২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ২:৫৪

গাইবান্ধায় ধানের ন্যায্য দাম পেয়ে খুশি কৃষকরা

গাইবান্ধা প্রতিনিধি:

গাইবান্ধা জেলা সদরসহ সাতটি উপজেলায় আমন ধান কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। বাজারে ধানের ন্যায্য মূল্য পাওয়ায় কৃষকরাও খুশি। আর পনের দিন আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারের বাম্পার ফসলে কৃষকরা গত কয়েক দফা বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে মনে করছেন। গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, জেলায় ৮৬ হাজার ৮৩০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু বন্যার পানি থাকায় চাষ হয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি। গত বছর চাষ হয়েছিল ১ লাখ ২৪ হাজার ১০৫ হেক্টর জমি। মোট ফলন হয়েছিল ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৫৯৬ মেট্রিকটন চাল। এবার মোট জমিতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ২ লাখ ৩৩ হাজার ২৩০ মেট্রিকটন।

বন্যায় জেলা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা, গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ী ও সাদুল্যাপুরসহ সাতটি উপজেলায় ২৭ হাজার ১৬৭ হেক্টর জমিতে থাকা রোপা-আমন, আউশ, শাক-সবজি, আমন বীজতলা ও কলাক্ষেতে পানি প্রবেশ করে। এর মধ্যে বন্যার পানিতে ২১ হাজার ৬২৩ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়। এতে কৃষকদের অন্তত ২ কোটি ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। এর মধ্যে শুধু আমনের ক্ষতি হয়েছে ২০ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমির বিপরীতে প্রায় ১৯৬ কোটি টাকার। তবে বন্যার কারণে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে সংশয় থাকলেও দাম নিয়ে খুশি কৃষকরা।

গত বছর বাজারে এক মণ ধানের দাম ছিল ৬শ থেকে ৭শ টাকা। এবার সেই ধান বিক্রি হচ্ছে ১২শ থেকে ১৩শ টাকায়। অর্থাৎ ধানের দাম দ্বিগুণ বেড়েছে। স্বাধীনতার পর কৃষকরা ধানের এত দাম পায়নি বলে অনেকে জানান। এভাবে দাম পেলে কৃষকরা ধানের আবাদ বাড়িয়ে দেবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। অন্যদিকে, ধান কাটা-মাড়াই মৌসুমেও চালের দাম নিয়ে দিশেহারা ভোক্তারা। ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে চালের দাম। উৎপাদনের মৌসুমেও ধানের দাম তেমন কমবে না বলে আভাস দিয়েছে ধান ব্যবসায়ীরা।

সাঘাটা উপজেলার নলছিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল আজিজ বলেন, তার দুই বিঘা নিজস্ব জমির পাশাপাশি আরও তিন বিঘা জমি বর্গা নিয়ে আমনের আবাদ করেছিলেন। প্রথমে বীজতলা তৈরি করার পর তা বন্যার পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে যায়। পরবর্তীতে আবারও বীজতলা তৈরি করেন। বীজতলা তৈরি ও জমির আনুষঙ্গিক খরচ মিলে তিনি সে মোতাবেক ধান উৎপাদন করতে পারবেন না বলে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন। তবে এখন ধান কাটা মৌসুমে তিনি বলছেন, বাজারে ধানের দাম বেশি থাকায় ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তালুককানুপুর ইউনিয়নের চিয়ারগ্রামের কৃষক আব্দুস সাত্তার বলেন, এবার আমন ধানের মুরোদ কম। তিনি ৩ বিঘা জমিতে আমনের আবাদ করে ধান পেয়েছেন মাত্র ৫০ মণ। ধানক্ষেতে ওষুধ দিয়েও পোকা দমন করা যায়নি। এ কারণে উৎপাদনও কম হয়েছে। তবে গত বছরের চেয়ে এবার বাজারে ধানের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় খুশি হয়েছেন তিনি।

গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক রুহুল আমিন জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার রোপা আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে ধানের দামও ভাল। এ কারণে কৃষকের ওপর বন্যার কোনো প্রভাব পড়বে না।

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি 

প্রকাশ :নভেম্বর ২৫, ২০১৭ ৯:৫৮ পূর্বাহ্ণ