আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
জাতিসংঘের মানবাধিকার দফতর মন্তব্য করেছেন রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া, শস্য ও অন্যান্য সম্পদের ক্ষতি সাধনের মাধ্যমে রাখাইনে তাদের ফিরে যাওয়ার পথ বন্ধের চেষ্টা করা হয়েছে। বুধবার জাতিসংঘের মানবাধিকার দফতরের এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান জ্যোতি সাংঘেরা রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা বন্ধের জন্য মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির প্রতি আহ্বান জানান। জ্যোতি সাংঘেরা শঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, মিয়ানমারে ফিরলে রোহিঙ্গারা বন্দিদশায় পড়তে পারেন।
জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গ্রামগুলো যদি পুরোপুরি ধ্বংস করা হয় এবং তাদের জীবিকার সম্ভাবনা নষ্ট করা হয়, তা হলে আমাদের ভয় হয় যে, তাদের বন্দি করা বা ক্যাম্পে আটকানো হতে পারে। এদিকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তাড়া খেয়ে গেল মাসে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ৬৫ রোহিঙ্গার সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তৈরি করা এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের পুলিশ পোস্টে বিদ্রোহীদের হামলার আগে থেকেই সেখানে ‘তাড়ানোর অভিযান’ শুরু হয়। এ সময় হত্যা, নির্যাতন ও শিশুদের ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটানো হয়।
অন্যদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার যাইদ বিন রাআদ আল হুসেইন এক বিবৃতিতে বলেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনী যে কাজ করেছে, তা ফেরার সম্ভাবনা না রেখে বিপুলসংখ্যক মানুষকে জোর করে স্থানান্তরের কৌশল বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রোহিঙ্গাদের সম্পদ ধ্বংস, তাদের বসতবাড়ি এবং উত্তর রাখাইনের সব গ্রাম জ্বালিয়ে দিচ্ছে বলে নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়ার কথা ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে ‘এটি শুধু তাদের তাড়ানোর জন্য নয়, পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গারা যাতে তাদের বাড়িতে ফিরতে না পারে সে জন্য এটি করা হয়,’। প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায়ই সশস্ত্র রাখাইন বৌদ্ধদের সঙ্গে নিয়ে নিরাপত্তা বাহিনী রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি, জমি, সংরক্ষিত খাবার, শস্য ও প্রাণিসম্পদের যে ক্ষতি করেছে, তাতে রাখাইনের উত্তরাঞ্চলে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরা ‘প্রায় অসম্ভব’ হয়ে পড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে রোহিঙ্গাদের ফেরা ঠেকাতে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী সীমান্ত বরাবর মাইন পুঁতেছে।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি