১৯শে জানুয়ারি, ২০২৫ ইং | ৫ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৯:২২

অভাবের তাড়নায় স্কুলছাত্রী আসমার বাদাম বিক্রি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

জীবন সংগ্রামে টিকে থাকার জন্য কতভাবেই না মানুষ যুদ্ধ করছে। সে সংগ্রাম কখনও কখনও ছুঁয়ে যায় শিশুদেরকেও। এরকম অনেক শিশুই আছে আমাদের আশেপাশে। হয়তো  চোখ এড়িয়ে যায়। অথচ,  একটু সহানুভূতি আর মানবিক উদার মনোভাব এই সব জীবন সংগ্রামের যুদ্ধে ছুটে চলা শিশুদের রক্ষা করতে পারে।

সোমবার ফরিদপুর শহরের সুপার মার্কেট এলাকায় দেখা যায়, ছোট একটি মেয়ে বাদাম বিক্রি করছে। এই বাদাম নেবেন বাদাম! মায়াবি কণ্ঠস্বর মনে দাগ কাটলো। একটু এগিয়ে গেলাম। বাদামের ঝাঁকা সামনে করে একটি শিশু মেয়ে বলছে বাদাম কেনার জন্য। পরনে তার স্কুলের ড্রেস। মন আরোও আবেগ প্রবণ হয়ে গেলো। আমি তার পরিচয় জানতে চাইলাম। ক্যামেরায় ছবি তুলতে গেলে লজ্বায় বার বার মুখ আড়াল করছিলো। তবুও আমি ওকে একটু সহজ করার চেষ্টা করলাম। কিছুক্ষণ নিশ্চুপ থাকার পর এ প্রতিবেদকের সঙ্গে মেয়েটি কথা বললো। সে জানায়, ‘তার ঘরে চাল নাই। তাই বাদাম বেচতে এসেছে।  আসমা বলে, ‘এই ঝাঁকা আমার আব্বার। কয়েকদিন ভাত খাইনাই। মা এদিক সেদিক করে চাউল আনছে। স্কুল করে দুপুরের পর আমি বাদাম নিয়ে এসেছি।’

জানা যায়, ফরিদপুর শহরের আলিপুর বাদামতলি সড়ক এলাকায় একটি বাসায় ভাড়া থাকে আসমার পরিবার। পিতা কাশেম ঘুরে ঘুরে বাদাম বিক্রি করতো। গত ১৫ রোজায় স্থানীয় এক নারীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক করে তাকে নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। কোথায় আছে সেখবর জানা নেই তাদের। সংসারে মা বেদেনা বেগম ও তিন ভাই বোন তারা। আসমা আলিপুর বাদাম তলী সড়কের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ছে। বাদামের ঝুড়ির সামনে করে মন দিয়ে আগামী কালের ক্লাসের পড়া ল্যাম্প পোস্টের বাতিতে পড়ছে। সংসারের অভাব অনটন দেখে তার মনে মা ভাই বোনের একটু সহযোগিতার জন্য বাদাম বিক্রি করতে আসা।

দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ

 

 

প্রকাশ :অক্টোবর ১১, ২০১৭ ৩:০৭ অপরাহ্ণ