২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ভোর ৫:৫৮

ব্লু হোয়েল থেকে বাঁচার উপায়

 অনলাইন ডেস্ক:  

সারা বিশ্বে শিশুদের অভিভাবকের জন্য এখন আতংকের নাম ‘ব্লু হোয়েল’। রাশিয়ায় উদ্ভাবিত এই গেম খেলতে গিয়ে সারা পৃথিবীতে এরই মধ্যে দেড়শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, যাদের বেশিরভাগই কিশোর বয়সী। অনলাইন ভিত্তিক ‘ব্লু হোয়েল’ গেমটি ২০১৩ সালে রাশিয়ায় তৈরি হয়। ফিলিপ বুদেকিন নামে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিতাড়িত এক মনোবিজ্ঞানের ছাত্র দাবি করে যে, সেই এই গেমের আবিষ্কর্তা।

রাশিয়ায় অন্তত ১৬ জন কিশোর-কিশোরী এই গেমে অংশ নিয়ে আত্মহত্যা করার পর বুদেকিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে দোষ স্বীকার করলেও তার দাবি, যেসব ছেলেমেয়ের সমাজে কোনও দামই নেই, তাদেরকেই সে আত্মহত্যার মাধ্যমে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে চেয়েছিল। ব্লু হোয়েল গেমটি ৫০ দিন ধরে খেলতে হয়। সেখানে একের পর এক ভয়ঙ্কর কাজ করার নির্দেশ আসে। একেকটি ধাপ পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জ দেওয়া হয়। কাজগুলির মধ্যে রয়েছে, অন্ধকার ঘরে একা ভয়ের সিনেমা দেখা, নিজের হাত ব্লেড দিয়ে কাটা ইত্যাদি। তবে শেষ ধাপটি হচ্ছে, নি:সঙ্গ নীল তিমির মতো আত্মহত্যা করা।

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কয়েকশো কিশোর-কিশোরী এই গেম খেলতে গিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ভারতে বেশ কিছু ঘটনা প্রকাশের পর সম্প্রতি বাংলাদেশেও ‘ব্লু হোয়েল’এ আত্মহত্যার খবর মিলেছে। বলা হয়, প্রথমদিকে নিছক কৌতুহলের বশে শুরু করলেও পরবর্তীতে যন্ত্রণাকর গেমটি থেকে বেরিয়ে আসতে চায় গেমাররা। কিন্তু গেমটির পরিচালকদের চাপে তারা বাধ্য হয় ক্রমে নিজেদের শেষ করে দিতে। তাই ‘ব্লু হোয়েল’এর গ্রাস থেকে রক্ষা পেতে মনোবিজ্ঞানীরা কয়েকটি উপায় বাতলে দিয়েছেন।

১. গবেষকেরা বলছেন, এই গেমটি সাধারণত কিশোর-কিশোরীদের পরিচিত কিংবা বন্ধুদের মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। কোনো বন্ধু যদি এই গেমটি খেলার জন্য উৎসাহিত করে তবে সাবধান হওয়া উচিত। এবং ব্লু হোয়েল খেলতে প্রস্তাব দেয়া সেই পরিচিত কিংবা বন্ধুটিরও ক্ষতি না হয়, সে জন্য উচিত তার অভিভাবককে বিষয়টি জানিয়ে দেয়া।

২. সবার জন্যই কোনো বিষয়ে সরাসরি না বলে দেয়াটা অস্বস্তির। কিন্তু কখনও কখনও সেই অস্বস্তিকর কাজটিই সুফল বয়ে আনে। এক্ষেত্রেও সরাসরি না বলে দেয়াটা জীবন বাঁচাতে সাহায্য করবে। অর্থাৎ কেউ ‘ব্লু হোয়েল’ খেলার প্রস্তাব দিলে সরাসরি না বলা উচিত।

৩. যে এই গেমটির প্রস্তাব দেবে উল্টো তাকে ‘ব্লু হোয়েল’ না খেলার পরামর্শ দিন। এবং বলুন, আমি যদি তোমার কথাকে সম্মান দিতে নাও পারি, তুমি অন্তত আমার পরামর্শকে সম্মান দেখাও!

৩. কখনও কখনও নেতিবাচক মনোভাবের মানুষও ভালো শিক্ষা দিয়ে থাকে। যদি নিজের প্রতি আস্থার সংকট থাকে তবে তেমন মানুষের সঙ্গে কিছুদিন চলাফেরা করে দেখা যেতে পারে। এতে অন্তত কোনো বিষয়ে অক্ষম হলে সরাসরি না বলার ক্ষমতা অর্জিত হবে।

৪. ব্যর্থতা এবং হতাশা মানুষকে আত্মঘাতি করার জন্য কিছুটা হলেও উৎসাহিত করে। কাজেই মনকে হতাশার কারণে বিষন্ন হতে দেবেন না। বরং জীবন যে যুদ্ধের মঞ্চ এই তথ্য বারবার মনে করুন। জীবন যুদ্ধে সেই পরাজিত হয়, যে নিজেকে ব্যর্থ মনে করে!

৫. জীবনে যদি একঘেয়েমি এসে থাকে তবে কিছুদিন বেড়িয়ে আসা যেতে পারে। তবে একঘেয়েমি কাটিয়ে ওঠার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে, দৈনন্দিন কাজ থেকে দূরে থাকা এবং নতুন কিছু করা। তাই বলে ‘ব্লু হোয়েল’ গেম খেলা নয়!

৬. যদি অনলাইনে অচেনা কেউ আপনাকে এই গেমটি খেলতে প্ররোচিত করে, তবে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করুন।

 

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি

প্রকাশ :অক্টোবর ৮, ২০১৭ ৬:০৭ অপরাহ্ণ