বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক :
রায়ানের বয়স মাত্র ছয় বছর। কিন্তু এই বয়সেই সে ইউটিউবে ভিডিও পোস্ট করে কোটি কোটি টাকা আয় করছে। ‘রায়ান টয়েজ রিভিউ’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলের উপস্থাপক রায়ান।
এখন কোটি কোটি দর্শক নিয়মিত রায়ানের ভিডিওগুলো দেখলেও তার চ্যানেলের শুরুটা হয়েছিল খুব সাধারণ একটি ভিডিও দিয়ে। রায়ানের মা জানান, সে ইউটিউবে বিভিন্ন খেলনার রিভিউ চ্যানেলের ভিডিও দেখতে পছন্দ করত। এই করতে করতেই একদিন সে তার মাকে জিজ্ঞেস করে, ইউটিউবে সব বাচ্চার ভিডিও আছে তার কোনো ভিডিও নেই কেন। এরপরই রায়ানের বাবা-মা ঠিক করেন তারাও রায়ানের ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করবেন।
শুরুতে রায়ানের দর্শক সংখ্যা নেহাতই নগণ্য থাকলেও চার মাসের মাথায় রায়ানের একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়ে যায়। ওই ভিডিওতে ১০০টিরও বেশি খেলনা গাড়ি একসঙ্গে রিভিউ করে রায়ান। এখন পর্যন্ত ৮০ কোটিবারেরও বেশি দেখা হয়েছে রায়ানের ওই ভিডিওটি।
এখন পর্যন্ত রায়ানের চ্যানেলে সবচেয়ে বেশিবার দেখা হয়েছে ‘হিউজ এগস সারপ্রাইজ টয়েজ চ্যালেঞ্জ’ নামের একটি ভিডিও। ২০১৬ সালে প্রকাশ করা ওই ভিডিওটি দেখা হয়েছে ১,০০০ কোটিবারেরও বেশি।
রায়ানের আয় হয় ইউটিউব ভিডিওতে দেয়া বিজ্ঞাপন ও লিঙ্ক থেকে। প্রতিবার একটি বিজ্ঞাপন দেখা হলে সেটি থেকে রায়ান লাভ করে। রায়ানের সারল্যে ভরা ভিডিওগুলো বাচ্চারা ও তাদের বাবা-মায়েরা সমান পছন্দ করে। এ কারণে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের পণ্যের প্রচারণার জন্য রায়ানের চ্যানেল ব্যহার করতে ভীষণ আগ্রহী।
বিভিন্ন পণ্যের মূল্যায়ন বা রিভিউ করার সাইট টয়েজ, টটস,পেটস অ্যান্ড মোর-এর প্রধান নির্বাহী জিম সিলভার বলেন, ‘যদি কোনো পণ্যের ভিডিও এক কোটি বা দুই কোটিবার দেখা হয় এবং যদি ভিডিওতে দেখা যায় রায়ান খেলনাটি ভালোবাসে তাহলে অন্য বাচ্চারাও ওই খেলনাটি পছন্দ করে। খুচরা মার্কেটে এটি বিরাট প্রভাব ফেলে।’
রায়ানের মা জানান রায়ানের পড়ালেখার যেন ক্ষতি না হয় একারণে তার ছুটির দিনে ভিডিওগুলো নির্মাণ করেন তারা। সে যখন স্কুলে থাকে, তখন তারা ভিডিওগুলো এডিট করে আপলোড করেন।
বিশ্বের সব প্রান্তে রায়ানের ভক্ত রয়েছে। অনেক বাচ্চা ও তাদের বাবা-মা নিয়মিত রায়ানের ভিডিওগুলোর নিচে তাকে শুভেচ্ছা জানান। ইতিমধ্যেই অসংখ্য মানুষের জীবনের অংশ হয়ে গেছে রায়ান।
রায়ানের ভিডিওর খেলনাগুলো মধ্যে কোনটি কেনা আর কোনটি খেলনা নির্মাতাদের কাছ থেকে উপহার পাওয়া তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে রায়ানের বাবা দাবি করেন, তিনি ভিডিও তৈরির জন্য রায়ানকে খেলনা কিনেই দেন। ভিডিও তৈরি হয়ে গেলে প্রায় সব খেলনা এতিমখানা বা দরিদ্র শিশুদের দান করে দেয়া হয়।
খুদে কোটিপতির নিরাপত্তার স্বার্থে রায়ানের পুরো নাম ও পরিচয় খুব সতর্কতার সঙ্গে গোপন রাখা হয়েছে।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ