২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৯:০৫

চলন বিল এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে সরিষা চাষে ধস

নিজস্ব প্রতিবেদক:

অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খনন ও খাল-জলাশয়ের মুখ ভরাটের কারণে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ থাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে খাদ্য-শস্য ভাণ্ডার চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জের তাড়াশ ও সলঙ্গায় কয়েক হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি হয়ে রয়েছে। এ বছর রবি ফসল সরিষা চাষ করতে না পারায় কৃষকেরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। তাই দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য খাল-জলাশয় সচল রাখার দাবি জানিয়েছেন কৃষকেরা।

সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, শস্যভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জের তাড়াশ ও সলঙ্গা। কিন্তু ফসলের ন্যায্য দাম না পাওয়ার অজুহাতে কিছু কিছু কৃষক কৃষি জমি কেটে অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খনন করেছে। অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি খাল-জলাশয়-নয়ন জুলি দখল করে বসতভিটা নির্মাণ করেছে।

এছাড়াও উজানে নাটোরের সিংড়া ও ভাটিতে পাবনার চাটমোহরে সুতিজাল দিয়ে পানি প্রবাহের গতিরোধ করা হচ্ছে।
এ অবস্থায় পরপর দুবারের বন্যা ও অতিবৃষ্টি হওয়ায় পানি সময়মত নিষ্কাশন হতে না পারায় তাড়াশ ও সলঙ্গার কয়েক হাজার হেক্টর জমি জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। এ কারণে জমিতে রবিশস্য সরিষা আবাদ করতে না পারায় কৃষকেরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে।

সামনে ধান চাষাবাদ, জমিতে এখনো পানি থাকায় শঙ্কিত রয়েছে কৃষকেরা। চাষাবাদ ক্ষতিরোধে পানি নিষ্কাশনে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এমনটা প্রত্যাশা করছেন ওই এলাকার কৃষকরা। তাড়াশের বিরৌহালী ও ভাতাস গ্রামের কৃষক আব্দুস ছামাদ ও আশরাফ আলী বলেন, এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি খাল-জলাশয়-নয়ন জুলি দখল করে বসতভিটা নির্মাণ করেছে। এছাড়াও সুতিজাল দিয়ে পানি প্রবাহের গতিরোধ করা হচ্ছে। যার কারণে পানি আটকে রয়েছে। এ কারণে এবার সরিষা আবাদ করতে পারি নাই। এই পানি নিষ্কাশন না হলে আগামী মৌসুমে চাষ করা সম্ভব হবে না।

পংরৌহালী ও দক্ষিণ শ্যামপুর গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম ও মকবুল প্রাং বলেন, দ্রুত জলাশয় ও খাল খনন করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে আগামীতে আরো ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের দাবি জানান তিনি। হামকুড়িয়া গ্রামের কৃষক তজির মৃধা বলেন, গত দু’বারের বন্যা ও অতিবৃষ্টি হওয়ায় পানি সময়মত নিষ্কাশন হতে না পেরে জমি জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। এ কারণে জমিতে রবিশস্য সরিষা আবাদ করতে পারি নাই। তিনি আরো বলেন, চার ছেলেমেয়ে নিয়ে আমার সংসার। জমি চাষের উপরই নির্ভরশীল। জমিতে পানি থাকায় চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়েছি। এবার কিভাবে চলবো।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, এবার সরিষা চাষে সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমি টার্গেট ছিল। কিন্তু অপরিকল্পিত পুকুর খনন, খাল-জলাশয় ভরাট ও সুতিজাল দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধের কারণে মাত্র ২০০০ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হচ্ছে। তিনি এই ভয়াবহ ক্ষতির কথা স্বীকার বলেন, কৃষকদের ক্ষতিরোধে সমস্যাগুলো সমাধান হওয়া জরুরি।

দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ

প্রকাশ :ডিসেম্বর ২৮, ২০১৭ ৩:৩৫ অপরাহ্ণ