নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজনৈতিক প্রভাবে খাটিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করে দুইদিন পর পরীক্ষা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে। তারা হলেন আলোচিত দিয়াজ হত্যা মামলায় অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুল মালেক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু তোরাব পরশ। নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা অনুষদের অধীনে শারীরিক শিক্ষা বিভাগের এক বছর মেয়াদী ব্যাচেলর অব ফিজিক্যাল এডুকেশনে (বি.পি.এড) ভর্তির জন্য লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন তারা।
ভর্তি পরীক্ষার নির্ধারিত দিন অর্থাৎ ১৯ ডিসেম্বর অবরোধের ভোগান্তির কথা বলা হলেও নিজেরাই অবরোধে সম্পৃক্ত থেকে পরীক্ষা দেওয়া থেকে বিরত থেকেছেন বলে খোঁজ নিয়ে জানা যায়। শিক্ষা অনুষদ সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা অনুষদের অধীনে শারীরিক শিক্ষা বিভাগের এক বছর মেয়াদী ব্যাচেলর অব ফিজিক্যাল এডুকেশনের (বি.পি.এড) লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওইদিন প্রয়াত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ হত্যার মামলার আসামী আনোয়ার হোসেনের মুক্তির দাবিতে অন্য আসামীরা শাটল ট্রেন ও শিক্ষকদের বাস চলাচলে বাঁধা প্রয়োগ করে। এতে করে কার্যত অচল হয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম।
পরীক্ষায় ২৩ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করলেও অবরোধের কারণে তিন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করতে পারেনি। পরে ওই শিক্ষার্থীদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে দুদিন পর নতুন করে পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হয়। ২১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার ভিন্ন প্রশ্নে ওই তিন শিক্ষার্থী পরীক্ষা অংশগ্রহণ করেন। অন্য আরেক শিক্ষার্থী হলেন তৌফিকুল ইসলাম। তিনি অবরোধে পরিবহন ভোগান্তির কারণে নির্ধারিত দিনে পরীক্ষা দিতে পারেনি। এদিকে নিজেরাই অবরোধে সম্পৃক্ত থেকে কেবল রাজনৈতিক প্রভাবে পরীক্ষা দিয়েছেন বলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেক শিক্ষককে এটি নিয়ে প্রকাশ্যে সমলোচনা করতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সচিব এস এম আকবর হোসাইন বলেন, “পরীক্ষায় ২৩ জনের মধ্যে ৩ শিক্ষার্থী মুঠোফোনে যোগাযোগ করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারছে না বলে জানায়। শিক্ষার্থীদের সার্বিক বিষয়ে বিবেচনা করে আমরা নতুন তারিখে পরীক্ষা নেই। এদের মধ্যে কেউ রাজনীতির সাথে জড়িত কিনা তা আমার জানা নেই।”
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড.ইফতেখার উদ্দীন চৌধুরী বলেন-‘আসন সংখ্যা শূণ্য থাকা সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভর্তি পরীক্ষা নিতেই পারে। আর তাছাড়া বিপিএড কোর্সে আসন সংখ্যা ২৫। আবেদন করেছে ২৩ জন। তার মধ্যে ৩ জন ছাত্র অবরোধের কারণে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। যারা অংশ নিতে পারেনি তাদের লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা পরীক্ষা নিই। তার তাছড়া অভিযুক্ত দুই ছাত্রের বিরুদ্ধে আদালত থেকে কোন নির্দেশনা নেই কিংবা অভিযোগ এখনো প্রমানিত হয়নি। অতএব বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে করণীয় কিছু নেই।’
উল্লেখ্য আলোচিত দিয়াজ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত দশ আসামীর মধ্যে ১৮ তারিখ প্রক্টর আনোয়ার হোসেনকে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়। তিন অভিযুক্ত আলমগীর টিপু,আব্দুল মালেক ও আবু তোরাব পরশ ১১ ডিসেম্বর থেকে ৪২ দিন পর্যন্ত উচ্চ আদালতের অন্তবর্তীকালীন জামিনে আছেন। বাকিরা এখনো পলাতক।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ