নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীর তানোরে অধিকাংশ স্কুল-কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষকেরা পাঠদান (স্কুল) সময় মানছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, অধিকাংশ শিক্ষক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে পাঠদান সময় মানছেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রধান শিক্ষক বলেন, পাঠদান সময়ে একজন কলেজ শিক্ষকের পিছনে প্রতি মিনিটে ১৫ টাকা ও স্কুল শিক্ষকের পিছনে প্রতি মিনিটে ১০ টাকা করে সরকারের ব্যয় হচ্ছে।
জানা গেছে, বিগত ২০১০ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পরিপত্র জারি ও নির্দেশনা দেয়া হয় এমপিওভুক্ত সকল স্কুল,কলেজ ও মাদরাসায় সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত পাঠদান করাতে হবে। পরিপত্রে আরো বলা হয় পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল ভাল নয় এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষকদের বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের বাড়তি পাঠদান করাতে হবে। অথচ বেশিরভাগ স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত খোলা রাখা হয়, এতে প্রতি কার্যদিবস দিবসে শিক্ষার্থীরা ২ ঘন্টা করে শিক্ষা গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হয়। আর এর বিরুপ প্রভাব পড়েছে শিক্ষার্থীদের ওপর। যে কারণে শিক্ষার্থীরা কোচিং সেন্টার বা প্রাইভেট পড়ার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে এতে অভিভাবকদের গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা। এদিকে সমাজের অবস্থাসম্পন্ন অভিভাবকগণ বাড়তি টাকা দিয়ে ছেলেমেয়ের কোচিং বা প্রাইভেট পড়াতে পারলেও দরিদ্র পরিবারের অভিভাবকগণ ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে এসব পরিবারের ছেলেমেয়েরা শিক্ষাক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছে, এমনকি বাড়তি টাকার যোগান দিতে না পেরে অনেকেই লেখাপড়া বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে তানোরে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৭টি, দাখিল মাদ্রাসা ২৮টি, নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৪টি, স্কুল এ্যান্ড কলেজ ৪টি, ডিগ্রী কলেজ ৫টি, কলেজ ৭টি ও কারিগরি স্কুল এ্যান্ড ২টি রয়েছে। তানোরে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠনের শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে কম বেশি মতবিরোধ ও দ্বন্দ রয়েছে। তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য আবৃ সাঈদ সরকার বলেন, কালীগঞ্জহাট ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক-কর্মচারিরা কখনই পাঠদান সময় মানেন না। অধিকাংশ শিক্ষক রাজশাহী জেলা সদর থেকে যাতায়াত করে তারা সপ্তাহে দু’একদিন কলেজে এসেই পুরো সপ্তাহের হাজিরা স্বাক্ষর করে আবার দুপুর দুটার আগেই কলেজ ত্যাগ করে। কেউ কেউ আবার শুধুমাত্র বাজার করার জন্যই কলেজে আসে, তিনি সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সকল শিক্ষক-কর্মচারির নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত দাবি করেছেন। এব্যাপারে তানোর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম বলেন, কলেজের বিষয়ে তাঁর করনীয় কিছু নাই, তবে স্কুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ