স্পোর্টস ডেস্ক:
পাকিস্তানের হয়ে এখনো ওয়ানডেতে হারের অভিজ্ঞতা হয়নি তার। খেলে ফেলেছেন ৯টি ম্যাচ। গড় ৪৪। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পা রেখেই সাফল্যের চূড়ায় উঠে যাওয়ার পেছনে ব্রেন্ডন ম্যাককালামের ব্যাটিংকে প্রেরণা মানাকেও কৃতিত্ব দেন। ভয়ডরহীন সেই ফখর জামান তার আদর্শ ম্যাককালামের দেশে শুরুটাও করলেন দারুণ। নিউজিল্যান্ডের পিচকে ঘরের উইকেটের মতো বানিয়ে দুর্ধর্ষ এক সেঞ্চুরি বুধবার করেছেন ফখর। নেলসনের ম্যাচটিতে সেঞ্চুরি পেয়েছেন আজহার আলিও। শরিবার ওয়েলিংটনে শুরু প্রথম ওয়ানডের আগে এটি ছিল একমাত্র ওয়ার্ম আপ ম্যাচ। আর তাতে ফখর-আজহার বীরত্বে নিউজিল্যান্ড একাদশকে ১২০ রানে হারিয়ে দিয়েছে অতিথি পাকিস্তান।
ফখর এই ম্যাচে ৮৪ বলে ১০৬ রানের মারমার কাটকাট ইনিংস খেলে অবসরে গেছেন। ১০৪ রান করে অবসর নিয়েছেন আজহার। তাতে ৯ উইকেটে ৩৪১ রানের বড় সংগ্রহই গড়ে গত বছর প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতা পাকিস্তান। যেখানে সেরা ব্যাটসম্যানের পুরস্কারটি ছিল ওই আসরের আবিষ্কার ফখরেরই। নিউজিল্যান্ড একাদশে ছিল তা তাদের টি-টুয়েন্টি সুপার স্ম্যাশের কোনো খেলোয়াড়। তবে দলটা একেবারে খারাপও ছিল না। কিন্তু স্যাক্সটন ওভালে সেই দলকে ৪৭.১ ওভারে ২২১ রানে অল আউট করে দেন পাকিস্তানের দুর্দান্ত বোলাররা।
সফরকারীরা কিন্তু সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নামার আগের প্রস্তুতি ম্যাচে সেরা একাদশই মাঠে নামিয়েছিল। ৫০ ওভারে ব্যাটিংয়ে তাদের চ্যাম্পিয়নের মতোই লেগেছে। ৫ ম্যাচের সিরিজে স্বাগতিক কিউইদের চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে তারা, এমন ব্যাটিং-বোলিং স্পষ্ট ছিল। আর তা এমন সময় যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল টেস্ট, ওয়ানডের পর টি-টুয়েন্টিতেও রীতিমতো খাবি খেয়ে গেল ওই মাটিতে। ফখর এই ম্যাচে তার ইনিংস সাজিয়েছিলেন ১২টি চার ও ৩টি ছক্কায়। তার পার্টনার ওপেনার আজহারের সাথে ২৯ ওভারে ২০৬ রানের জুটি গড়ে দিয়ে গেছেন দলকে। ২৭ বছরের এই ফখরের আন্তর্জাতিক অভিষেক গত জুনেই। ইংল্যান্ডে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। সেখানে ওভালের ফাইনালে তিনি চিরশত্রু ভারতের বিপক্ষে ১০৬ বলে ১১৪ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলেছিলেন। পাকিস্তানের টানা ৯ জয়ের প্রতিটি ওয়ানডে খেলেছেন ফখর। হাসান আলীও যে ব্যাট করতে পারেন তা দেখা গেল আরেকবার। মাত্র ১৫ বলেই ৩৬ রান করেছেন।
পাকিস্তান দল উসমান খান, জুনাইদ খান ও ইমাদ ওয়াসিমকে পায়নি ইনজুরির কারণে। তারপরও তাদের বোলিং ভাণ্ডারে অস্ত্রের অভাব নেই! টাইট লাইনে বোলিং করেছে দলটি। ফিল্ডাররাও ছুটেছেন। ঝাঁপিয়েছেন। নিউজিল্যান্ড একাদশের জন্য সব বিভাগেই বাগাবাড়ি ভালো ছিল পাকিস্তান দল। মাইকেল ডেভিডসন সর্বোচ্চ ৫৪ রান করতে পেরেছেন ৮১ বলে। বোল্ড হয়েছেন হাসানের বলে। ফাহিম আশরাফও ভালো করেছেন। তবে ১৯ বছরের লেগ স্পিনার শাদাব খান ছিলেন সবার চেয়ে আলাদা। বিগ ব্যাশে ঝড় তুলে পাশের দেশ নিউজিল্যান্ডে যোগ দিয়েছেন জাতীয় দলের সাথে। তেমন টার্ন না পেলেও বলের ওপর নিয়ন্ত্রণে ছিলেন চমৎকার। ফলও পেয়েছেন। ৯.১ ওভার বল করে ৫২ রানে ৪ উইকেট তার। ম্যাচের সেরা বোলিং তার। ফাহিম নিয়েছেন ২ উইকেট। সব মিলিয়ে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের চ্যালেঞ্জ নেওয়ার আগে পাকিস্তানের আত্মবিশ্বাসটা বেড়ে গেল চমৎকারভাবে।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি