নিজস্ব প্রতিবেদক:
নারায়ণগঞ্জের কৃষকের মুখে ইক্ষুর রসের মিষ্টি হাসি ফুটেছে। জেলার রূপগঞ্জে এবার আখের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে এ হাসি। রূপগঞ্জে প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে আখ চাষ করা হয়েছে। প্রতি হেক্টর থেকে কৃষকরা আট থেকে দশ লাখ টাকার আখ বিক্রি করছে। সে হিসেবে এবার ১০ কোটি টাকার আখ বিক্রি হবে বলে উপজেলা কৃষি বিভাগ দাবি করেছে। আখের এমন বাম্পার ফলন নিয়ে কৃষকরা আলোচনায় মেতে উঠেছে। অনেকে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে আগামীতে আখ চাষের দিকে ঝুঁকবেন।
রূপগঞ্জ উপজেলা কৃষি আফিস সূত্র জানায়, এ বছর রূপগঞ্জে ১ হাজার হেক্টর (৭ শত ৫০ বিঘা) জমিতে আখ চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে লতারি জবা আখ ৭০ হেক্টর, মিছড়ি দানা আখ ১০ হেক্টর, বাশ টেনাই আখ ১০ হেক্টর, সূর্যমুখী আখ ৫ হেক্টর আখ, ইশ্বরদী- ১৬ আখ ৫ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে।
আখ চাষিরা জানান, গত ২ বছর ধরে রূপগঞ্জে আখ চাষ শুরু করেছেন তারা। ধান চাষে পরিশ্রম ও অধিক অর্থ ব্যয় হওয়ার কারণে আখ চাষ শুরু করা হয়। ধান চাষীরা এখন অনেকেই আখ চাষ করে অনেক বেশি লাভবান হচ্ছেন। তবে তারা ধান চাষও অব্যাহত রাখবেন।
এছাড়া কৃষকরা আখ চাষের পাশাপাশি আলু, গাজর, বাঁধাকপি, ফুলকপি ও শিম চাষ করে লাভবান হয়েছেন বলে অনেকেই দাবি করেন। কৃষিতে লাভবান হতে কৃষি বিভাগ প্রযুক্তি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে বলেও কৃষকেরা জানান। মুড়াপাড়া ইউনিয়নের আখ চাষী মনির মিয়া জানান, তিনি প্রায় ১০ শতক জমিতে মিছড়ি দানা জাতের আখ চাষ করেছেন। তার মোট ব্যয় হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। বিক্রি করেছেন ৮০ হাজার টাকা।
আগে এসব ভূমিতে ধান চাষ করে ৫ হাজার টাকাও লাভ করতে পারতেন না। এখন তিনি ধানের পাশাপাশি আখ চাষও করবেন বলে জানান। ভোলাব এলাকার আখ চাষী রহমত উল্লাহ জানান, তিনি ২ লাখ টাকা খরচ করে আখ চাষ করেছেন। এখন এ আখের দাম প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা হবে। রূপগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মুরাদুল হাসান জানান, বেলে দো-আঁশ থেকে শুরু করে এঁটেল পর্যন্ত সব মাটিতেই আখ চাষ করা সম্ভব হলেও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থাযুক্ত এঁটেল-দোআঁশ মাটি আখ চাষের জন্য সর্বোত্তম।
তিনি বলেন, রূপগঞ্জে শীতলক্ষ্যার চরের জমিতে আখ চাষের অনুকূল পরিবেশ বিদ্যমান। আমরা সব সময় লাভবান চাষে চাষীদের উৎসাহ দিয়ে থাকি। ধান চাষের পাশাপাশি যদি চাষীরা অন্যান্য ফসল করেন তাহলে তারা অবশ্যই চাষাবাদে লাভবান হবে। অনেক চাষীই লাভের মুখ দেখতে না পেরে চাষাবাদ ছেড়ে দিয়েছে। কিন্তু তারা ভুল করেন। চাষাবাদে যে সুখ আছে তা অন্য কোনো কাজে নেই। প্রকৃতির মাঝে কোনো সমস্যা থাকতে পারে না। যারা চাষী তারা কখনোই রোগ বালাইয়ে ভোগে না বলেও জানান তিনি।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ