরা হলেন, সাবিহা (৪ দিন), আমেনা (৬৫), জাহানারা (৩০), খাদিজা (১ দিন), মিম (দেড় বছর), এমরাত জাহান (১৫ দিন), নয়নমনি (১ দিন), জিতিয়া (৬০ দিন), মিরাজ (৫ দিন), মাজেদা (১ দিন) ও শিউলী।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. জাহাঙ্গীর আলম জানান, এ ছাড়াও ঠান্ডাজনিত রোগের কারণে বিশ্বদেব রায় (৩০), আনোয়ার হোসেন ( ৫৫) ও দুলালি (২১) নামে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
জাহাঙ্গীর আলম আরও জানান, সোমবার পর্যন্ত ১৮০ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। শীতের কারণে শিশু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া এবং ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
ঠাকুরগাঁওয়ের সিভিল সার্জন, আবু মোহাম্মদ খাইরুল কবির জানান, ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে সদর উপজেলার মোবারক আলীর স্ত্রী জোহরা (৭০) এবং গোলপাড়ার দবিরুল ইসলামের স্ত্রী (৯০) মারা গেছে।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী এবং কুড়িগ্রামে বর্তমানে এ বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে। সোমবার সকালে রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫.৩ এবং কুুড়িগ্রামে ছিল ৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এছাড়া পঞ্চগড়ে সোমবার দেশের ৫০ বছরের ইতিহাসে সর্বনিম্ন তাপমাত্র ২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ