নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে গত আগস্ট মাসে ব্যাপক পরিমাণ ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল এবং হোম অ্যাপ্লায়েন্সেস বিক্রি করেছে দেশীয় ব্র্যান্ড মার্সেল। গত বছরের আগস্ট মাসের তুলনায় এ বছর আগস্ট মাসে ৬৬ শতাংশ বেশি পণ্য বিক্রি হয়েছে মার্সেলের। বিশেষ করে, মার্সেলের ফ্রিজ বিক্রি বেড়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। আগামী বছর দ্বিগুণেরও বেশি পণ্য বিক্রির টার্গেট নিচ্ছে মার্সেল ।
মার্সেলের বিপণন বিভাগের লজিস্টিকস মনিটরিং প্রধান উজ্জ্বল কুমার বড়ুয়া জানান, ঈদুল আজহাকে ঘিরে গেল আগস্ট মাসে ব্যাপক বিক্রি হয়েছে মার্সেল ব্র্যান্ডের বিভিন্ন পণ্য। সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে ফ্রিজ। গত বছরের আগস্টের তুলনায় এ বছর আগস্টে ফ্রিজের বিক্রি বেড়েছে ৬০ শতাংশ। যা লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণ। এ বছর আগস্টে ৩০ শতাংশ বেশি ফ্রিজ বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ছিল। সম্প্রতি টেম্পারড গ্লাস ডোর, ইনভার্টার প্রযুক্তির নন-ফ্রস্ট ফ্রিজসহ বড় ডিপযুক্ত ব্যাপক বিদ্যুৎসাশ্রয়ী ফ্রস্ট ফ্রিজ বাজারে ছাড়ায় এই সফলতা এসেছে।
তিনি আরো জানান, একই সময়ে এলইডি টেলিভিশনের বিক্রি বেড়েছে ৫৭ শতাংশ। বেড়েছে বিভিন্ন মডেলের এসি এবং হোম ও ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্লায়েন্সের বিক্রিও।
সূত্র জানায়, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, সাশ্রয়ী দাম, কিস্তিতে কেনার সুযোগ, সহজলভ্যতা, আইএসও স্ট্যান্ডার্ড বিক্রয়োত্তর সেবা এবং স্থানীয় আবহাওয়া উপযোগী করে দেশেই তৈরি বলে মার্সেল পণ্যের প্রতি গ্রাহকদের আস্থা বেড়েছে। এসব কারণে বেড়েছে বিক্রিও। গত বছরের প্রথম আট মাসের (জানুয়ারি থেকে আগস্ট) তুলনায় চলতি বছরের একই সময়ে মার্সেলের বিক্রি বেড়েছে ৩২ শতাংশ। ঈদুল আজহার আগে পুরো আগস্ট মাস জুড়েই মার্সেলের শো-রুমগুলোতে ছিল ক্রেতাদের ভিড়।
মার্সেলের বিপণন বিভাগের (উত্তর) প্রধান মোশারফ হোসেন রাজীব জানান, মার্সেলের প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে পণ্যের উচ্চমান। দামেও ব্যাপক সাশ্রয়ী। এ ছাড়া বৈচিত্র্যময় ডিজাইন ও কালারের কারণে ক্রেতারা আকৃষ্ট হচ্ছেন। গত কয়েক বছর ধরে পণ্য বিক্রিতে উচ্চ প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রেখেছে মার্সেল। প্রবৃদ্ধির এই ধারা আরো বেগবান করতে নেওয়া হচ্ছে বিশেষ পরিকল্পনা। প্রতিনিয়ত গবেষণা চলছে পণ্যের নতুন নতুন প্রযুক্তি ও ডিজাইন নিয়ে।
মার্সেলের বিপণন বিভাগের (দক্ষিণ) প্রধান ড. সাখাওয়াৎ হোসেন জানান, গত কোরবানির ঈদে মাঝারি আয়তনের ফ্রিজগুলোর দিকে ক্রেতাদের বেশি ঝোঁক ছিল। সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে ২১৩ লিটার বা ১১ সিএএফটির ফ্রিজ। আর টেলিভিশনের ক্ষেত্রে বেশি বিক্রি হয়েছে ২৪ ও ৩২ ইঞ্চির এলইডি টিভি।
কোরবানির ঈদে রেকর্ড পরিমাণ বিক্রির বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, মার্সেল পণ্যের প্রতি ক্রেতাদের ব্যাপক সাড়া আমাদের দারুণভাবে উৎসাহিত করেছে। আমরা আগামী বছর দ্বিগুণেরও বেশি পণ্য বিক্রির টার্গেট নিচ্ছি।
মার্সেলের রয়েছে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ২০টিরও বেশি পণ্যের দুই শতাধিক আকর্ষণীয় ডিজাইন ও মডেল। এর মধ্যে আছে ৫৬ মডেলের ফ্রিজ, ২৪ মডেলের এলইডি টিভি এবং ৬ মডেলের এসি। প্রোডাক্ট লাইনে সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে গ্লাস ডোর এবং ইনভার্টার প্রযুক্তির নন-ফ্রস্ট ফ্রিজ। এ ছাড়া খুব শিগগিরই আসছে বেশকিছু নতুন মডেলের ফ্রিজ ও টিভি। যার মধ্যে রয়েছে নিজস্ব কারখানায় উৎপাদিত কম্প্রেসার দিয়ে তৈরি নয়েজলেস ফ্রিজ।
মার্সেলের রয়েছে একাধিক মডেলের ব্লেন্ডার, রাইস কুকার, গ্যাস স্টোভ, ইন্ডাকশন কুকার, ইলেকট্রিক কেটলি, সিলিং এবং ওয়াল ফ্যান, রুম হিটার, ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার ও প্রোটেক্টর, আয়রন, রিচার্জেবল ল্যাম্প ও টর্চলাইট, এলইডি লাইট, ইলেকট্রিক সুইচ সকেটসহ অন্যান্য হোম ও ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্লায়েন্সেস।
প্রকৌশলীরা জানান, মার্সেল ফ্রিজে ব্যবহার করা হচ্ছে সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব আর৬০০এ গ্যাস। এসব ফ্রিজ ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎসাশ্রয়ী। ব্যবহৃত হচ্ছে ন্যানো হেলথকেয়ার প্রযুক্তি। যা ফ্রিজের খাবারের মান ও স্বাদ অটুট রাখে। এর অ্যান্টি ফাংগাল গ্যাসকেট ফ্রিজের অভ্যন্তরে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণুর প্রবেশ রোধ করে। ফলে মার্সেল ফ্রিজে খাবার থাকে টাটকা ও জীবাণুমুক্ত।
ফ্রিজে এক বছরের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টি ও এলইডি টিভিতে ছয় মাসের রিপ্লেসমেন্ট ওয়্যারেন্টি সুবিধা দিচ্ছে মার্সেল। ফ্রিজের কম্প্রেসারে রয়েছে ১০ বছর পর্যন্ত রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টি। আইএসও সনদপ্রাপ্ত সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের আওতায় দ্রুত সর্বোত্তম সেবা পৌঁছে দিচ্ছে মার্সেল। সারা দেশে ৭০টি সার্ভিস সেন্টার চালু রয়েছে। যেখানে কাজ করছেন ২ হাজার ৫০০ প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ান।
ফ্রিজের বিক্রয়োত্তর সেবায় হোম সার্ভিস দিচ্ছে মার্সেল। গ্রাহকরা যেকোনো মোবাইল থেকে ১৬২৬৭ নম্বরে কল দিয়ে বছরের ৩৬৫ দিনই পাচ্ছেন কাঙ্ক্ষিত সেবা। তথ্য প্রাপ্তির পর গ্রাহকের বাড়িতে দ্রুত পৌঁছে যাচ্ছে সার্ভিস প্রোভাইডার। মার্সেলের এই সেবা এরইমধ্যে গ্রাহকমহলে ব্যাপক প্রসংশিত হয়েছে।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ