নিজস্ব প্রতিবেদক:
গডফাদার, ব্যবসায়ীসহ মাদকসংশ্লিষ্টদের প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার মতো কঠোর শাস্তির উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান। মঙ্গলবার মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তবে তিনি এ মন্তব্য করেন। মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এই শাস্তির উদ্যোগটিকে অনেকে হয়তো সমালোচনা করতে পারেন। কিন্তু দলমত নির্বিশেষে মাদক সমস্যাকে যদি এক নম্বর সমস্যা বলে মনে করি, তা হলে এ উদ্যোগটি অবশ্যই নিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘রাজনীতিবিদ, তার ছেলে, জজসাহেব, উকিল বা সমাজের যে কেউ যত প্রভাবশালী হোক না কেন, মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকলে তার শাস্তিটা হতে হবে শুটআউটের মতো কঠিন।’ তিনি মাদক নির্মূলে একটি রূপরেখাও দেন। মন্ত্রী বলেন, ‘আমি যদি প্রাথমিকের মন্ত্রী না হয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হতাম, তবে এ উদ্যোগটি অবশ্যই-অবশ্যই নিতাম। তবে তার আগে জাতীয় সংসদে ও বিভিন্ন ফোরামে আলোচনার আয়োজন করা খুব দরকার। এ আলোচনা তিন মাস ধরে চলতে পারে। এর পরেই অ্যাকশন শুরু। এ ছাড়া মাদকের সর্বগ্রাসী ভয়াবহতা থেকে আমাদের মুক্তির উপায় নেই।’
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এ অধিদফতরের নাম মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। এখন নিয়ন্ত্রণ যারা করবে, সেখানেই যদি ভূত থাকে, তবে নিয়ন্ত্রণটা করবে কে? এ কারণে এখানকার ভূতও তাড়াতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যারা মাদক ব্যবসা করেন তাদের মানসিকতা সুদখোরের মতো। এদের সামনে ইমানি গল্প করে লাভ নেই।’ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘মাদক গডফাদারদের শক্তির কাছে এই অধিদফতর একেবারে নস্যি। এরা তাদের কাছেও যেতে পারছে না। সারা দেশে মাত্র ১৭০০ জনবল দিয়ে অধিদফতর চলছে। এটি দিয়ে সর্বগ্রাসী মাদক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ কীভাবে সম্ভব?’ সচিব বলেন, ‘বর্তমান সরকার দেশের মাদক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলে আন্তরিকভাবে এগিয়ে এসেছে। অধিদফতর জনবল কাঠামো আরও আট হাজারে উন্নীত করা হচ্ছে। একই সঙ্গে চিকিৎসা, যানবাহন ও ক্ষুদ্রাস্ত্রের সরবরাহ নিয়েও আলোচনা চলছে।’
বিশেষ অতিথি কারা অধিদফতরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার ইফতেখার উদ্দিন বলেন, ‘কারাগারে আটক ৭০ হাজার বন্দির মধ্যে ২৩ হাজার বন্দি মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। শতাংশের হিসাবে প্রায় ৩০ শতাংশ। বোঝাই যাচ্ছে পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ।’ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের সদস্য ডা. অরুপ রতন চৌধুরী বলেন, ‘দেশে এখন প্রায় ৭০ লাখ মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি রয়েছেন।’ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক জামাল উদ্দিন আহমেদ।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি