আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ব্রিটিশ ভারতের মহীশূর রাজ্যের শাসনকর্তা টিপু সুলতানকে নিয়ে চলতে থাকা বিতর্কে এ বার নাম জড়াল দেশটির রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। টিপুকে ‘ব্রিটিশ-বিরোধী সংগ্রামী’ এবং তার মৃত্যুকে ‘ঐতিহাসিক’ তকমা দিয়ে বিজেপির তোপের মুখে পড়লেন কোবিন্দ। রাজ্যে কংগ্রেসের সরকার তাকে ডেকে এনে নিজেদের লেখা ভাষণ পড়িয়েছে বলেও সুর চড়ালেন কর্নাটকের একাধিক বিজেপি নেতা।
ঘটনার সূত্রপাত বুধবার কর্নাটকের বিধান সৌধে। রাজ্য বিধানসভা ভবনের ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষে যৌথ অধিবেশনের আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবে কোবিন্দ বলেন, ‘ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নায়কোচিত মৃত্যু হয়েছিল টিপু সুলতানের। ঘটনাটা নিঃসন্দেহে ঐতিহাসিক। শুধু তাই নয়, মহীশূর রকেট তৈরিতেও পথপ্রদর্শক ছিলেন টিপু। পরে ওই প্রযুক্তিই গ্রহণ করে ইউরোপীয়রা।’
রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা শেষে কক্ষে হাজির সিংহভাগ বিধায়ক হাততালিতে ফেটে পড়লেও, প্রায় পর-পরই সুর চড়াতে শুরু করেন বিরোধী দল বিজেপির বিধায়কেরা। মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়াকে বিঁধতে গিয়ে তারা নিশানা করে বসেন খোদ রাষ্ট্রপতিকেও। অরবিন্দ লিম্বাভলি যেমন বলেন, ‘সামনেই ভোট। আর ঠিক সেই কারণেই টিপুর জন্মজয়ন্তী পালনকে আরও বড় করে দেখাতে চাইছে কংগ্রেসের সরকার। রাষ্ট্রপতিকে ডেকে এনে নিজেদেরই লেখা ভাষণ পড়িয়ে বাজিমাত করতে চাইছে।’
এর প্রতিবাদে পাল্টা বিবৃতি দিয়ে কর্নাটক প্রদেশ কংগ্রেসের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দীনেশ গুন্ডু রাও জানান, এমন মন্তব্যের জন্য লজ্জিত হওয়া উচিত বিজেপির। কোবিন্দ কারও লিখে দেওয়া ভাষণ পড়ছেন বলে ওরা রাষ্ট্রপতি পদেরই অবমাননা করেছেন। অবশ্য শুধু টিপু নন, রাজ্য ও দেশের সামগ্রিক বিকাশে কর্নাটকের (তৎকালীন মহীশূর) অগ্রণী ভূমিকার কথা বলতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি আরও অনেকের নাম করেন। সিদ্দারামাইয়া নিজেও পরে টুইটারে রাষ্ট্রপতিকে তার বক্তৃতার জন্য অভিনন্দন জানান। কূটনীতিকরা বলছেন, এর পরেই যেন আরও তেড়েফুঁড়ে মাঠে নামে বিজেপি। টিপুকে ‘হিন্দু এবং কন্নড়-বিরোধী’ আখ্যা দিয়ে ২০১৫ থেকেই তোপ দেগে আসছে রাজ্য বিজেপি।
তারপর সম্প্রতি মহীশূরের প্রাক্তন শাসককে ‘নৃশংস গণহত্যাকারী, উগ্র ধর্মান্ধ এবং ধর্ষক’ বলে বিতর্ক আরও উস্কে দেন কর্নাটকের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনন্তকুমার হেগড়ে। টিপুর জন্মবার্ষিকী পালনে আপত্তি জানিয়ে সেই অনুষ্ঠানে যাবেন না বলেও জানান তিনি।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ