১১ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ইং | ২৬শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | সন্ধ্যা ৭:১৭

ব্যবহারকারীর কাছে উবারের ভূতুরে বিল

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ঢাকায় উবারের এক ব্যবহারকারী অভিযোগ করেছেন, সম্প্রতি তিনি উবারের সার্ভিস ব্যবহার করে ওই গাড়ির ড্রাইভারকে ভাড়াও পরিশোধ করেন। কিন্তু এর কিছুদিন পর উবার তার কাছে অ্যাপের মাধ্যমে ভাড়া দাবি করে। তাকে উবারের পক্ষ থেকে বলা হয় তিনি নাকি ড্রাইভারের ভাড়া মেটাননি। পরবর্তী সময়ে উবার ব্যবহারের সময় বকেয়া ভাড়া না মেটালে তাকে নিষিদ্ধ করা হবে।  এ নিয়ে তিনি ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

শওকত হোসাইন শান্ত নামের ওই উবার ব্যবহারকারী তার ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন, ‘কিছুদিন আগে বাসা থেকে উবার প্রিমিয়ামে অফিসে আসলাম। ভাড়া আসলো ৩৬৫ টাকা। ড্রাইভারকে ভাড়া পরিশোধ করলাম। বিল না দেওয়ারও কোন কারণ নেই। উবার তো আর আমার বাপের শালা বা আমার শালা না যে ফ্রি চড়তে দেবে!

দুদিন পরে আবার উবার কল দিতে গেলাম। অমনি এক বিস্ময় মেসেজ! আমি নাকি আমি আগের ৩৬৫ টাকা বিল খেলাপি। আগের রাইডে পে করিনি। সেই বিল পরিশোধ না করলে বা পরের রাইডের সঙ্গে পরিশোধের অঙ্গীকার না করলে আমার জন্য উবার নিষিদ্ধ!

সেই রাইডের ড্রাইভার জুয়েলকে কল দিলাম। ভদ্রলোক অতি বিনয়ী। বললেন, স্যার আমার মনে আছে। আপনি বিল দিয়েছেন, সঙ্গে বকশিসও দিয়েছেন। এটা সফটওয়্যারে সমস্যার জন্য হয়েছে। ভাবলাম, হবে হয়তো। সফটওয়্যার সব সময় সফট আচরণ নাও করতে পারে! নিজে চেষ্টা করলাম, বুজুর্গানদের দিয়ে চেষ্টা করালাম উবার সাহেবকে একটা কমপ্লেন দিতে। পারলাম না। প্রক্রিয়াটা জটিল মনে হল। কোন নাম্বারও পেলাম না যাতে কল করে জানাবো।

পরে উবার আন-ইনস্টল করে আরেক নম্বর দিয়ে এন্ট্রি করলাম। কয়েকদিন চলছিলাম ভালোই। গতকাল আবার। একটা উবার কল দিলাম। টাইম দেখালো ১১ মিনিট পরে আসবে। মিনিট বিশেক অপেক্ষার পরে কল দিয়ে দেখলাম গাড়ি যে রাস্তায় আছে ওই রাস্তার অবস্থা ভয়াবহ খারাপ। আসতে মিনিমাম আরো আধা ঘন্টা লাগবে। তাই ক্যানসেল করলাম।

কিছুক্ষণ পরে আবার বিস্ময় মেসেজ! আমার কাছে নাকি উবার ৩০ টাকা পায়! এটা শোধ না করলে বা পরের রাইডের সাথে দেয়ার অঙ্গীকার না করলে আবারও নিষিদ্ধ আমি। এই অভিজ্ঞতা কি আর কারো হয়েছে? নাকি আমি একাই রেয়ার পিস! উবারে কমপ্লেন করার নম্বর কি জানা আছে কারো?’

শওকত হোসাইন শান্ত এই পোস্ট তার ওয়ালে দেয়ার পর তার ফেসবুক ফেন্ডরা নানান মন্তব্য করেছেন। যার বেশির ভাগই উবারের বিরুদ্ধে। উত্তম কুমার দাশ নামের এক উবার ব্যবহারকারী জানিয়েছেন তার কাছেও এমন ভূতুরে বিল এসেছে। একই কথা জানালেন মেসবা উদ্দিন। তিনি লিখেছেন তার কাছেও একবার উবার ভূতুরে বিল পাঠিয়েছিল। যদিও শওকত হোসাইন শান্তর ফেসবুক ফ্রেন্ড মেহেদী আর হাসান দাবি করছেন, ‘আমার মনে হয় আপনার ড্রাইভার অ্যাপের কালেক্ট মানি বাটন চাপ দেয়নি। তাই হয়তো উবার ভাবছে আপনি বিল খেলাপি। তিনি এও লিখেছেন, ‘আপনি যদি উবার ব্যবহারের জন্য রিকোয়েস্ট পাঠান তখন পাঁচ মিনিটের মধ্যে ট্রিপ ক্যানসেল করলে ৩০ টাকা জরিমানা ধার্য করে উবার।’

উবারের ভূতুরে বিল নাকি বাংলাদেশি উবার ব্যবহারকারীদের ধারেই চাপে না বিদেশেও এমন হয়। এমনটাই দাবি করলেন শওকত হোসাইন। তিনি লিখেছেন, ‘আমিও এই সমস্যায় আছি। আমি নাকি মালয়েশিয়াতে ড্রাইভারকে ৫ রিঙ্গিত দেইনি। উবার বলছে পরবর্তী ড্রাইভারকে টাকাটা পরিশোধ করতে।’ শওকত হোসাইন শান্তর পোস্ট দেখে ব্যঙ্গ করেছেন তার বন্ধু হুমায়ুন সাদেক চৌধুরী। তিনি লিখেছেন, ‘হা হা হা! এটাই হলো বাংলাদেশ। যাহা সিএনজি, তাহাই উবার, পাঠাও, ডুবাও।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উবার ঢাকার জনসংযোগ প্রতিষ্ঠান বেঞ্চমার্ক পিআর-এর জনসংযোগ কর্মকর্তা এএফএম আসাদুজ্জামান উবারের বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীর অভিযোগগুলো এই প্রতিবেদককে লিখিত আকারে দিতে অনুরোধ জানান। এসব অভিযোগ উবার ঢাকার কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেবেন বলেও তিনি আশ্বস্ত করেন।

দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ

প্রকাশ :ডিসেম্বর ৫, ২০১৭ ১২:২৩ অপরাহ্ণ