২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৯:৪৭

পেঁয়াজের দাম বাড়ছেই

নিজস্ব প্রতিবেদক :

কোনোভাবেই কমছে না পেঁয়াজের দাম। স্থিতিশীলও থাকছে না, বরং বাড়ছেই। বলতে গেলে প্রতিদিনই দাম বাড়ছে। গত সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম সর্বোচ্চ ৯০ টাকা থাকলেও এ সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ কেজি বিক্রি হচ্ছে (খুচরা) ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দাম বেড়েছে। যেখানে মাত্র তিনমাস আগেও দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল মাত্র ২৫ থেকে ৩০ টাকা।
বাজারে নতুন পেঁয়াজ উঠার মৌসুমে দাম এত বৃদ্ধিতে কপালে ভাঁজ ক্রেতাদের। দাম বাড়ার কারণ কী? খুচরা ব্যবসায়ীদের একটাই উত্তর, পাইকারি বাজারে দাম বেড়েছে। আর পাইকারি ব্যবসায়ী মানেই মুখে পুরনো বুলি- সংকট!

রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও শান্তিনগর বাজারের খবর নিয়ে জানা গেছে, দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১১৫-১২০ টাকায়। আর খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১২৫-১৩০ টাকা।

গত সপ্তাহে এ পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮৫-৯৫ টাকায়। অন্যদিকে ভারত থেকে আমদানি করা বড় আকারের পেঁয়াজ পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকায়। আর খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছে ৮৫-৯০ টাকায়।

বাজার দরের সঙ্গে সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ওয়েবসাইটের তথ্যে মিল নেই। তারপরও টিসিবির তথ্য বলছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ২৫ টাকা।

শুক্রবার প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ঢাকার বাজারে বিক্রি হয়েছে ১১০-১২০ টাকা, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৮৫-৯৫ টাকায়। এক মাসের ব্যবধানে ৩৯ শতাংশ বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দাম।

আর আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫-১০ টাকা। অথচ গত বছর একই সময়ে দেশি পেঁয়াজের কেজি প্রতি দাম ছিল ৩৫-৪০ টাকা এবং আমদানি করা পেঁয়াজের ২৫-৩০ টাকা।

কারওয়ান বাজারের এক পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ী বলেন, দেশি পেঁয়াজের মৌসুম শেষ। নতুন পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। মজুদ প্রায় ফুরিয়ে আসায় দাম বাড়ছে। আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ভারতে দাম বাড়ার কারণে।

কাঁচামাল আড়ত মালিক সমিতির এক নেতা বলেন, পেঁয়াজের দাম বাড়ার পেছনে ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফার লোভই দায়ী। ভারত থেকে আমদানি স্বাভাবিক থাকায় গত মাসে পেঁয়াজের দাম এক দফা বাড়ার পর আবার কমতে শুরু করে।

কিন্তু হঠাৎ করে ভারতে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পায়। এ সুযোগ নিতে অনেক আমদানিকারক কম দামে পেঁয়াজ কিনেও সেগুলো বাংলাদেশে আনছেন না। এ কারণে বাজারে কৃত্রিম সংকট দেখা দিয়েছে।

তিনি জানান, সরকারের নজরদারির কারণে এখন ওই পেঁয়াজ খালাস শুরু হয়েছে। ওই পেঁয়াজ বাজারে ঢুকলেই পেঁয়াজের দাম কমে যাবে। এজন্য ১-২ সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।

কৃষি পণ্য আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহাবুদ্দিন বলেন, চাহিদার তুলনায় পেঁয়াজের সংকট থাকায় দাম বাড়ছে। কয়েক সপ্তাহ আগে দাম বাড়লেও পরে আমদানি স্বাভাবিক হওয়ায় পেঁয়াজের দাম কমেছে। এবারও আমদানি বাড়লে দাম কমবে।

কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, কাঁচা মরিচ ছাড়া শীতের সবজির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ৫-১০ টাকা কমেছে। এক কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ১৪০-১৫০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

তবে ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, লাউ, করলা, ঢেঁড়স, বেগুন, শালগম, পাকা ও কাঁচা টমেটো সবকিছুর পর্যাপ্ত সরবরাহ আছে এবং দামও সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে।

প্রতি কেজি পাকা টমেটো ৭০-৮০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৩০-৪০ টাকা, শিম ৩০-৪০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৩০ থেকে ৫০ টাকা, শালগম কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকা, মুলা ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

কিছুটা দাম বেড়েছে বেগুনের। ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া বেগুনের দাম বেড়ে হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। আর আকার ভেদে ফুলকপি, বাঁধাকপি ২৫-৪০ টাকা প্রতি পিস বিক্রি হয়েছে।

গরুর মাংসের কেজি ৫০০ টাকা, খাসির মাংস ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৩৫ টাকা, লেয়ার মুরগির কেজি ১৬০-১৭০ টাকা, পাকিস্তানি কক মুরগির পিস আকারভেদে ১৫০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া প্রায় সব ধরনের মাছের দাম কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে। প্রতি কেজি রুই ৩৫০ টাকা, কাতল ৩০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৫০ টাকা, পাঙ্গাশ ১৪০ টাকা, সিলভার কার্প ১৫০ টাকা, শিং ৫০০ টাকা, চিংড়ি ৬০০ টাকা ও বোয়াল ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ

প্রকাশ :ডিসেম্বর ৯, ২০১৭ ৮:৩৯ অপরাহ্ণ