২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৭:০৩

বিশেষ মিশন নিয়ে কাঠমান্ডু যাচ্ছেন মোদী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
বিশেষ নিয়ে খুব শিগগিরই নেপাল যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ দামোদর দাস মোদী। আগামী মাসে এ সফর অনুষ্ঠিত হবে। নভেম্বর মাসের গোড়ার দিকে একটি জল বিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন করতে মোদীর নেপাল যাবার কথা রয়েছে। তার এ সফর নিয়ে দিল্লী এখন ভীষণ ব্যস্ত। খবর: আনন্দবাজার পত্রিকার।
নির্বাচনের মুখে দাঁডানো নেপালে প্রবল ভাবে বাডছে চীনের আধিপত্য। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাডছে ভারতবিরোধী মনোভাবও। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, এ পরিস্থিতিতে কাঠমান্ডুকে কী ভাবে কাছে টানা যায়, তার কৌশল রচনাই এখন অগ্রাধিকার পেতে চলেছে। আর সে জন্যই মোদীর আসন্ন সফরকে রাজনৈতিকভাবে সফল করে তুলতে কোমর বেঁধে নেমেছে নয়াদিল্লি।
সাউথ ব্লকের রক্তচাপ বাডার অন্যতম কারণ সম্প্রতি সে দেশের তিনটি কমিউনিস্ট দল (ইউএমএল, মাওবাদী, নয়াশক্তি) এই প্রথম একসঙ্গে জোট বেঁধে ভোটে নামছে। নভেম্বরে সে দেশে নির্বাচন। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের খবর, কে পি ওলি, প্রচ- এবং বাবুরাম ভট্টরাইয়ের নেতৃত্বাধীন এই তিনটি দলকে একসূত্রে গাঁথার কাজটি আসলে করছে বেইজিং। এর ফলে নির্বাচনে ভারত-বন্ধু হিসেবে পরিচিত নেপালি কংগ্রেসের ভরাডুবি হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
ইউএমএল নেতা কে পি ওলি নেপালের প্রধানমন্ত্রী থাকার সময়েই নয়াদিল্লির সঙ্গে কাঠমান্ডুর সম্পর্ক সব চেয়ে খারাপ হয়েছে। নেপালের সংবিধান পরিষদ নতুন সংবিধান প্রণয়নের পরই শুরু হয়েছে প্রবল বিতর্ক এবং বিক্ষোভ। ভারতীয় বংশোদ্ভূত মদেশীয় এবং তার সম্প্রদায়ের বিক্ষোভের পিছনে নয়াদিল্লির হাত রয়েছে বলে প্রকাশ্যেই প্রচার করেছে ওলি সরকার। প্রচ-ের সঙ্গেও সাউথ ব্লকের সম্পর্কে তিক্ততা এসেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় সূত্রের দাবি, প্রচ- বরাবরই চীনের হাতে তামাক খেয়েছে, এমন তথ্য ভারতের কাছে রয়েছে। প্রচ-ের সঙ্গে এই মুহূর্তে বেইজিং-এর যোগাযোগ কতটা গভীর, সে দিকে গোপনে নজর রাখছে দিল্লি।
গত এক বছর ধরেই নেপালে চীনের প্রভাব বৃদ্ধি নিয়ে আশঙ্কা বেডেেছ সাউথ ব্লকের। দু’দেশের মধ্যে যৌথ সামরিক মহডা, ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ প্রকল্পে চীন-নেপাল সহযোগিতা, দরপত্র না ডেকেই চীনা সংস্থাকে নেপালের জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বরাত দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয় দিল্লি। ডোকলাম সংকটের সময় নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত চীনের অন্যতম শীর্ষ কূটনীতিক বৈঠক করেছিলেন নেপালি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে। কাঠমান্ডুকে চীন ক্রমাগত বুঝিয়ে চলেছে, অন্য দেশের সার্বভৌমত্বে নাক গলাচ্ছে ভারত।
পরিস্থিতি যাতে আরও বিগড়ে না যায় দিল্লি সে জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বেশ কিছু দিন ধরেই। ‘বিমস্টেক’ দেশগুলির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্মেলনে যোগ দিতে কাঠমান্ডু গিয়ে নেপালকে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বড রকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে এসেছিলেন সুষমা স্বরাজ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার মতে, পরিকাঠামো, এলপিজি সরবরাহ, জলবিদ্যুৎ, শিল্প এবং বাণিজ্য ক্ষেত্রে দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাডানো হবে। মেচি নদীর উপর সেতু তৈরির বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আসন্ন কাঠমান্ডু সফরেও নেপালের জন্য একগুচ্ছ উপহারের কথা ভাবছে নয়াদিল্লি।

দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ

প্রকাশ :অক্টোবর ১৬, ২০১৭ ১:২৭ অপরাহ্ণ