২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | দুপুর ১২:২৯

শেয়ারবাজারে ওয়ালটন: ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন বিনিয়োগকারীদের

দেশের শীর্ষ ইলেক্ট্রনিক্স কোম্পানি ওয়ালটনের পুঁজিবাজারে আসার বিষয়টিকে ইতিবাচক বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।  তাদের মতে,  এর মধ্য দিয়ে বাজারে বড় ধরনের  পরির্তন আসবে।  লেনদেনে বাড়বে গতি। এতে ঘুরে দাঁড়াবে পুঁজিবাজার।  ওয়ালটনকে দ্রুত বর্ধনশীল ও মৌলভিত্তিসম্পন্ন উল্লেখ করে বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, এই কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ওয়ালটনের আইপিওতে আসা নিয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। ওয়ালটনের ব্যবসায়ের যে বিশাল পরিধি, তাদের যে ভবিষ্যৎ রোডম্যাপ, তাতে কোম্পানিটির শেয়ারে বিনিয়োগ করে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। এর বাইরে বিনিয়োগকারীরা ভালো লভ্যাংশও পাবেন বলে প্রত্যাশা করছেন তারা।

জানতে চাইলে ‘বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের’ সাধারণ সম্পাদক কাজী আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘দেশের ঘরে ঘরে ওয়ালটন পণ্য রয়েছে। এই কোম্পানি দেশের সম্পদ। এমন একটি কোম্পানি বাজারে তালিকাভুক্তির পর বিনিয়োগকারীরা উপকৃত হবেন।’

আবদুর রাজ্জাক আরও বলেন, ‘‘অতীতে আইপিওর মাধ্যমে বাজারে অনেক কোম্পানি এসেছে। তাদের অধিকাংশই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। অনেকে শেয়ারবাজারে আসার পর ভালো দর পায়নি। কিন্তু ওয়ালটনের যে ‘কাট অব প্রাইস’ নির্ধারিত হয়েছে, তাতে মনে হচ্ছে, বিনিয়োগকারীরা এখান থেকে নিশ্চিত মুনাফা অর্জনে সক্ষম হবেন।’’

একই অভিমত জানালেন দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্রোকার হাউজ আইডিএলসি সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুদ্দিন। তিনি বলেন, ‘বাজারে ভালো কোম্পানির চাহিদা সব সময় রয়েছে। সেদিক দিয়ে ওয়ালটন একটি ভালো কোম্পানি। এ কারণে ওয়ালটনের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেশি থাকবে।’

বিনিয়োগকারীদের কাছে ভালো কোম্পানির চাহিদা রয়েছে মন্তব‌্য করে মো. সাইফুদ্দিন বলেন, ‘এসব কোম্পানির শেয়ার বাজারে বেশি ছাড়া উচিত। বাজারে ওয়ালটনেরমতো কোম্পানিগুলো যত শেয়ার ছাড়বে,  শেয়ারবাজারও তত গতিশীল হবে।’

এই প্রসঙ্গে লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ লিমিটেডের বিনিয়োগকারী তৌহিদুল পলাশ বলেন, ‘বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে ওয়ালটনের পণ্য রয়েছে। আমার ঘরেও ওয়ালটনের এসি-ফ্রিজ আছে। বিভিন্ন দেশে তারা পণ্য রপ্তানি করছে। এমন একটি কোম্পানি বাজারে তালিকাভুক্ত হচ্ছে; দেশের শিশু থেকে বৃদ্ধ; প্রত্যেকেই তার নাম জানে। এই কোম্পানি শেয়ারবাজারে এলে আমরা উপকৃত হবো। শুধু বিনিয়োগকারীরা নন, ওয়ালটনের শেয়ার লেনদেন শুরু হলে বাজার অনেকটাই ঘুরে দাঁড়াবে। আমরা ওয়ালটনের তালিকাভুক্তি ও লেনদেন শুরুর অপেক্ষায় আছি।’

আইসিবি ইনভেস্টরস ফোরামের নেতা বিনিয়োগকারী মহসিন আহমেদ বলেন, ‘ওয়ালটন আমাদের দেশের গর্ব। কোম্পানিটির শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীরা পাবেন, এটি ভাগ্যের বিষয়। কোম্পানির শেয়ার ধারণ করে ওয়ালটনের মালিকানার অংশীদার হওয়া যাবে, এটা ভেবে আমরা উচ্ছ্বসিত।’

এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে  ওয়ালটনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর উদয় হাকিম বলেন, ‘ওয়ালটন বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল একটি মাল্টিন্যাশনাল ব্র্যান্ড। দেশের জনগণকে এর অংশীদার বানানোর প্রয়াসে পুঁজিবাজারে আসছে ওয়ালটন।’ তিনি আশা প্রকাশ করেন, ওয়ালটনের শেয়ার কিনে বিনিয়োগকারীরা নিশ্চিত লাভবান হবেন।

কোম্পানির প্রফিট প্রসঙ্গে উদয় হাকিম দৃঢ়কণ্ঠে বলেন, ‘গত অর্থবছরের চেয়ে নিশ্চিতভাবেই অনেক বেশি প্রফিট করবে ওয়ালটন।

প্রসঙ্গত, দেশের সাধারণ মানুষকে ওয়ালটনের অগ্রযাত্রার অংশীদার করার উদ্দেশ্য নিয়েই পুঁজিবাজারে আসার সিদ্ধান্ত নেয় প্রতিষ্ঠানটি।

বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে শেয়ারবাজার থেকে ১০০ কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যে ২০১৯ সালের ১৫ জানুয়ারি রোড শো করে ওয়ালটন। এরপর গত জানুয়ারি মাসে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সভায় কোম্পানির আইপিও বিডিংয়ের অনুমোদন দেয়। এতে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে ওয়ালটনের শেয়ারের ‘কাট অব প্রাইস’ নির্ধারিত হয়েছে ৩১৫ টাকা।

প্রকাশ :মার্চ ১৫, ২০২০ ৩:৫৩ অপরাহ্ণ