নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রতিনিয়িত বাড়তেই আছে পেঁয়াজের ঝাঁজ। কোনো ভাবেই নিয়ন্ত্রণে থাকছে না পেঁয়াজের দাম। ভারত থেকে পেঁয়াজের আমদানি কমে যাওয়ায় হিলির পাইকারি বাজারে কেজি প্রতি দাম বেড়েছে ৭ থেকে ৯ টাকা টাকা। ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে পেঁয়াজের মৌসুম শেষ হওয়ায় এবং অতিবৃষ্টির কারণে উৎপাদন কম হওয়ায় ভারতের বাজারেই পেঁয়াজের সরবরাহ কমেছে। তাই চাহিদা অনুযায়ী ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি না হওয়ায় দাম বাড়ছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
গত ছয় দিনের ব্যবধানে হিলি পাইকারি বাজারে কেজি প্রতি ৭ থেকে ৯ টাকা দাম বেড়েছে। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে কেজিতে ১৫-১৮ টাকা। হিলি স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, আগে বন্দর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৪০-৫০ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হতো। বর্তমানে হচ্ছে ২০-২৫ ট্রাক। হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. সোহরাব হোসেন বলেন, দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে নিয়মিত পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। তবে আগের থেকে তা অর্ধেকে নেমে এসেছে।
গত ৩ অক্টোবর ২১টি ট্রাকে ৪৩১ টন, ৪ অক্টোবর ১৬টি ট্রাকে ৩০২ টন, ৫ অক্টোবর ২১টি ট্রাকে ৩৯৮ টন, ৭ অক্টোবর ১৩টি ট্রাকে ২৪৩ টন, ৮ অক্টোবর ২৪টি ট্রাকে ৪৬৫ টন, ৯ অক্টোবর ২৫টি ট্রাকে ৪৮২ টন, ১০ অক্টোবর ২৫টি ট্রাকে ৫১৭ টন ও ১১ অক্টোবর ৩২টি ট্রাকে ৮০০ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। ফলে গত আট দিনে বন্দর দিয়ে ১৭৭টি ট্রাকে মোট তিন হাজার ৬৩৮ টন পেঁয়াজ দেশে ঢুকেছে। গত সেপ্টেম্বরে ৬৩৯টি ট্রাকে মোট ১২ হাজার ৯৫৩ টন ও আগস্টে ৭৪১টি ট্রাকে ১৫ হাজার ৬৯ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।
হিলি স্থলবন্দরে খবর নিয়ে জানা গেছে, ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ প্রকারভেদে ৪১-৪৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পাঁচ দিন আগেও এসব পেঁয়াজ ৩৩-৩৬ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। আর দুর্গাপূজার আগে বিক্রি হয়েছিল ২৫-২৬ টাকা কেজি দরে। এদিকে শহরের বাহাদুর বাজার, চক বাজারের ব্যবসায়ী মাজেদুর ও মজিবর রহমান জানান, ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ প্রকারভেদে ৪২ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা আগে ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। আর পূজার আগে বিক্রি হয় ২৮-৩০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া দেশি জাতের পেঁয়াজ পাইকারিতে তিন টাকা বেড়ে ৪৮ টাকায় ও খুচরা পর্যায়ে ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক মো. হারুন উর রশীদ ও মো. বাবলুর রহমান বলেন, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের পাটনা, বিহার, কানপুর, ইন্দোর, রাজস্থান, গুজরাট এলাকা থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হতো। আগে প্রতিদিন ৪০-৫০ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি করা হলেও এখন তা অর্ধেকে নেমে এসেছে। কারণ ওই সব প্রদেশে পেঁয়াজের মৌসুম শেষ। তারা বলেন, বর্তমানে শুধুমাত্র ভারতের নাসিক ও ব্যাঙ্গালোর থেকে পেঁয়াজ আসছে। নাসিক থেকে গত সপ্তাহেও আমরা প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৭ রুপিতে কিনেছি। কিন্তু এখন সেই পেঁয়াজ ৩০ রুপিতে কিনতে হচ্ছে। যা পরিবহন, ব্যাংকসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে ৪৪ টাকার ওপরে পড়ছে। ফলে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে।
এছাড়াও ব্যাঙ্গালুরে বন্যায় পেঁয়াজের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। ফলে সেখানেও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। মূলত ভারতের বাজারে দাম বাড়ার কারণেই দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে বলে মনে করছেন আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা।