পবিত্র আশুরা
আজ ১০ মহররম। পবিত্র আশুরা। বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও মর্যাদাকর দিন। ১০ মহররম নানা কারণে ঐতিহাসিক দিন হিসেবে সমাদৃত। এ দিনে পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছে। তবে কারবালার যুদ্ধে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) এর শাহাদাত বরণের দিন হিসেবেই ১০ মহররম মুসলিম জনগোষ্ঠীর কাছে স্মরণীয়। এ দিনে মুসলমানগণ অত্যন্ত বেদনা বিধূর চিত্তে স্মরণ করেন সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) ও তাঁর অনুসারীদের মহান আত্মত্যাগের কথা। ফোরাতের তীরে সেদিন পাষন্ড ইয়াজিদের বাহিনী বাধার প্রাচীর করে দাঁড়িয়েছিল। নবী দৌহিত্রের সফরসঙ্গীদের পানি পর্যন্ত পান করতে দেয়নি তারা। বিশ্ব ইতিহাসে তাই কারবালার সে যুদ্ধ নির্মমতা ও নিষ্ঠুরতার এক জ্বলন্ত উদাহরণ হয়ে আছে।
অন্যান্য বারের মতো এবারও দিবসটি যথাযোগ্য ভাবমর্যাদায় পালনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এ উপলক্ষে শিয়া সম্প্রদায় তাজিয়া মিছিল বের করবে। দিনটি সরকারি ছুটির দিন।
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদ এডভোকেট, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তারা সমাজে শান্তি, সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখার জন্য দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়েছেন।
ইমাম হোসেন (রাঃ) সেদিন আত্মোৎসর্গ করেছিলেন ইসলামের সত্য ও ন্যায়ের ঝান্ডাকে সমুন্নত রাখার জন্য। ক্ষমতালোভী ইয়াজিদের কবল থেকে মানুষকে বাঁচাতে যুদ্ধে নেমেছিলেন তিনি। কিন্তু শত্রু পক্ষের কুটচাল আর নিষ্ঠুরতা তাঁকে জয়ী হতে দেয়নি। বীর বিক্রমে লড়াই করে বিজয় প্রায় করায়ত্ত্ব অবস্থায় ইয়াজিদের সেনাপতি সীমারের হাতে নিহত হন তিনি।
ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলাম অসত্য ও অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না। কোরআন-হাদীসের নির্দেশনা অনুযায়ী মানুষের সকল অধিকার সমুন্নত রাখা ও তা রাখতে গিয়ে সংগ্রামে ব্রতী হওয়া প্রতিটি মুসলমানের পবিত্র কর্তব্য। আজ-আমাদের সমাজে নানা অন্যায়-অবিচার, অত্যাচার-নিপীড়ন চলছে। সবলরা দুর্বলদের ওপর অত্যাচার করছে। প্রতিবাদ করলে নিগৃহীত হতে হচ্ছে। মানুষের গণতান্ত্রিক ও মানবিক অধিকার আজ ভূলুণ্ঠিত। এমতাবস্থায় কারবালার আত্মত্যাগের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগ্রামে অবতীর্ণ হওয়া ছাড়া গত্যন্তর নেই।
আজকের এই দিনে আমরা হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) ও তাঁর সহযোদ্ধাদের সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করছি। তাঁদের রুহের মাগফিরাত কামনা করি।