২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সন্ধ্যা ৭:৪৯

পুরুষের জন্মনিয়ন্ত্রণে নতুন পদ্ধতি

স্বাস্থ্য ডেস্ক:

কোনো প্রকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই পুরুষদের সাময়িক বন্ধ্যাত্বের উপায় অনেক দিন ধরেই খুঁজছিলেন বিজ্ঞানীরা। আর এবার তারা জানিয়েছেন, এক্ষেত্রে নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন। ফলে বাস্তব হতে যাচ্ছে বহুল প্রত্যাশিত, জন্মনিয়ন্ত্রণে পুরুষের জন্যও ওষুধ পদ্ধতি।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ এবং পপুলেশন কাউন্সিল উদ্যোগ নিয়েছে নতুন পদ্ধতিতে পুরুষের জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য একটি ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা করার জন্য। যুক্তরাজ্য, সুইডেন, ইতালি, চিলি, কেনিয়া থেকে ৪২০ জন দম্পতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কিছু চিকিৎসা সুবিধা গ্রহণের পর জন্মনিয়ন্ত্রণের এই পরীক্ষায় অংশ নেবে। এর জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতি ইতিমধ্যে পাওয়া গেছে।

এই জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিটি মূলত এক ধরনের জেল (আঠালো পদার্থ), এটি দিনে একবার ব্যবহার করা লাগে। এই জেল-এ প্রোগেস্টিন রয়েছে যা শুক্রাণু প্রতিরোধ করে এবং টেসটোস্টেরণ, যা হরমোনের মাত্রা হ্রাস করে।

একটি ছোট পরীক্ষায় দেখা গেছে, এই পদ্ধতি শুক্রাণুর সংখ্যা প্রতি মিলিমিটারে ১ মিলিয়ন বা এর চেয়ে বেশি কমাতে সক্ষম ছিল। যা সাধারণ লেভেল হিসেবে গ্রহণ করা হয়, যার মধ্যে শুক্রাণু উৎপাদন দমন করা হয়েছে- অংশগ্রহণকারীদের ৮৯ শতাংশের মধ্যে। এটা মনে করা হয় যে, ১১ শতাংশ অসম্পূর্ণতার অন্য ব্যাখ্যা হতে পারে।

গত বছর পুরুষের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি হিসেবে প্রতি মাসে ইনজেকশন গ্রহণের একটি পদ্ধতি কার্যকরী হিসেবে প্রমাণিত হয়েছিল। কিন্তু এই পদ্ধতি নিয়ে বিজ্ঞানীরা এগোতে পারেননি কারণ একটি ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় দেখা গিয়েছিল যে, এই ইনজেকশন কার্যকরী হলেও এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের ইনজেকশনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে মেজাজ পরিবর্তন, লিঙ্গ উত্থানজনিত সমস্যা এবং ব্যথা পাওয়ার অভিজ্ঞতা হয়েছিল। এর মধ্যে একজনের ক্ষেত্রে আবার দেখা গিয়েছিল যে, ইনজেকশন নেওয়ার ৪ বছর পরও শুক্রাণুর মাত্রা অস্বাভাবিক ছিল।

পুরুষের জন্মনিয়ন্ত্রণের নতুন এই পদ্ধতির উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল, টেসটোস্টেরণ অভাব সম্পর্কিত নেতিবাচক প্রভাব ছাড়াই শুক্রাণু উৎপাদন দমন করার উপায় প্রতিষ্ঠা করা। এ কারণেই পুরুষের জন্য জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল সম্ভব নয়, কেননা পুরুষদের এক দিনে বেশ কয়েকটি পিল খাওয়া লাগবে অথবা তাদের শরীর থেকে হরমোন খুব দ্রুত ছেড়ে যেতে হবে।

এই জেল পদ্ধতি টেসটোস্টেরণকে রক্তপ্রবাহে প্রবেশের সুযোগ দেবে এবং শুক্রাণু উৎপাদন কমাবে। ফলস্বরূপ, উচ্চ প্রত্যাশা করা হচ্ছে যে, এই পদ্ধতিটি সফল হতে পারে যেখানে অন্য পদ্ধতিগুলো ব্যর্থ হয়েছে।

বর্তমানে পুরুষের জন্য জন্মনিয়ন্ত্রণের যে পদ্ধতিগুলো রয়েছে, সেগুলো হচ্ছে- কনডম, ভেসেকটমি বা সার্জারি। তাই জেল ব্যবহার করে জন্মনিয়ন্ত্রণের এই পদ্ধতি যে ব্যাপক জনপ্রিয় হবে, তা আশা করাই যায়।

দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ

প্রকাশ :অক্টোবর ১, ২০১৭ ৮:১৩ অপরাহ্ণ