২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৮:০৯

সোনা আনার কথা স্বীকার দিলদারের

নিজস্ব প্রতিবেদক

বনানীতে দুই ছাত্রী ধর্ষণে অভিযুক্ত সাফাত আহমেদ ও তার বাবা দিলদার আহমেদ সেলিমের বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগ উঠেছে। দিলদারের আপন জুয়েলার্স যে সকল মূল্যবান স্বর্ণালংকার ও ডায়মন্ড বিক্রি হয় সেগুলোর অধিকাংশই অবৈধ পথে দেশে নিয়ে আসছেন। শুল্ক ও কর ফাঁকি দিতেই এই অবৈধ পথ অবলম্বন করেছেন দিলদার।

 এ বিষয়ে দিলদারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি কর ফাঁকির বিষয়টা অস্বীকার করলেও অবৈধ পথে সোনা আনার বিষয়টি স্বীকার করেন। পাল্টা প্রশ্ন করেন, বৈধ পথে সোনা এনে বাংলাদেশে ব্যবসা করে কে?

জানা গেছে, আপন জুয়েলার্সের দিলদারের কর ফাঁকির বিষয়টি শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমানকে জানিয়েছেন। শীঘ্রই এনবিআরের চেয়ারম্যানের নির্দেশনা অনুযায়ী বাপ-ছেলের বিরুদ্ধে কর ফাঁকির তথ্য উদঘাটনে নামবেন এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সিআইসি) কর্মকর্তারা।

এদিকে কর ফাঁকির অভিযোগের বিষয়টি জানতে চাইলে দিলদার আহমেদ সেলিম  বলেন, সারা দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা যেভাবে ব্যবসা করে আমিও সেভাবে ব্যবসা করছি। বৈধ পথে সোনা এনে এদেশে কে ব্যবসা করছে? সামান্য কিছু রেডিমেড অর্নামেন্টস শুল্ক ও কর পরিশোধ করে বৈধ পথে আসে। বাকি সবগুলোই অবৈধ পথে আসে।

তিনি বলেন, তবে ঢালাওভাবে কর ফাঁকির অভিযোগ সঠিক নয়। আমার ৪০ বছরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এনবিআর কর ফাঁকির বিষয়ে তদন্ত করে কোন অভিযোগ পেলে তখন করণীয় ঠিক করবো।

বিষয়টি নিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বলেন, কর রাষ্ট্রীয় আমানত। এটা জনগণের সম্পদ। জনগণের সম্পদ না দিয়ে কেউ ফাঁকি দিলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কর ফাঁকিবাজ যত প্রভাবশালীই হোক না কেন কোন ছাড় দেওয়া হবে না। এনবিআর দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন করবে।

এ দিকে শুল্ক গোয়েন্দা আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার ও সাফাতের কর ফাঁকির বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো চিঠিতেও উল্লেখ করেছে। চিঠিতে বলা হয়, এরই মধ্যে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনায় এ দপ্তরের কাছে দিলদার ও সাফাতের ব্যবসায় অস্বচ্ছতা থাকার বিষয়টি প্রতীয়মান হয়েছে। যে সব মূল্যবান পণ্য তিনি বিক্রি করেন তার বৈধ ঘোষণা ও যথাযথ ট্যাক্স পরিশোধ নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে।

ওই চিঠিতে বলা হয়, উল্লেখিত ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্থাপিত অবৈধ ব্যবসার অভিযোগটি খতিয়ে দেখাটা এখন পাবলিক ডিমান্ড। শুল্ক গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ এই গুরুতর অভিযোগটি আমলে নিয়ে গভীরভাবে অনুসন্ধান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যে এ দপ্তরের উপ পরিচালক এইচ এম শফিকুল হাসানের নেতৃত্বে দুই সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এমতবস্থায় আপন জুয়েলার্স এবং এই প্রতিষ্ঠানের মালিকগণের যাবতীয় আর্থিক লেনদেন এক সপ্তাহের মধ্যে সরবরাহরে জন্য অনুরোধ করা হলো।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ মার্চ জন্মদিনের অনুষ্ঠানের কথা বলে বনানীর ‘দ্য রেইনট্রি’হোটেলে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই তরুণীকে ধর্ষণ করে দিলদারের ছেলে শাফাত ও তার বন্ধু। ওই ঘটনায় গত ৬ মে রাজধানীর বনানী থানায় অভিযুক্ত সাফাত আহমেদ, নাঈম আশরাফ, সাদমান সাকিফ, সাফাতের দেহরক্ষী ও ড্রাইভারের বিরুদ্ধে মামলা করেন ধর্ষণের শিকার এক ছাত্রী।

এ ঘটনায় সাফাত আহমেদ ও সাদমান সাকিফকে গত বৃহস্পতিবার রাতে সিলেট থেকে গ্রেফতার করা হয়। তারা বর্তমানে রিমান্ডে রয়েছে।

ওই ঘটনায় অভিযুক্ত নাঈম আশরাফসহ অন্য দুইজনকে শিগগিরই গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

n/h =ddj

প্রকাশ :মে ১৪, ২০১৭ ৬:১৫ অপরাহ্ণ