নিজস্ব প্রতিবেদক:
আইন মন্ত্রণালয়ের অসহযোগিতার কারণে বিচার বিভাগ অকেজো হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা বন্ধে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিলের শুনানিতে তিনি এই মন্তব্য করেন।
রবিবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ সাত বিচারপতির বেঞ্চে এই আপিল শুনানি হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। রীটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন হাসান এম এস আজিম।
শুনানির শুরুতে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন উপস্থাপন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
এসময় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘দরখাস্তে কী দেখাতে চেয়েছেন?’।
জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘মোবাইল কোর্ট চারদিন বন্ধ ছিলো। এর মধ্যে দিনাজপুরে ৩৭টি বাল্য বিয়ে হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আপনি কি প্যারালাল কোর্ট চান?’
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘না। ইমিডিয়েটলি ইফেক্টের জন্য। কোনো অপরাধের ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থার জন্য এটা।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘মোবাইল কোর্ট করে শাস্তি দিবেন। আবার তার বিচার করবেন। এটা কোন বিধানে করবেন?’।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘পুরো মামলাটির শুনানি গ্রহণ করেন।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা প্রকাশ্যে আদালতে অনেক কিছু বলি। এটাতে অনেক অপব্যাখ্যা হচ্ছে। বিচার বিভাগ সরকারের বিপক্ষে নয়। বিচার বিভাগ সব সময় দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে রায় দেয়। আইন মন্ত্রণালয়ের অসহযোগিতার কারণে বিচার বিভাগ অকেজো হয়ে যাচ্ছে। এটা আপনি সরকারকে জানাবেন সামাধানের জন্য।’
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘এভাবে বললে হবে? এটা কি সলভ (সমাধান) হবে? এগুলো বললে সংবাদপত্রে বড় বড় অক্ষরে হেডলাইন হবে।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘তাহলে কীভাবে সমাধান হবে? আপনাকে জানিয়ে দিলাম সমাধান করার জন্য।’
এরপর আদালত আগামী ২ জুলাই পর্যন্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা অসাংবিধানিক ঘোষণা করে দেয়া রায় স্থগিত করেন।
গত ১১ মে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার বিধান অসাংবিধানিক ঘোষণা করে রায় দেয় হাইকোর্ট। এ রায়ের ফলে ২০০৯ সালের ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনের আওতায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা বন্ধ হয়ে যায়।’
দৈনিক দেশজনতা/এমএম