২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৫:৪৫

কুমিল্লায় গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কুমিল্লায় রুবিনা আক্তার (২১) নামে এক গৃহবধূকে হাত-পা বেঁধে শরীরে অকটেন ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত সোমবার গভীর রাতে জেলার আদর্শ সদর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে স্বামীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে রুবিনার স্বামী সাজ্জাদ হোসেন ও তার পরিবারের লোকজন পলাতক রয়েছেন। রুবিনা এক সন্তানের জননী এবং জেলার মুরাদনগর উপজেলার চাপিতলা গ্রামের আবদুস সালামের কন্যা।

রুবিনার বাবা আবদুস সালাম জানান, দুর্গাপুর ইতালী মার্কেট এলাকার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে রঙ মিস্ত্রী সাজ্জাদ হোসেনের সাথে প্রায় ২ বছর আগে রুবিনা আক্তারের বিয়ে হয়। সংসারে সে সুখী ছিল না। বিয়ের পর থেকে সাজ্জাদ যৌতুকের জন্য চাপ দিয়ে আসছিল, কিন্তু তা না পেয়ে প্রায়ই রুবিনাকে মারধর করতো। এক পর্যায়ে রুবিনা তার ১০ মাসের কন্যা নুসরাতকে নিয়ে কুমিল্লা নগরীর রেইসকোর্স ধানমন্ডি এলাকায় আমাদের বাসায় চলে আসে। তিন দিন আগে তার স্বামী সাজ্জাদ এসে তাকে দুর্গাপুরের বাড়িতে নিয়ে যায়। তিনি বলেন, সোমবার রাত ১টার দিকে রুবিনার শাশুড়ি ফোনে জানায়, রুবিনা নিজের গায়ে আগুন দিয়েছে। সেখানে গিয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরে মৃত্যুর সাথে লড়াই করে মঙ্গলবার রাতে ঢাকা মেডিক্যালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় রুবিনা মারা যায়।   মরদেহ ময়নাতদন্তের পর বুধবার রাতে কুমিল্লায় নিয়ে আসা হয়েছে।

বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন ডা. পার্থ শংকর পাল জানান, রুবিনার দেহের ৪৮ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল, তাই তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। রুবিনার ভাই শামীম অভিযোগ করেন, ঘুমন্ত অবস্থায় তার বোনের হাত-পা বেঁধে শরীরে অকটেন ঢেলে আগুন দিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ সময় তার চিত্কার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে রুবিনাকে স্থানীয় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে রেখে তার স্বামী ও পরিবারের লোকজন পালিয়ে যায়। শামীম আরও জানান, মৃত্যুর আগে সে (রুবিনা) শাহবাগ থানার পুলিশের কাছে বলেছে, ‘ঘুম থেকে তুলে তার স্বামী সাজ্জাদ তাকে মারধর করে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।’

এদিকে রুবিনার মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে গোটা পরিবার। তারা এ ঘটনার সাথে জড়িত রুবিনার স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যদের গ্রেফতার ও বিচার দাবি করেছেন। এ বিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মো. সালাউদ্দিন জানান, এখনো এ ঘটনায় কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ

প্রকাশ :অক্টোবর ১৯, ২০১৭ ১২:১২ অপরাহ্ণ