২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সন্ধ্যা ৬:১৮

তীব্র যানজটে নাকাল কক্সবাজার শহরবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক:

তীব্র যানজটে কাবু হয়ে পড়েছে কক্সবাজার শহরবাসী। বিশেষ করে রিকশা ও টমটম জট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। পাশাপাশি মাহিন্দ্র, সিএনজি, বিভিন্ন মালবাহী যানবাহনের মাত্রারিক্ত চলাচলের কারণে যানজটের মাত্রা বেড়েই চলেছে।

একটি সূত্রে জানা গেছে, পৌর কর্তৃপক্ষ আড়াই হাজার টমটমের লাইসেন্স দিলেও বর্তমানে শহরে চলাচল করছে চার হাজারের বেশি টমটম। ফলে শহরবাসীকে ১০ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে সময় লাগছে আধ থেকে এক ঘণ্টা। যানজট নিরসনে প্রশাসনের নেয়া কোনো পদক্ষেপই কাজে আসছে না।

ট্রাফিক পুলিশ বলছে যানজটের একমাত্র কারণ নিয়ন্ত্রণহীনভাবে টমটমের লাইসেন্স দেয়া আর লাইসেন্সবিহীন টমটমের বেপরোয়া চলাচল। পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে পানবাজার সড়ক, ভোলাবাবুর পেট্টোল পাম্প এলাকা ও বড় বাজার এলাকায় ব্যবসায়ীরা ট্রাফিক পুলিশকে সহযোগিতা না করা।

সকাল থেকে দুপুর আবার বিকাল থেকে রাত প্রায় ১১টা পর্যন্ত শহরের বাজারঘাটা, লালদিঘীর পাড়, ভোলা বাবুর পেট্রোল পাম্প, বার্মিজ মার্কেট, বৌদ্ধ মন্দির সড়ক, হাসপাতাল সড়ক ও বড় বাজার এলাকায় যানজট লেগেই থাকে। মাঝে মধ্যে কালুর দোকান ও পিটি স্কুল এলাকায়ও যানজটের কবলে পড়ে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয় সাধারণ মানুষকে। এতে করে যেমন করে মানুষ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে, ঠিক তেমনি ব্যঘাত ঘটছে মানুষের নিত্য নৈমত্তিক কর্মকাণ্ডেও।

শহরের বার্মিজ মার্কেট এলাকা থেকে টমটমে করে লালদিঘীর পাড়ে আসার সময় কথা হয় শহরের পাহাড়তলী এলাকার বৃদ্ধ আবুল হাসেমের সাথে। যানজট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ছোট্ট এই শহরে চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত টমটম আর রিকশা সংখ্যা বেড়ে গেছে। তার সাথে যোগ হয়েছে সিএনজি, মাহিন্দ্রাসহ বিভিন্ন প্রকার যানবাহনের চলাচলের সংখ্যা। ফলে যানজটের মাত্রা তীব্র আকার ধারণ করেছে।

প্রবীণ এই বাসিন্দা বলেন, গত এক মাস ধরে শুধু প্রধান সড়ক নয়, শহরের বিভিন্ন অলি-গলিতে যেভাবে যানজটের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে পুরো শহরটাকে যানজট কাবু করে রেখেছে।

আবুল হাসেমের মতো ভারাক্রান্ত মন নিয়ে যানজটের চরম দুর্ভোগের বণনা দেন গোলদিঘীর পাড় এলাকার ব্যবসায়ী কিরণ পাল। তিনি বলেন, রিকশা আর টমটমের শহরে পা ফেলায় যেন আজন্ম পাপ হয়েছে। শহরের লালদিঘীর পাড় থেকে বার্মিজ মার্কেট পর্যন্ত এক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে ২/৩ ঘণ্টা সময় লেগে যায়।

যানজটের মূল কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে-লাইসেন্সধারী ও লাইসেন্স বিহীন রিকশা ও টমটমের ছড়াছড়ি।

এদিকে লোকবল সংকটের মাঝেও ট্রাফিক পুলিশ যানজট নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে। ট্রাফিক অফিস সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ট্রাফিক অফিসে পাঁচজন ইন্সপেক্টর, দুজন টিআই, তিনজন সার্জেন্ট, পাঁচজন এটিএসআই ও ১৮ জন কনস্টেবল রয়েছেন। ৩০ জন কনস্টেবল থাকার কথা থাকলেও আছে ১৮ জন।

জেলা ট্রাফিক পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার বাবুল বণিক বলেন, ট্রাফিক পুলিশ পর্যটন শহরকে যানজটমুক্ত রাখতে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে। শত কষ্ট করেও যানজট নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে। এর জন্য তিনি টমটম আর রিকশার মাত্রারিক্ত চলাচলের পাশাপাশি ফুটপাত দখল করে ভাসমান ব্যবসায়ীদের দায়ী করেন।

দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ

প্রকাশ :নভেম্বর ১৬, ২০১৭ ১১:১৫ পূর্বাহ্ণ