নিজস্ব প্রতিবেদক :
রংপুর সিটি কর্পোরেশন (রসিক) নির্বাচনে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিলকারী জেলা যুবদলের সভাপতি ও সাবেক ছাত্রনেতা নাজমুল আলম নাজু নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। শনিবার দুপুরে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি তার এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা যুবদলে সাধারণ সম্পাদক আরাফাত হোসেন ঝন্টু। এর ফলে রসিক নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত কাওছার জামান বাবলা একক প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
রংপুর জেলা যুবদলের সহ সম্পাদক শাহ জিল্লুর রহমান জেমস জানান, ম্যাডামের সিদ্ধান্তের সাথে একমত পোষণ করে নাজু ভাইয়ের নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক। কিন্তু তিনি এই সিদ্ধান্তটি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে জানালে ভালো হতো। কারণ কোনো কারণে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল হলে তিনি হাল ধরে থাকতে পারতেন।
মহানগর বিএনপির সহসভাপতি সামসুজ্জামান সামু বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে জেলা যুবদল সভাপতি নাজমুল আলম নাজু নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বের প্রতি নেতাকর্মীরা আনুগত্যশীল। সবাই মিলে এই সিটিতে কিভাবে ফলাফল ঘরে নিয়ে আসা যায়, সেটাই এখন বড় লক্ষ্য। মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম মিজু জানান, দলীয় সিদ্ধান্তের সাথে একমত পোষণ করে জেলা যুবদল সভাপতি নাজমুল ইসলাম নাজুর নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত ইতিবাচক।
এদিকে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, ব্যাংকের ঋণের বিষয়ে যাছাই বাছাইয়ে যদি কাওছার জামান বাবলার প্রার্থিতা বাতিলও করা হয়। তবে তিনি ২৭ থেকে ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনে আপিল করতে পারবেন। ৩০ নভেম্বর আপিল নিষ্পত্তি হবে। সেক্ষেত্রে আইনগত প্রক্রিয়ায় গেলে তার প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকবে।
এ ব্যপারে বিএনপি মনোনিত প্রার্থী কাওছার জামান বাবলা জানান, আমি নিয়ম মেনে সকল কাগজপত্র ও প্রমাণাদি সঠিকভাবে সঠিক সময়ে মনোনয়নপত্রের সাথে কমিশনে জমা দিয়েছি। আমার জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে কোনো পক্ষ যদি ষড়যন্ত্র করে আমার মনোনয়নপত্র বাতিলের চেষ্টা করে ,তবে সেটা আমি আইনগতভাবে মোকাবেলা করবো। তিনি বলেন, নাজু আমাদের দলীয় নেতা। এই নির্বাচন থেকে সরে যাওয়া এবং আমার প্রতি সমর্থন ও কাজ করার ঘোষণা প্রশংসার দাবিদার।
আগামী ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য রংপুর সিটি কর্পোরেশনে নির্বাচন। এতে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, বিএনপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাসদ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মোট ১৩ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
রোববার দাখিলকৃত মনোয়নপত্র যাছাই-বাছাই করা হবে। ৩রা ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা যাবে। প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে ৪ ডিসেম্বর। এই নির্বাচনে মোট ১৯৬টি ভোট কেন্দ্রের ১ হাজার ১৭৭টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ করা হবে। নির্বাচনে ৩ লাখ ৮৮ হাজার ৪২১ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এবার এখানে ৩ লাখ ৮৮ হাজার ৪২১ ভোটারের মধ্যে পুরুষ রয়েছেন ১ লাখ ৯৬ হাজার ৬৫৯ এবং নারী ১ লাখ ৯১ হাজার ৭৬২ জন। ২০১২ সালের ২০ ডিসেম্বর প্রথম রংপুর সিটি করপোরেশনে ভোট হয়েছিল।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ