নিজস্ব প্রতিবেদক:
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আগামী নির্বাচনের আগে সংবিধানে হাত দেয়ার কোনও সুযোগ নেই। বিএনপি যদি দুই-তৃতীয়াংশ ভোট পেয়ে ক্ষমতায় আসে, তাহলে তারা মনের মাধুরী মিশিয়ে সংবিধান পরিবর্তন করতে পারবে।’
গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় সেতু ভবনে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা সেতুমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ শেষে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি সহায়ক সরকারের কথা বলছে। এখন শুনি তারা আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলেছে। আসলে তারা কখন কী চায় তা তারা ছাড়া আর কেউ জানে না।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে হবে না। নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে। সেক্ষেত্রে সরকার তাদের সহযোগিতা করবে।’
রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারত সরকারের অবস্থান আগের চেয়ে এখন অনেক পরিবর্তন হয়েছে। তারাও চাইছে মিয়ানমার যাতে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়। বাংলাদেশের ওপর যে বোঝা চেপে বসেছে সেজন্য রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে মিয়ানমার সরকারের ওপর ভারত তাদের কূটনৈতিক প্রয়াস অব্যাহত রেখেছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, বৈঠকে তিস্তা নিয়ে কথা হয়েছে। সেটারও উন্নতি হচ্ছে। ভারতের হাই কমিশনার জানিয়েছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তার বাস্তবায়ন বিষয়ে ভারত সরকার পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।’ এসময় আগামী নির্বাচন নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান ওবায়দুল কাদের।
বিজেপির আমন্ত্রণে আগামী নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ বা ডিসেম্বরের শুরুর দিকে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল ভারত সফর করবে। সে সফর হবে পার্টি টু পার্টি সম্পর্ক তৈরির জন্য। এতদিন প্রধানমন্ত্রী দেশের বাইরে থাকায় আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের নির্বাচন আমাদেরকেই করতে হবে। আমাদের গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ আমাদেরকেই দিতে হবে। বাইরের কোনও শক্তি এসে আমাদেরকে গণতন্ত্র দিতে পারবে না। এটা আমাদের একেবারেই নিজস্ব বিষয়।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভারত আমাদের প্রতিবেশী দেশ। এখানে গণতন্ত্র থাকলে দু’দেশ স্থিতিশীল থাকবে। স্থিতিশীল প্রতিবেশী সব প্রতিবেশীর জন্যই ভালো। সেজন্যই তারা এখানে সবাই মিলে একটা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বলেছেন। উনি (সুষমা স্বরাজ)এর বাইরে যাননি। উনি যেটুকু বলার সেটুকুই বলেছেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘এখন আরও একটি কথা শুনছি,সহায়ক সরকার, সেখান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। এমন নানা রকম জল্পনা-কল্পনা হচ্ছে। এখন বিএনপি আসলে কী চায় সেটা বিএনপিই জানে। তারা একেক সময় একেক কথা বলে। সকালে এক কথা, বিকালে আরেক কথা। এখন আবার শুনতে পারছি,তারা স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা করেছে তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করবেন। বিএনপি তাদের দাবির জবাব ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে নিশ্চয় পেয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
নির্বাচনকালীর সরকারপ্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর সব দেশেই বিদ্যমান সরকারই নির্বাচন করে যায়। সেই সরকার নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করে থাকে। নির্বাচন তো হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। নির্বাচন শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে হবে না। শেখ হাসিনা সরকার নির্বাচনে সহযোগিতা করবে। এ নিয়ে তারা (বিএনপি) আন্দোলনের হুংকার করতে পারেন। তবে তারা যতই হইচই করুন না কেন আগামী নির্বাচন ইসির অধীনেই হবে। বর্তমান সরকারই সহায়ক সরকার হিসেবে কাজ করবে। আগামী নির্বাচনের আগে সংবিধানে হাত দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। তারা যদি দুই-তৃতীয়াংশ নিয়ে নির্বাচনে জিততে পারেন তাহলে মনের মাধুরী মিশিয়ে সংবিধান পরিবর্তন আনতে পারবেন।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ